বরিসের বিরুদ্ধে লড়ছেন ইরানি অভিবাসী আলি

সাউথ রাইস্লিপ-এর আক্সব্রিজ-এর প্রতিনিধি বরিস। এই আসনটিতে ২০১৫ সাল থেকে লড়ে আসছেন বরিস। কনজ়ারভেটিভ দলের নেতা নির্বাচনের সময়ে সেখান থেকে বরিসের ঝুলিতে এসেছিল মাত্র ৫০৩৪টি ভোট। তাঁর বিরুদ্ধে প্রতিদ্বন্দ্বিতায় নেমে এখন শিরোনামে তরুণ আলি।

Advertisement

শ্রাবণী বসু

লন্ডন শেষ আপডেট: ০৮ নভেম্বর ২০১৯ ০৩:১৮
Share:

আলি মিলানি। ছবি:সোশ্যাল মিডিয়া।

৫৫-এর বিরুদ্ধে ২৫!

Advertisement

প্রধানমন্ত্রী বরিস জনসনের বিরুদ্ধে এ বার লেবার পার্টির হয়ে ভোটে লড়ছেন ইরানি অভিবাসী বাবা-মায়ের ছেলে আলি মিলানি। সাউথ রাইস্লিপ-এর আক্সব্রিজ-এর প্রতিনিধি বরিস। এই আসনটিতে ২০১৫ সাল থেকে লড়ে আসছেন বরিস। কনজ়ারভেটিভ দলের নেতা নির্বাচনের সময়ে সেখান থেকে বরিসের ঝুলিতে এসেছিল মাত্র ৫০৩৪টি ভোট। তাঁর বিরুদ্ধে প্রতিদ্বন্দ্বিতায় নেমে এখন শিরোনামে তরুণ আলি।

দেশে সাধারণ নির্বাচন ১২ ডিসেম্বর। যত জন ভোট ময়দানে এ বার আছেন, তাঁদের মধ্যে আলি সর্বকনিষ্ঠ। তেহরান থেকে মা আর দিদির সঙ্গে পাঁচ বছর বয়সে লন্ডনে এসেছিলেন। সোশ্যাল হাউসিং-এ থাকতেন তাঁরা। আলি জানিয়েছেন, তাঁর আশা, ব্রিটিশ গণতন্ত্রের ইতিহাসে পদে থাকা কোনও এক প্রধানমন্ত্রীকে এই প্রথম পদচ্যুত করার সুযোগ মিলেছে। আলির মতে, এটা বরিস জনসনকে ‘নাটকীয় অপমান’। সম্প্রতি এক দৈনিককে আলি বলেছেন, ‘‘বরিস আর প্রধানমন্ত্রী নন, এক জন পার্লামেন্ট সদস্যও নন, এ দেশের ভবিষ্যৎ রাজনীতিতে জড়িতই আর নন— এই বিষয়টি যদি নিশ্চিত করতে হয়, তা হলে একটাই পথ। আক্সব্রিজ থেকে ওঁকে হারাতে হবে।’’

Advertisement

আলি বলেছেন, এই লড়াইয়ে তাঁর বড় সুবিধে যে তিনি স্থানীয় বাসিন্দা। তাই এলাকাটির সঙ্গে বরিসের তুলনায় তাঁর অনেক বেশি পরিচিতি। আলির পরিবার আক্সব্রিজেই থাকে। এখানকার স্কুলেই তাঁর পড়াশোনা। ব্রুনেল বিশ্ববিদ্যালয়ে ঢোকার পরে সক্রিয় ছাত্র রাজনীতি শুরু করেন তিনি।

হিথরো বিমানবন্দরের তিন নম্বর রানওয়ে তৈরির বিরোধিতায় প্রচার চালিয়েছেন আলি। তাঁর দাবি, বরিসও প্রথমে ওই পরিকল্পনায় আপত্তি জানিয়েছিলেন। প্রধানমন্ত্রী নাকি বলেছিলেন, বুলডোজারের সামনে শুয়ে পড়ে তিনি এর বিরোধিতা করবেন। যদিও এখন অবশ্য আর সেই অবস্থান নেই তাঁর।

গত সপ্তাহে শোনা গিয়েছিল, জনসন হয়তো বা আসন পাল্টাতে পারেন, সে ক্ষেত্রে আক্সব্রিজ থেকে তিনি লড়বেন না বলে জল্পনা তৈরি হয়েছিল। যদিও কনজ়ারভেটিভ পার্টি ‘ভিত্তিহীন’ বলে সে দাবি উড়িয়ে দিয়েছে। তবে বিশেষজ্ঞদের মতে, প্রাপ্ত ভোটের মধ্যে ৫ শতাংশের বেশি অন্য দিকে চলে গেলেই ওই আসন হারাতে হবে জনসনকে। এর মধ্যে আবার নাইজেল ফারাজের ব্রেক্সিট পার্টি যদি প্রার্থী দেয়, তা হলে জনসনের চাপ আরও বাড়বে। ব্রেক্সিটপন্থীদের ভোট সে ক্ষেত্রে ভাগ হয়ে যাবে।

তবে বিতর্কের নিরিখে অবশ্য আলিও পিছিয়ে নেই। বেশ কিছু বছর আগে, বছর ১৬-১৭-য় টুইটারে তিনি ইহুদি-বিরোধী মন্তব্য করেছিলেন। সে জন্য সম্প্রতি ক্ষমাও চেয়েছেন তিনি। এই অভিযোগটি লেবার পার্টিকে আগেও বিপদে ফেলেছে।

আজই লেবার পার্টির প্রাক্তন এক ক্যাবিনেট সদস্য ইয়েন অস্টিন জনতার উদ্দেশে বার্তা দিয়ে বলেছেন, কনজ়ারভেটিভদেরই ভোট দিন, কারণ লেবার নেতা জেরেমি করবিনকে বিশ্বাস করা যায় না। গত সপ্তাহে ‘জিউইশ লেবার মুভমেন্ট’ও জানিয়েছিল, তারা করবিনকে জিততে কোনও সাহায্য করবে না। এই সংগঠন তার ১০০ বছরের ইতিহাসে এই প্রথম লেবার পার্টির বিরোধিতা করছে। এই পরিস্থিতিতে আলি স্থানীয় বাসিন্দাদের কতটা মন জয় করতে পারেন সেটাই দেখার। আপাতত সে লক্ষ্যপূরণেই এলাকায় দোরে দোরে ঘুরছেন তিনি।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement