হর্ষবর্ধন শ্রিংলা।
সিএএ-এনআরসি বিতর্কের প্রভাব পড়েছে ভারত বাংলাদেশ সম্পর্কে। দিল্লির হিংসা সেই ক্ষোভে ইন্ধন জুগিয়েছে বলেই মনে করা হচ্ছে। সে দেশের মন্ত্রী পর্যায়ের একাধিক ভারত সফর বাতিল করেছিল হাসিনা সরকার। আজ সেই তালিকায় নতুন সংযোজন, বাংলাদেশের স্পিকার শিরিন শরমিন চৌধুরীর নয়াদিল্লি সফর।
সোমবার লোকসভার স্পিকার ওম বিড়লার আমন্ত্রণে নয়াদিল্লি আসার কথা ছিল শরমিনের। ৬ তারিখ ফেরার কথা ছিল তাঁর। কাল রাতে হঠাৎই তা স্থগিত করে দেয় ঢাকা। কারণ হিসাবে জানানো হয়েছে, ১৭ মার্চ থেকে বঙ্গবন্ধু শতবর্ষের অনুষ্ঠান শুরু হচ্ছে। তাতে বিশেষ দায়িত্ব থাকায় তিনি ভারতে যেতে পারছেন না। কূটনীতিকদের বক্তব্য, বঙ্গবন্ধুর শতবর্ষ অনুষ্ঠানের পরিকল্পনা দীর্ঘদিন আগেই তৈরি। তা বিবেচনায় রেখেই ওম বিড়লার আমন্ত্রণ স্বীকার করেছিলেন বাংলাদেশের স্পিকার। তা হলে শেষ মুহূর্তে সেই কারণ দেখিয়ে সফর বাতিল কেন?
ঢাকা সূত্রের বক্তব্য, বাংলাদেশে যে ভাবে মোদী-বিরোধিতা বাড়ছে, তাতে যথেষ্ট বিড়ম্বনার মধ্যে রয়েছেন শেখ হাসিনা। ১৭ তারিখ প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর ওই অনুষ্ঠানে যোগ দেওয়ার কথা। সেই সফর পাকা করতে দু’দিনের সফরে ঢাকা গিয়েছেন নতুন বিদেশসচিব হর্ষবর্ধন শ্রিংলা। একটি অনুষ্ঠানে দীর্ঘ বক্তৃতা দিয়ে ভারত-বাংলাদেশ সম্পর্কে তিনি কিছুটা ইতিবাচক প্রলেপ দিতে চেষ্টা করেছেন। মোদীর সফরে তিস্তা ছাড়া অন্য ছ’টি নদীর জলের বাঁটোয়ারা নিয়ে চুক্তি পাকা হতে পারে, এমন ইঙ্গিতও দিয়েছেন। প্রশ্নের জবাবে জানিয়েছেন, তিস্তা-জট কাটাতে ভারত সরকার সক্রিয়। অসমে এনআরসি নিয়ে বাংলাদেশের উদ্বেগ নিরসন করতে শ্রিংলা বলেছেন, ‘‘ঘনিষ্ঠতম প্রতিবেশী হিসাবে এটাই স্বাভাবিক যে এক দেশের ঘটনা অন্য দেশে ঢেউ তুলবে। কিন্তু অসমে এনআরসি প্রক্রিয়া সম্পূর্ণ ভারতের অভ্যন্তরীণ। এর সঙ্গে বাংলাদেশ সরকার বা মানুষের সম্পর্ক নেই।’’ তাঁর বার্তা, মায়ানমার থেকে বাংলাদেশে আসা রোহিঙ্গা শরণার্থীরা যাতে তাঁদের দেশে ফিরতে পারেন, সে জন্য নয়াদিল্লি সক্রিয়। বাংলাদেশের বিদেশমন্ত্রী এ কে আব্দুল মোমেনের সঙ্গেও দেখা করেছেন শ্রিংলা।