স্কুল সার্ভিস কমিশন (এসএসসি)-এর পরীক্ষায় এক শিক্ষক পদপ্রার্থীর উত্তরপত্র দ্বিতীয় কোনও পরীক্ষককে দিয়ে নতুন করে খতিয়ে দেখার নির্দেশ দিল কলকাতা হাইকোর্ট। শুধু তা-ই নয়, মামলার নিষ্পত্তি না-হওয়া পর্যন্ত এসএসসি-কে একটি পদ শূন্য রাখতে হবে বলেও জানিয়ে দিয়েছেন বিচারপতি দেবাশিস করগুপ্ত। আদালত সূত্রের খবর, জিয়াউল হক নামে ওই পরীক্ষার্থীর বিষয়ভিত্তিক পরীক্ষার খাতায় দেখা যায়, তিনি ১০টি প্রশ্নের ঠিক উত্তর লিখেছেন। অথচ তাঁকে নম্বর দেওয়া হয়নি। খাতা এবং এসএসসি-র মডেল উত্তর মিলিয়ে দেখে বিস্ময় প্রকাশ করেন বিচারপতি করগুপ্ত। তাঁর প্রশ্ন, মডেল উত্তরের সঙ্গে আবেদনকারীর লেখা উত্তর মিলে যাওয়া সত্ত্বেও তিনি নম্বর পেলেন না কেন? ওই প্রার্থীর খাতা দ্বিতীয় কোনও পরীক্ষককে দিয়ে মূল্যায়ন করাতে হবে।
এসএসসি-র উত্তরাঞ্চল থেকে বাংলার শিক্ষক-পদের জন্য পরীক্ষা দিয়েছিলেন জিয়াউল। বিষয়ভিত্তিক পরীক্ষায় ৬০ নম্বরের মধ্যে অন্তত ২৪ পেলে তবে উত্তীর্ণ বলে ধরা হয়। জিয়াউল তার থেকে কম পেয়েছেন। তথ্য জানার অধিকার আইনে খাতা দেখতে চান তিনি। খাতা দেখে সন্তুষ্ট হতে না-পেরে হাইকোর্টের দ্বারস্থ হন ওই প্রার্থী। আবেদনকারীর আইনজীবী অঞ্জন ভট্টাচার্য বলেন, শুক্রবার ওই খাতা এবং মডেল উত্তর বিচারপতির সামনে পেশ করা হয়। মডেল উত্তরের সঙ্গে মিলিয়ে দেখা যায়, জিয়াউল ১০টি প্রশ্নের ঠিক উত্তর লিখলেও সব ক’টিতেই তাঁকে শূন্য দেওয়া হয়েছে। অথচ ১০ নম্বর পেলেই জিয়াউল বিষয়ভিত্তিক পরীক্ষায় উতরে যেতেন।
শুক্রবার মামলার শুনানিতে বিচারপতি নিজেই মডেল উত্তরের সঙ্গে জিয়াউলের উত্তরপত্র মিলিয়ে দেখেন। ১০টি প্রশ্নের উত্তরে তিনি কোনও ভুল দেখছেন না বলেও মন্তব্য করেন। তার পরেই এসএসসি-কে অন্য এক জন পরীক্ষককে দিয়ে খাতাটি আবার পরীক্ষা করনোর নির্দেশ দেন তিনি। বিচারপতি জানান, এই ধরনের গাফিলতি অনেক ক্ষেত্রে বিপদ ডেকে আনে। এক মাসের মধ্যে জিয়াউলের খাতা পরীক্ষা করে ফল জানাতে হবে। তত দিন বাংলার শিক্ষকের একটি পদ শূন্য রাখতে হবে এসএসসি-কে।