এক পাশে দলের নেতা কেডি বিশ্বাস, অন্য পাশে বনগাঁ কেন্দ্রের প্রার্থী সুব্রত ঠাকুরকে নিয়ে সাংবাদিক সম্মেলন ডেকে ক’দিন আগেই দলের ঐক্যের ছবি তুলে ধরেছিলেন বিজেপির কেন্দ্রীয় নেতা সিদ্ধার্থনাথ সিংহ। কিন্তু এক পক্ষকে সামাল দেওয়া গেলেও প্রার্থী হিসেবে সুব্রতকে মেনে নিতে দলের আরও কিছু নেতা-কর্মীর যে এখনও আপত্তি আছে, সেই তথ্য আর চাপা দিয়ে রাখা যাচ্ছে না। মঙ্গলবারই দলের স্থানীয় নেতা হিসাবে পরিচিত কিশোর বিশ্বাস বনগাঁ কেন্দ্রে নির্দল প্রার্থী হিসাবে মনোনয়ন পত্র জমা দিয়েছেন। দলের কোনও পদে না থাকলেও বনগাঁয় বিজেপির সভা-মিছিলে সামনের সারিতেই দেখা যায় তাঁকে।
সুব্রতর বিরুদ্ধে সরাসরি মুখ না খুললেও কিশোরবাবু বলেন, “রাজ্যের বিভিন্ন নির্বাচনে দেখা যাচ্ছে প্রার্থী নির্বাচনের ব্লক ও জেলা স্তরের নেতা-কর্মীদের মতামতকে গুরুত্ব দেওয়া হচ্ছে না। সে কারণেই আমি নির্দল হিসাবে দাঁড়ানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছি।” দলের জেলা সাধারণ সম্পাদক বিপ্লব হালদার বলেন, “তৃণমূল চক্রান্ত করে কিশোরবাবুকে দাঁড় করিয়েছে। তবে এতে ভোটে আমাদের কোনও ক্ষতি হবে না।” এই অভিযোগ স্বভাবতই মানতে চাননি তৃণমূলের উত্তর ২৪ পরগনা জেলা সভাপতি জ্যোতিপ্রিয় মল্লিক।
অন্য দিকে, কেডির অসুস্থ মাকে বনগাঁ হাসপাতালে দেখতে গিয়ে ‘রাজনৈতিক সৌজন্যের’ পরিচয় দিলেন বনগাঁ কেন্দ্রে উপনির্বাচনে তৃণমূল প্রার্থী মমতা ঠাকুর। অসুস্থ হয়ে রবিবার হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন কেডির মা রেণুকাদেবী। সোমবার তাঁকে দেখতে যান মমতা। পরে তিনি বলেন, “যাঁকে দেখতে এসেছি, তিনি আমার মায়ের মতো।” কেডিও বলেন, “এর মধ্যে কোনও রাজনীতি নেই।” তবে সুব্রতকে প্রার্থী হিসেবে মেনে নিতে বিজেপির যে অংশটির আপত্তি আছে, কেডির পরিবারের সঙ্গে ‘সৌজন্য’ দেখিয়ে তাদেরই কাছে টানতে চাইলেন কিনা মমতা, সেই প্রশ্নও উঠছে।
বিজেপিতে শিল্পী-সুরকারদের দলে টানার চেষ্টা অবশ্য অব্যাহত। বাপ্পি লাহিড়ী, বাবুল সুপ্রিয়র পথ ধরে বিজেপি-তে যোগ দিয়েছেন গায়ক কুমার শানু। আজ দলের রাজ্য দফতরে এসে তিনি দাবি করেন, শীঘ্রই ওই তালিকায় নাম লেখাতে চলেছেন বলিউডে এক সময়ে তাঁরই হিট জুটি অলকা যাজ্ঞিক। শানু বলেন, “অলকা যাজ্ঞিক আমাকে মেসেজ করে জানিয়েছেন, তিনি বিজেপি-তে যোগ দিতে চান। সময় থাকলে বনগাঁ ও কৃষ্ণগঞ্জে উপনির্বাচনের প্রচারেও তিনি থাকবেন।” আগামী ৯ এবং ১০ ফেব্রুয়ারি শানু নিজেও যথাক্রমে কৃষ্ণগঞ্জ বিধানসভায় দু’টি এবং বনগাঁ লোকসভায় তিনটি সভা করবেন।