বদল: এই ছবিটাই বদলাতে দায়িত্ব ভাগের সিদ্ধান্ত হল। ফাইল চিত্র
‘বৃদ্ধের’ বয়স ৮৭ বছর। রাত হলেই নিভে যেত জ্যোতি। অবস্থার উন্নতি ঘটাতে আধুনিক প্রযুক্তির ব্যবহার করা হলেও সমস্যা পুরোপুরি মিটল না। রোগের ওষুধ খুঁজতে গিয়ে চিকিৎসকেরা দেখলেন, প্রতিনিয়ত দেখভাল করতে হবে. তবেই মিটবে এই সমস্যা। ভরসা বৃদ্ধের দু’পাশে থাকা দুই প্রতিবেশী!
এই ‘বৃদ্ধ’ হলেন উইলিংডন ব্রিজ। লোকমুখে যার পরিচিতি বালি ব্রিজ নামে। বেশ কয়েক বছর ধরে রাত বাড়লেই সমস্যা দেখা দিত ব্রিজের দু’পাশের আলোয়। অধিকাংশ সময়েই তা নিভে থাকত। অন্ধকারে ডুবে থাকাই ভবিতব্য হয়ে দাঁড়িয়েছিল বালি ব্রিজের। এ বার সেই অবস্থা বদলাতে রাজ্য পূর্ত দফতরের অধীন এই ব্রিজের আলোর দায়িত্ব তুলে দেওয়া হচ্ছে গঙ্গার দু’ধারের দুই পুরসভা, হাওড়া এবং কামারহাটিকে। ইতিমধ্যেই হাওড়া সেই দায়িত্ব নিয়েছে। হাওড়ার মেয়র রথীন চক্রবর্তী বলেন, ‘‘বালি ব্রিজের সঙ্গে রামকৃষ্ণদেবের ঐতিহ্য জড়িয়ে। তাই আলোর রক্ষণাবেক্ষণের দায়িত্ব পেয়ে আমরা খুশি। বালির দিকে ব্রিজটির দু’টি অব্যবহৃত ঘর রয়েছে বলে জানি। সেগুলি আমাদের দিলে ওখানে ক্যাফেটেরিয়া বা অন্য ভাবে সৌন্দর্যায়ন করা যেত।’’
হাওড়া ও হুগলির সঙ্গে কলকাতা এবং উত্তর ২৪ পরগনার যোগাযোগের জন্য গঙ্গার উপরে তৈরি হয়েছিল এই রেল-সড়ক ব্রিজ। ৮৮০ মিটার লম্বা এই ব্রিজের দু’টি রাস্তায় রয়েছে ৩৫টি করে মোট ৭০টি আলো। রাজ্য পূর্ত দফতর সূত্রের খবর, কয়েক মাস আগেও ব্রিজে জ্বলত ভেপার আলো। কিন্তু সেগুলিও কয়েক দিন অন্তর বন্ধ হয়ে যেত। কারণ খুঁজতে গিয়ে পূর্ত দফতরের ইঞ্জিনিয়াররা দেখেন, ট্রেন বা অন্য গাড়ি যাওয়ায় কেঁপে যেত দীর্ঘদিনের পুরনো কেব্ল। তাতেই কোনও একটি জায়গা থেকে বিদ্যুৎ সংযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে ভেপার নিভে আঁধারে ডুবে যেত ব্রিজ। কয়েক মাস আগেই সব ভেপার আলো বদলে ফেলে পূর্ত দফতর। গোটা ব্রিজে নতুন কেবল দিয়ে লাগানো হয় এলইডি আলো।
যাত্রী এবং গাড়িচালক সকলেরই অভিযোগ, কখনও বালির দিকে, কখনও দক্ষিণেশ্বেরের দিকের এলইডি আলো নিভে যাচ্ছে। ব্রিজে অন্ধকার নামায় বাড়ছে দুর্ঘটনার আশঙ্কা। পূর্ত দফতরের কর্তাদের দাবি, দক্ষিণেশ্বর স্কাইওয়াক তৈরি করতে গিয়ে কেব্ল ফল্ট হয়ে সমস্যা দেখা দিচ্ছে। পূর্ত দফতরের এক শীর্ষ কর্তা জানান, কয়েক দিন আগেই দফতরের মুখ্য সচিব এক নির্দেশিকা জারি করেছেন। তাতে বলা হয়েছে, ব্রিজগুলি দেখভাল করবে স্থানীয় পুরসভা। পূর্ত দফতর সূত্রের খবর, ব্রিজে বালির দিকের ২০টি করে ৪০টি আলো রক্ষণাবেক্ষণের দায়িত্ব হাওড়া পুরসভাকে দেওয়া হয়েছে। কামারহাটি পুরসভার চেয়ারম্যান গোপাল সাহা বলেন, ‘‘এখনও প্রস্তাব পাইনি। পেলে আলোচনা করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’’