শিলিগুড়িতে রাহুল সিংহ।
পুরভোটের প্রস্তুতি নিয়ে ডাকা বৈঠকে তৃণমূলনেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের ‘মদন-মুকুল চোর’ প্রসঙ্গ তোলা নিয়ে আক্রমণ বজায় রাখল বিরোধীরা। বিজেপির নালিশ, পুরভোটের জয়ের জন্য মুকুল আর মদনকে প্রয়োজন। তাই সম্প্রতি ‘দূরে সরানো’ হলেও এখন মমতাকে মুকুল-মদনের সমর্থনে মুখ খুলতে হয়েছে। সোমবার মমতা কালীঘাটে নিজের বাড়িতে বলেছিলেন, “বলা হচ্ছে মদন চোর, মুকুল চোর। কোনও প্রমাণ আছে? দল এ সব বিশ্বাস করে না। মদন-মুকুলকে গ্রেফতারের চক্রান্ত হচ্ছে।” এর পর থেকেই বিরোধীরা অভিযোগ করে, মুখ্যমন্ত্রী ‘আতঙ্কিত’ হয়েই এ কথা বলেছেন। মঙ্গলবারও সেই ধারা বজায় রাখল বিজেপি ও বামেরা। মঙ্গলবার শিলিগুড়িতে সাংবাদিক বৈঠকে বিজেপির রাজ্য সভাপতি রাহুল সিংহ বলেন, “বছরখানেক আগে ক্ষুদিরাম অনুশীলন কেন্দ্র এবং পানিহাটির সভায় তৃণমূল নেত্রী নিজের-সহ দলের ৫ জনের নাম উল্লেখ করে চোর কি না তা প্রশ্ন করেছিলেন। গতকালকে মুখ্যমন্ত্রী শুধু মুকুল ও মদন চোর নয় বলে প্রশ্ন করে বোঝাতে চেয়েছেন এরা চোর নয়। সে বার কুণালের (ঘোষ) নামও মুখ্যমন্ত্রীর তালিকায় ছিল, তাকে মুখ্যমন্ত্রীর পুলিশই ধরেছে। এবার মুখ্যমন্ত্রী নিজের নাম বাদ দিয়েছেন। রাজ্যবাসী জানতে চায় কেন তিনি নিজের এবং বছরখানেক আগে বলা আরও দু’জনের নাম বাদ দিলেন।” মুকুল এবং মদনের নাম কেন মুখ্যমন্ত্রী বললেন, তার ব্যাখ্যাও এ দিন দিয়েছেন রাহুলবাবু। তাঁর কথায়, “হতে পারে ভবিষ্যতের পরিকল্পনায় দু’টি নাম জিইয়ে রাখা। সামনেই কলকাতা-সহ রাজ্যে পুরভোট। সেই ভোট নিয়ে তৃণমূল শঙ্কিত। ভীত সন্ত্রস্ত। এখন মুকুল আর মদনের প্রয়োজন হয়ে পড়েছে। তাই তাঁদের বাহবা দিয়ে কাছে টানার চেষ্টা করছেন তৃণমূল নেত্রী।” রাহুলবাবু অভিযোগ করে বলেন, “মুকুল আর মদন চোর কিনা তা আপনার আচরণ বলে দিচ্ছে। পরিবহণমন্ত্রী এবং মুকুল রায় দু’জনকেই মুখ্যমন্ত্রীর কাছের বলয় থেকে সরিয়ে দেওয়া হয়েছিল। সারদার কারণেই এদের দূরে সরানো হয়েছিল। আর এখন সম্পূর্ণ দিশাহীন, আতঙ্কিত হয়ে আবার ওদের কাছে টানার চেষ্টা চলছে।” মমতার সোমবারের মন্তব্যকে কটাক্ষ করেছেন বামফ্রন্ট চেয়ারম্যান বিমান বসুও। মঙ্গলবার কলকাতায় তিনি বলেন, “আগেও উনি দলের অনেকে চোর কি না তা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছিলেন। এখন অন্তত তা থেকে সরেননি!” তাঁর কটাক্ষ, “তবে আমি এটা জানি কানাকে যেমন কানা বলতে নেই, চোরকে তেমনই চোর বলতে নেই।”