কলকাতা হাই কোর্ট। —ফাইল চিত্র।
জমি দখলের মামলায় একই দিনে হাই কোর্টের কোপে পড়লেন বিধাননগর কমিশনারেটের দুই পুলিশকর্তা। একটি মামলায় নিউ টাউন থানার আইসির বিরুদ্ধে বিভাগীয় শাস্তিমূলক ব্যবস্থা গ্রহণের নির্দেশ দিয়েছেন কলকাতা হাই কোর্টের বিচারপতি তীর্থঙ্কর ঘোষ। অন্য মামলায় নারায়ণপুর থানার আইসিকে অপসারণ করতে বলেছেন তিনি। প্রসঙ্গত, বুধবার হিঙ্গলগঞ্জ থানার একটি মামলায় রাজ্য পুলিশের অফিসারদের কাজে পক্ষপাতিত্ব নিয়ে হুঁশিয়ারি দিয়েছিলেন বিচারপতি ঘোষ। আইনজীবীদের পর্যবেক্ষণ, এ দিনও নিউ টাউনের আইসির বিরুদ্ধে কার্যত প্রোমোটার চক্রের সঙ্গে ঘনিষ্ঠতা এবং পক্ষপাতের অভিযোগ উঠেছে। অন্য ঘটনাতেও পুলিশের গাফিলতি সামনে এসেছে।
এ দিন বিচারপতির নির্দেশ, নিউ টাউন থানার আইসি কল্লোলকুমার ঘোষের বিরুদ্ধে বিভাগীয় শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নিয়ে পরবর্তী শুনানির দিন রিপোর্ট দিতে হবে। ওই এলাকার দায়িত্বপ্রাপ্ত ডেপুটি কমিশনার মামলাকারীকে পর্যাপ্ত নিরাপত্তা দেবেন এবং তদন্তের পূর্ণাঙ্গ রিপোর্ট জমা দেবেন ১২ ডিসেম্বর। সে দিনই মামলার পরর্বতী শুনানি।
নিউ টাউনের এক প্রোমোটারের বিরুদ্ধে হুমকি, মারধর ও জোর করে জমি দখলের মামলা করেছিলেন রত্নদীপ মহাপাত্র নামে এক ব্যক্তি। তাঁর আইনজীবী সায়ন বন্দ্যোপাধ্যায়ের অভিযোগ, জোর করে জমি কিনে নেওয়ার চেষ্টা করেন প্রোমোটার। জমি বিক্রিতে নারাজ হওয়ায় রত্নদীপকে মেরে নাক ফাটিয়ে দেওয়া হয়। পুলিশের দ্বারস্থ হলেও আমল দেয়নি পুলিশ।
সেই ঘটনায় এ দিন পুলিশের রিপোর্ট পেশ করেন রাজ্যের আইনজীবী বিমলকুমার শাহি। রিপোর্ট দেখে বিচারপতি তীর্থঙ্কর ঘোষের পর্যবেক্ষণ, আগের দিনের রিপোর্টই ফের পেশ করা হয়েছে। কেন যথাযথ রিপোর্ট পেশ করা হয়নি, তা জানতে চান বিচারপতি। রাজ্যের কৌঁসুলি জানান, এ ব্যাপারে তিনি ওই পুলিশ অফিসারকে পরামর্শ দিলেও তিনি তা মানেননি। এই আচরণে ক্ষোভ প্রকাশ করেন বিচারপতি। আদালতের পর্যবেক্ষণ, পুলিশ প্রোমোটারের পক্ষ নিয়ে যথাযথ তদন্ত করছে না। এর পরেই তিনি বিভাগীয় শাস্তিগ্রহণের নির্দেশ দেন।
ওই এলাকার আর একটি মামলায় নারায়ণপুর থানার তদন্তকারী আধিকারিকের ভূমিকায় বিরক্তি প্রকাশ করেন বিচারপতি তীর্থঙ্কর ঘোষ। কারণ, একটি জমি সংক্রান্ত ঝামেলার মামলায় দু’টি ভিন্ন তদন্তের রিপোর্ট জমা দেন ওই অফিসার। পুলিশ আদালতকে বিভ্রান্ত করছে, এ কথা জানিয়ে বিচারপতি তীর্থঙ্কর ঘোষ রাজ্যের আইনজীবীর উদ্দেশে বলেন, “ওই আইসিকে সরিয়ে দিতে বলুন। না হলে আদালত সরিয়ে দেবে। থানার আইসির মতো গুরুত্বপূর্ণ পদে তাঁর থাকার অধিকার নেই।” এই মামলায় রাজ্যকে ফের রিপোর্ট দেওয়ার নির্দেশ দিয়েছেন বিচারপতি।