কোরিয়া ও তাইওয়ানের একাধিক সংস্থা পশ্চিমবঙ্গে কম্পিউটার হার্ডওয়্যার এবং বৈদ্যুতিন পণ্য তৈরির শিল্পে বিনিয়োগে আগ্রহী বলে জানালেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। শুক্রবার বাঁকুড়ার বেলিয়াতোড়ে এক সভায় তিনি এ কথা জানান। এ দিন ফেসবুকেও মুখ্যমন্ত্রী লেখেন, ‘এই বিনিয়োগে শিল্প এবং যুবক-যুবতীদের রোজগারে নতুন দিশা দেখা যাবে।’
কিছু দিন আগেই বণিকসভা আইসিসি-র এক অনুষ্ঠানে দক্ষিণ কোরিয়ার শিল্প ও লগ্নি উন্নয়নের ভারপ্রাপ্ত সরকারি সংস্থা কোটরা-কে (কোরিয়া ট্রেড ইনভেস্টমেন্ট প্রোমোশন এজেন্সি) জমি দেওয়ার প্রস্তাব দেন অর্থমন্ত্রী অমিত মিত্র। কোটরা-ও রাজ্যের প্রথম ‘ইলেকট্রনিক্স ম্যানুফ্যাকচারিং ক্লাস্টার’ প্রকল্প সম্পর্কে আগ্রহী। নৈহাটি শিল্পতালুকে গড়ে উঠতে চলা এই প্রকল্প বৈদ্যুতিন পণ্য উৎপাদনে লগ্নি টানতে এই মুহূর্তে রাজ্যের অন্যতম বড় বাজি। ফেসবুকে মমতার দাবি, কোরিয়ার হার্ডওয়্যার শিল্পমহল ভবিষ্যতে রাজ্যেই বিনিয়োগ করবে। বাংলাদেশ, মায়ানমার, চিন ও এশিয়ার অন্য দেশে হার্ডওয়্যার ও বৈদ্যুতিন যন্ত্র রফতানির জন্য বাংলাকে দরজা হিসেবে ভাবছেন ওঁরা।
মুখ্যমন্ত্রীর কথায়, ‘বিনিয়োগের এই সম্ভাবনাকে কাজে লাগিয়ে আমাদের রাজ্যও চেষ্টা করবে হার্ডওয়্যার ও ইলেকট্রনিক্স যন্ত্রের বাজার বাড়িয়ে নিতে।’ বিশেষজ্ঞদের মতে, ’১৫-এর মধ্যে দেশের বৈদ্যুতিন পণ্যের বাজার দাঁড়াবে ৩৬ হাজার ৩০০ কোটি ডলারের। সেই বাজার রাজ্যের অধরা। নৈহাটির ক্লাস্টার সেই পরিস্থিতি কিছুটা হলেও বদলাতে পারে বলে সংশ্লিষ্ট মহল মনে করছে।
মমতা জানান, ‘ইউনাইটেড নেশনস ইন্ডাস্ট্রি ডেভেলপমেন্ট অর্গানাইজেশন’ বা ‘ইউনিডো’ কলকাতায় একটি ‘স্কিল ডেভেলপমেন্ট ইনস্টিটিউশন’ চালু করতে চলেছে। এ ছাড়াও রাজ্যে রেমন্ডস, স্যামসাং-এর মতো সংস্থা প্রশিক্ষণ কেন্দ্র খুলবে। মুখ্যমন্ত্রীর দাবি, কাটোয়ায় যে জমি জটে এনটিপিসি-র বিদ্যুৎ প্রকল্পের কাজ আটকে ছিল, তার সমাধান হয়েছে। রাজ্য উদ্যোগী হয়ে ১০০ একর জমি দিয়ে সমাধান করেছে। রঘুনাথপুরে ডিভিসি-র তাপবিদ্যুৎ কেন্দ্র গড়া নিয়ে সমস্যাও মিটে গিয়েছে বলেও তিনি দাবি করেছেন।
বেলিয়াতোড়ের সভা সেরে বড়জোড়া শিল্পাঞ্চলের ঘুটগোড়িয়ায় ‘এক্সপ্রো-ইন্ডিয়া’ নামে এক শিল্পসংস্থার কারখানার নতুন ইউনিট উদ্বোধন করতে যান মুখ্যমন্ত্রী। সেখানে তিনি জানিয়ে দেন, কারখানা বন্ধ করে কোনও আন্দোলন রাজ্য সরকার মেনে নেবে না।