প্রশিক্ষিত আর প্রশিক্ষণহীন প্রার্থীদের নিয়ে দীর্ঘ টানাপড়েনে স্কুলে নিয়োগ আটকে আছে। এই অবস্থায় রাজ্য সরকার জানিয়ে দিল, নবম থেকে দ্বাদশ, চারটি শ্রেণির ছাত্রছাত্রীদের পড়ানোর ক্ষেত্রে শিক্ষক-শিক্ষিকাদের কোনও প্রশিক্ষণ না-থাকলেও চলবে।
অষ্টম শ্রেণি পর্যন্ত পড়াতে শিক্ষকদের প্রশিক্ষণ বাধ্যতামূলক। কিন্তু নবম থেকে সেই বাধ্যতা নেই। তাই পূর্ব ঘোষণা অনুসারেই নবম থেকে দ্বাদশ শ্রেণির শিক্ষকদের জন্য আলাদা ভাবে ন্যূনতম শিক্ষাগত যোগ্যতা নির্দিষ্ট করে দিল রাজ্য সরকার। স্নাতকোত্তর বা অনার্স গ্র্যাজুয়েট যোগ্যতার প্রার্থীরাই দ্বাদশ শ্রেণি পর্যন্ত শিক্ষকতা করতে পারেন। তাঁদের নিয়োগের সময় শিক্ষকতার প্রশিক্ষণ বা বিএড ডিগ্রি বাধ্যতামূলক নয় বলে নয়া নিয়মে জানানো হয়েছে।
ন্যাশনাল কাউন্সিল ফর টিচার এডুকেশন (এনসিটিই)-এর নিয়ম অনুযায়ী অষ্টম শ্রেণি পর্যন্ত শিক্ষক-শিক্ষিকাদের দু’বছরের প্রশিক্ষণ থাকা আবশ্যিক। কিন্তু রাজ্যে শূন্য শিক্ষকপদের তুলনায় প্রশিক্ষিত প্রার্থী কম। তাই প্রাথমিক (প্রথম থেকে চতুর্থ) এবং উচ্চ প্রাথমিক (পঞ্চম থেকে অষ্টম) স্তরে শিক্ষক নিয়োগের ক্ষেত্রে প্রশিক্ষণহীন প্রার্থীদের ছাড় দেওয়ার জন্য বারবার কেন্দ্রের কাছে দরবার করেছে রাজ্য। কিন্তু কেন্দ্রের সাড়া মেলেনি। ছাড়ের জন্য দরবার করতে আজ, শুক্রবার দিল্লি যাচ্ছেন রাজ্যের শিক্ষা দফতরের দুই কর্তা।
এই পরিস্থিতিতে নতুন নিয়ম তৈরি করে রাজ্য জানিয়েছে, অনার্স গ্র্যাজুয়েট বা স্নাতকোত্তর প্রার্থীদের শিক্ষকতার জন্য লিখিত পরীক্ষায় বসতে হলে মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিক স্তরে অন্তত ৪৫%, অনার্স ও স্নাতকোত্তরে ৪০% নম্বর পেতে হবে। একাদশ-দ্বাদশে শুধু অনার্স স্নাতক ও স্নাতকোত্তর ডিগ্রিধারীরাই শিক্ষকতা করেন। অনার্স না-থাকলেও পরীক্ষায় দেওয়া যাবে। সাধারণ স্নাতকেরা মাধ্যমিক স্কুলে দশম শ্রেণি পর্যন্ত পড়ান। সে-ক্ষেত্রে স্নাতকে অন্তত ৪৫% পেতে হবে। তাঁদের প্রশিক্ষণ বাঞ্ছনীয় হলেও বাধ্যতামূলক নয়।
শিক্ষামন্ত্রী পার্থবাবু বৃহস্পতিবার বলেন, “পঞ্চম থেকে অষ্টম আর নবম থেকে দ্বাদশে শিক্ষকতার জন্য যে পৃথক শিক্ষাগত যোগ্যতা নির্দিষ্ট করা হবে এবং পরীক্ষাও আলাদা ভাবে হবে, আগেই তা জানানো হয়েছিল। সেই ঘোষণা মেনেই এই বিজ্ঞপ্তি।”