ফ্রেমে বন্দি। মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিক পরীক্ষায় কৃতীদের সংবর্ধনা অনুষ্ঠানে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। মঙ্গলবার টাউন হলে। ছবি: সুমন বল্লভ।
সর্বভারতীয় প্রতিযোগিতায় বাংলার ছেলেমেয়েরা পিছিয়ে পড়ছেন। কিন্তু তাঁরা পিছিয়ে পড়ছেন কেন?
“আমাদের এখানে পরীক্ষায় প্রশ্নের উত্তর ঠিক লিখলেও নম্বর কাটবেই। অন্য জায়গায় কিন্তু ঠিক লিখলে পূর্ণ নম্বর দেওয়া হয়। তাই দেখা যাচ্ছে, আমাদের ছেলেমেয়েরা ৯৭-৯৮ পাচ্ছে। অথচ অন্য জায়গায় ছাত্রছাত্রীরা পেয়ে যাচ্ছে ১০০,” এই উপলব্ধি খোদ মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের। প্রতিকার কী?
“পরীক্ষায় ঠিক উত্তর দিলে নম্বর কাটা যাবে না। কর্তাদের (শিক্ষা দফতরের) এটা দেখতে বলছি,” সাফ বলে দিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী।
সরকারের তরফে মঙ্গলবার টাউন হলে এ বারের মাধ্যমিক, উচ্চ মাধ্যমিক পরীক্ষার মেধা-তালিকাভুক্ত ছাত্রছাত্রীদের সংবর্ধনা দেওয়া হয়। সেখানেই নম্বরের ব্যাপারে নিজের মত জানান মুখ্যমন্ত্রী। তিনি মনে করেন, কম নম্বর পাওয়ায় সর্বভারতীয় স্তরের প্রতিযোগিতায় রাজ্যের ছেলেমেয়েরা পিছিয়ে পড়ছেন। অথচ মেধা ও প্রতিভার নিরিখে বাংলার ছাত্রছাত্রীরা গোটা দেশে এগিয়ে। এই দক্ষতাকে ব্যবহার করা দরকার।
সে-কথায় মাথায় রেখেই নম্বরের ব্যাপারে শিক্ষা দফতরের কর্তাদের ওই পরামর্শ দেন মুখ্যমন্ত্রী। অনুষ্ঠানে মুখ্যমন্ত্রী ছাড়াও ছিলেন শিক্ষামন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায়, মধ্যশিক্ষা পর্ষদ, উচ্চ মাধ্যমিক শিক্ষা সংসদ, প্রাথমিক শিক্ষা পর্ষদ, স্কুল সার্ভিস কমিশন-সহ বিভিন্ন সংস্থা এবং স্কুলশিক্ষা দফতরের কর্তারা। এসেছিলেন বৃত্তিমূলক শিক্ষা সংসদের নবনিযুক্ত সভাপতি রুদ্রনীল ঘোষ এবং চিত্রপরিচালক রাজ চক্রবর্তীও। সংবর্ধনা, উপহার দেওয়ার সঙ্গে সঙ্গে ছাত্রছাত্রীদের সঙ্গে কথা বলে তাঁদের ভবিষ্যৎ পরিকল্পনার কথা জেনে নেন মুখ্যমন্ত্রী। ছাত্রছাত্রীদের কেউ কেউ মুখ্যমন্ত্রীকে পাল্টা উপহারও দেন।
আইসিএসই, সিবিএসই-র ছাত্রছাত্রীদের সঙ্গে প্রতিযোগিতায় মাধ্যমিক, উচ্চ মাধ্যমিক বোর্ডের পড়ুয়ারা যাতে পিছিয়ে না-পড়েন, সেই জন্য প্রশ্নপত্রের ধরনে বদল ঘটানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছে মধ্যশিক্ষা পর্ষদ, উচ্চ মাধ্যমিক শিক্ষা সংসদ। বাড়ানো হচ্ছে অবজেক্টিভ বা ছোট প্রশ্নের গুরুত্ব। মুখ্যমন্ত্রীর গলায় অনেকটা সেই পরামর্শই শোনা গেল। নতুন প্রশ্নে ২০১৫-য় উচ্চ মাধ্যমিক এবং ২০১৭-য় মাধ্যমিক পরীক্ষা হবে।