আগের বার ছিল ১৩ টাকা। এ বার রাজ্য সরকার খুচরো বাজারে জ্যোতি আলুর দাম বেঁধে দিল ১৪ টাকা কিলোগ্রাম।
নির্দিষ্ট করে দেওয়া এই দামেই আলু বিক্রি করতে হবে বলে ব্যবসায়ী সংগঠনগুলিকে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। খুচরো বাজারে পেঁয়াজের দামও ঊর্ধ্বমুখী। তবে সরকার আশা করছে, আগামী সপ্তাহে পেঁয়াজের দাম কিছুটা হলেও কমবে। রাজ্যের বাজার থেকে পেঁয়াজ যাতে চোরাপথে বাংলাদেশে পাচার হতে না-পারে, সেই জন্য রাজ্য পুলিশের ডিরেক্টর জেনারেলকে সতর্ক করে দিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। তিনি নির্দেশ দিয়েছেন, প্রয়োজনে পাচারকারীদের গ্রেফতার করতে হবে।
গত বছর আলুর দাম সাধারণ মানুষের নাগালে বাইরে চলে যাওয়ায় রাজ্য সরকার রীতিমতো বিজ্ঞপ্তি জারি করে খুচরো বাজারে আলুর দাম কিলোগ্রাম-পিছু ১৩ টাকায় বেঁধে দিয়েছিল। এ ছাড়া সরকারি উদ্যোগে বিভিন্ন বাজারে ন্যায্য মূল্যে আলু বিক্রি করার ব্যবস্থাও হয়েছিল। এ বছর এখনও পর্যন্ত তেমন বিজ্ঞপ্তি জারির পরিকল্পনা নেই বলেই জানান কৃষি বিপণন দফতরের কর্তারা।
সব্জি বাজারের দাম নিয়ন্ত্রণ নিয়ে সোমবার নবান্নে বৈঠক করেন মুখ্যমন্ত্রী। সেখানেই খুচরো বাজারে আলুর দাম নিয়ে দীর্ঘ ক্ষণ আলোচনা হয়। আলুর দাম যে ফের মানুষের নাগালের বাইরে চলে যাচ্ছে, সেই খবর মুখ্যমন্ত্রীর কানে আগেই পৌঁছেছিল। এ দিনের বৈঠকে মুখ্যমন্ত্রী এই বিষয়ে বেশ ক্ষোভ প্রকাশ করেন বলেই নবান্ন সূত্রের খবর। তিনি হিমঘর-মালিকদের কাছে জানতে চান, চাষিরা নৈ’টাকা কেজি দরে আলু বিক্রি করছেন। অথচ খুচরো বাজারে সেই আলুই ১৮ থেকে ২০ টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে। কোথাও কোথাও দামটা
আরও বেশি। দামে এত ফারাক হচ্ছে কেন? মুখ্যমন্ত্রী নির্দেশ দেন, খুচরো বাজারে ১৪ টাকা কেজি দরে আলু বিক্রির ব্যবস্থা করতে হবে।
ব্যবসায়ীরা জানান, ১৪ টাকা দরে আলু বেচলে তাঁদের লোকসান হবে। মুখ্যমন্ত্রী অবশ্য সেই যুক্তিকে আমল দেননি।
জোগান বাড়ায় পেঁয়াজ নিয়ে চিন্তা কিছুটা কেটেছে। রাজ্যের কৃষি বিপণন দফতর সূত্রের খবর, সোমবারেই রাজ্যে ১০ হাজার মেট্রিক টন পেঁয়াজ এসেছে। ফলে রাজ্যের বাজারে পেঁয়াজের জোগান নিয়ে টানাটানি চলবে না বলেই মনে করছে সরকার। কলকাতার বাজারে এখন গড়ে ৩০ থেকে ৩৫ টাকা কেজি দরে পেঁয়াজ বিক্রি হচ্ছে। অসাধু ব্যবসায়ীরা যাতে কৃত্রিম ভাবে পেঁয়াজের দাম বাড়াতে না-পারে, সে-দিকে কড়া নজর রাখার নির্দেশ দিয়েছেন মমতা।
আলুর দাম বেঁধে দেওয়া এবং পেঁয়াজ নিয়ে কালোবাজারির উপরে নজরদারির সঙ্গে সঙ্গে সব্জির দাম নাগালে রাখতে আরও কিছু ব্যবস্থা নিচ্ছে সরকার। তার মধ্যে আছে সরকারি উদ্যোগে সব্জি বিপণন। ন্যায্য মূল্যের ওষুধের দোকানের মতো সরকার এ বার কলকাতা এবং পার্শ্ববর্তী এলাকায় ন্যায্য মূল্যের সব্জির দোকান চালু করার পরিকল্পনা করছে। কলকাতা পুরসভার কমিশনার খলিল আহমেদ এ দিনই মুখ্যমন্ত্রীকে জানান, ন্যায্য মূল্যের সব্জি দোকান তৈরির জন্য ২৭টি জায়গা চিহ্নিত করা হয়েছে। মুখ্যমন্ত্রী সেগুলির ব্যাপারে সম্মতিও দিয়েছেন। তবে কবে ন্যায্য মূল্যের ওই সব দোকান চালু হবে, সেই বিষয়ে এখনও সিদ্ধান্ত হয়নি।