কাঁথির সুনিয়ায় ঘরছাড়া সিপিএম কর্মীর স্ত্রীকে গণধর্ষণ ও খুনের অভিযোগের তদন্ত ও দোষীদের গ্রেফতারের দাবিতে বুধবার একটি জনস্বার্থ মামলা দায়ের হল কলকাতা হাইকোর্টে। মামলাটি করেছেন আইনজীবী অনিন্দ্যসুন্দর দাস।
ওই আইনজীবীর বক্তব্য, সুনিয়া-কাণ্ডের তদন্তে বিশেষ দল গড়া হবে কি না, আদালত তদন্তে নজরদারি করবে কি না, হাইকোর্ট সিদ্ধান্ত নিক। আদালতের জানা দরকার, পুলিশ গণধর্ষণ ও খুনের ঠিক তদন্ত করেছে কি না। একই সঙ্গে বলা হয়েছে, তদন্তে রাজ্যের হস্তক্ষেপের দরকার নেই। আদালতই ঠিক করুক, নিহতের পরিবারকে ৫০ লক্ষ টাকা ক্ষতিপূরণ দেওয়া হবে কি না।
হাইকোর্টের আইনজীবীদের একটি দলও জেলার এসপি সুকেশকুমার জৈন-এর সঙ্গে দেখা করেন। তাঁদের তরফে সুব্রত মুখোপাধ্যায়ের বক্তব্য, “মহিলার মৃত্যুর কারণ নিয়ে প্রত্যক্ষদর্শীদের বয়ানের সঙ্গে পুলিশের দাবি মিলছে না।” সিপিএমের রাজ্য সম্পাদকমণ্ডলীর সদস্য রবীন দেবের অভিযোগ, “ময়না-তদন্তের রিপোর্ট পাওয়ার আগে থেকেই পুলিশ এই ঘটনাকে আত্মহত্যা বলে দাবি করছে। ফরেন্সিক তদন্তের দাবি জানাচ্ছি। তৃণমূল যুক্ত বলে এসপি দোষীদের আড়াল করছেন।” মুর্শিদাবাদে প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি অধীর চৌধুরীর কটাক্ষ, “পুলিশের ভূমিকা ব্যারোমিটারের মতো। পুলিশ আগ্রহ না দেখালে বুঝতে হবে তৃণমূল জড়িত। দেখালে উল্টোটা।”
ওই বধূটির পরিজনদের পুলিশি নিরাপত্তা, তাঁদের ঘরে ফেরার ব্যবস্থা করার দাবি জানিয়েছে ‘মহিলা সমিতি’। সংগঠনের নেত্রী মিনতি ঘোষ বলেন, “তৃণমূলের লোকেরা ভয় দেখাচ্ছে। মৃতার বৃদ্ধ শ্বশুর-শাশুড়িকে দেখার মতো কেউ নেই।” ঘটনা হল, সোমবার থেকে বধূর দেওর, জা সিপিএমের কাঁথির জোনাল অফিসে রয়েছেন। বধূর স্বামী বলেন, “পুলিশকে ভরসা নেই। তাই গ্রামে ফেরা হচ্ছে না। তৃণমূলের লোক ধরা পড়েছে না।” মূল অভিযুক্ত দেশপ্রাণ পঞ্চায়েত সমিতির কৃষি কর্মাধ্যক্ষ দেবাশিস ভুঁইয়াকে ধরতে পারেননি পুলিশ। তিনি ফোনে আনন্দবাজারকে বলেন, “সিপিএম বছর দু’য়েক আগে আমাকে খুনের চেষ্টা করেছিল। তাতে সফল না হয়ে এখন মিথ্যা অভিযোগে নাটক করছে।” তা হলে তিনি আত্মগোপণ করেছেন কেন? জবাব দেননি দেবাশিস।