প্রতীকি চিত্র। ছবি: এএফপি
নেপালে ঋতুমতী নারীদের জন্য তৈরি ‘ঋতুকালীন কুঁড়েঘর’-এ দমবন্ধ হয়ে মৃত্যু হল ২১ বছরের এক তরুণীর। পার্বতী বোগাতি নামের ওই মহিলা নেপালের দোতি জেলার বাসিন্দা ছিলেন বলে জানা গিয়েছে।
নেপালের কোনও কোনও জায়গায় চিরাচরিত প্রাচীন ‘চৌপাদি’ প্রথা অনুযায়ী ঋতুকালীন সময়ে বা সন্তানের জন্মদানের পর মহিলাদের ‘অশুচি’ বা ‘অপবিত্র’ বলে মনে করা হয়। তাই মেয়েদের ওই সময়ে বাড়ি থেকে দূরে একটি জানালাহীন একচালার কুঁড়েঘরে পাঠিয়ে দেওয়া হয় থাকবার জন্য। ২০০৫ সালে অমানবিক এই প্রথাকে বেআইনি ও নিষিদ্ধ ঘোষণা করা হলেও, এখনও বন্ধ করা যায়নি তা। জরিমানা ও জেল হওয়ার মতো শাস্তির ঘোষণাও করা হয়। তবু ঋতুকালীন সময়ে মেয়েদের অন্ধকার ঘরে পাঠানো আটকানো যায়নি।
সংবাদ সংস্থার খবর অনুযায়ী, ওই ঘরে বন্দি থাকাকালীন সময়ে পার্বতীর শাশুড়ি লক্ষ্মী বোগাতি রোজই তাঁকে দেখতে যেতেন। সেই নিয়ম মতোই ওইদিন সকালে গিয়ে এই দুর্ঘটনার কথা জানতে পারেন। স্থানীয় সংবাদপত্রে তিনি জানিয়েছেন, তার পরের দিনই মাসিকের শেষ দিন ছিল সেই বধূর। কিন্তু তার আগেই পৃথিবী ছেড়ে চলে যেতে হল তাঁকে।
আরও পড়ুন: যুদ্ধ শেষের বার্তা নিয়ে আরবে পোপ ফ্রান্সিস
স্থানীয় পুলিশ সূত্রে জানা যাচ্ছে যে, তাঁদের ধারণা ওই তরুণীর মৃত্যু হয়েছে ঘরে দমবন্ধ হয়ে। ওই অঞ্চলে অসম্ভব ঠান্ডার কারণে ঘরে আগুন জ্বালতে বাধ্য হয়েছিলেন ওই তরুণী। ওই আগুনের ধোঁয়ার কারণেই দুর্ঘটনাটি ঘটে বলে মনে করা হচ্ছে পুলিশের তরফে।
আরও পড়ুন: ‘ঋতুকালীন’ কুঁড়েঘরে মৃত্যু নেপালে
কয়েক সপ্তাহ আগেই নেপালেই ঠিক এইরকমই আরও একটি ঘটনা ঘটেছিল। রাতে আচমকাই আগুন লেগে গিয়েছিল এই ধরনের ঋতুকালীন কুঁড়েঘরে। সেখানে তখন অম্বা বোহরা নামের এক মহিলা তাঁর ১২ আর ৯ বছরের দুই ছেলেকে নিয়ে ওই কুঁড়েঘরে ঘুমোচ্ছিলেন। প্রচণ্ড ঠান্ডায় সেখানে আগুন জ্বেলেই শুয়ে পড়েছিলেন তাঁরা। পুলিশের সন্দেহ, সেই ধোঁয়াতেই দমবন্ধ হয়ে মৃত্যু হয়েছিল মা আর তাঁর দুই সন্তানের।