এমবিবিএস জট

খোয়ানো আসন পেতে মরিয়া রাজ্য

ডাক্তারিতে ছাত্র ভর্তির প্রক্রিয়া শুরু হচ্ছে ২৫ জুন। অথচ, তার ৪৮ ঘণ্টা আগেও এমবিবিএস-এ খোয়া যাওয়া ৮০০ আসন ফেরত পেল না রাজ্য। এর ফলে এক দিকে যেমন ছাত্রছাত্রীদের আতঙ্কের পারদ বাড়ছে, তেমনই পরিস্থিতি সামাল দিতে কার্যত মরিয়া হয়ে উঠেছে স্বাস্থ্য ভবন। একেবারে শিরে সংক্রান্তিতে আর কোনও উপায় না পেয়ে শেষ পর্যন্ত কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্য মন্ত্রক ও মেডিক্যাল কাউন্সিল অব ইন্ডিয়া-র (এমসিআই) কাছে আবেদন-নিবেদনের পথে হাঁটতে চলেছে রাজ্যের স্বাস্থ্য দফতর।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

কলকাতা শেষ আপডেট: ২২ জুন ২০১৪ ০৩:১০
Share:

ডাক্তারিতে ছাত্র ভর্তির প্রক্রিয়া শুরু হচ্ছে ২৫ জুন। অথচ, তার ৪৮ ঘণ্টা আগেও এমবিবিএস-এ খোয়া যাওয়া ৮০০ আসন ফেরত পেল না রাজ্য। এর ফলে এক দিকে যেমন ছাত্রছাত্রীদের আতঙ্কের পারদ বাড়ছে, তেমনই পরিস্থিতি সামাল দিতে কার্যত মরিয়া হয়ে উঠেছে স্বাস্থ্য ভবন। একেবারে শিরে সংক্রান্তিতে আর কোনও উপায় না পেয়ে শেষ পর্যন্ত কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্য মন্ত্রক ও মেডিক্যাল কাউন্সিল অব ইন্ডিয়া-র (এমসিআই) কাছে আবেদন-নিবেদনের পথে হাঁটতে চলেছে রাজ্যের স্বাস্থ্য দফতর।

Advertisement

তবে অনুনয়-বিনিময়ে যে খুব একটা লাভ হবে না, তার ইঙ্গিত মিলেছে এমসিআইয়ের এথিক্যাল কমিটির সদস্য সুদীপ্ত রায়ের কথায়। তাঁর বক্তব্য, “যেটুকু জানা গিয়েছে তাতে বোঝা যাচ্ছে আর কোনও সম্ভাবনা নেই। ‘চ্যাপ্টার ইজ ক্লোজড।’ ১২০০ বাতিল আসনের মধ্যে এ বছর সাকুল্যে ৪০০-ই ফেরত পাওয়া যাবে, তার বেশি নয়।”

স্বাস্থ্য ভবন সূত্রের খবর, দিন পাঁচেক আগে দিল্লি গিয়েছিলেন সহকারী স্বাস্থ্য-শিক্ষা অধিকর্তা গৌতম ধর ও মুর্শিদাবাদ মেডিক্যাল কলেজের অধ্যক্ষ অজয় রায়। দেখা যায়, এমবিবিএসে আসন কমে যাওয়া নিয়ে রাজ্যের লেখা চিঠির প্রেক্ষিতে এমসিআই যে জবাব দিয়েছিল, সে সব স্বাস্থ্য মন্ত্রকে আটকে রয়েছে। অজয়বাবু তদ্বির করে সেই সব চিঠির প্রতিলিপি নিয়ে কলকাতায় ফিরেছেন। এখন এমসিআইয়ের ওই চিঠির প্রেক্ষিতে স্বাস্থ্য দফতর নতুন করে চিঠি লিখছে। মঙ্গলবার তা নিয়ে ফের দিল্লি যাওয়ার কথা সহকারী স্বাস্থ্য-শিক্ষা অধিকর্তার।

Advertisement

কিন্তু তাতে আদৌ কাজ হবে কি না, তা নিয়ে সংশয়ে স্বাস্থ্যকর্তাদেরই একাংশ। তাঁদের বক্তব্য, বিভিন্ন মেডিক্যাল কলেজে পরিকাঠামোর অভাবে অনেক দিন আগেই এ রাজ্যের এমবিবিএসে ১২০০ আসন বাতিলের সুপারিশ করেছিল এমসিআই। তা নিয়ে প্রথম দিকে তেমন গা করেনি স্বাস্থ্য দফতর। কিছু চিঠিচাপাটি চালাচালি করেই এমসিআইয়ের বিবেচনার অপেক্ষায় ছিলেন একাধিক স্বাস্থ্যকর্তা। কিন্তু হাতে সময় যখন কমে আসছে তখন তৎপরতা বেড়েছে স্বাস্থ্যভবনের। রাজ্যের স্বাস্থ্য-শিক্ষা অধিকর্তা সুশান্ত বন্দ্যোপাধ্যায় অবশ্য বলেছেন, “জগদ্দল পাথরকেও মানুষ নাড়ানোর চেষ্টা করে। আশা না ছেড়ে আমরাও দিল্লির দৃষ্টি আকর্ষণ করছি।”

স্বাস্থ্য-শিক্ষা অধিকর্তার দাবি, উত্তরবঙ্গ মেডিক্যাল কলেজ প্রথম বার পরিদর্শনের পরে তারা কোনও ত্রুটি পেল কি না, সে সব কিছুই জানায়নি এমসিআই। মালদহ মেডিক্যাল কলেজ ও সাগর দত্ত মেডিক্যাল কলেজে দ্বিতীয় বার পরিদর্শনেই আসেনি তারা। আবার কল্যাণী মেডিক্যাল কলেজে প্রথম বার পরিদর্শনের পরে তাদের ধরিয়ে দেওয়া ত্রুটি সংশোধন করে যে চিঠি লেখা হয়েছিল, তারও কোনও উত্তর দেয়নি এমসিআই। একই ভাবে বাঁকুড়া মেডিক্যাল কলেজ, এনআরএস, আরজিকর এবং এসএসকেএমের ব্যাপারে জবাব মেলেনি। সুশান্তবাবুর বক্তব্য, “পরিকাঠামো ঠিক করে দেওয়ার পরেও এমসিআই যদি চুপ করে থাকে সেটা খুবই অদ্ভুত।”

কিন্তু প্রশ্ন উঠেছে, সমস্যা যখন এত গুরুতর তখন দফতরের উঁচুতলার কোনও অফিসার কেন দিল্লি যাচ্ছেন না? কিছু দিন আগেই কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্যমন্ত্রী হর্ষবর্ধন জানিয়েছিলেন, রাজ্য যদি আলাদা করে চিঠি লিখে আবেদন জানায় তা হলে আসন ফেরানোর বিষয়টি তিনি এমসিআইকে বিবেচনা করতে বলবেন। তা হলে রাজ্য কেন হর্ষবর্ধনকে চিঠি লিখল না? স্বাস্থ্য দফতরের তরফে এর সদুত্তর মেলেনি।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement