আলু ব্যবসায়ীদের অভিযোগ, রাজ্য সরকার টোকেন দেওয়া বন্ধ করায় তাঁরা ভিন্ রাজ্যে আলু পাঠাতে পারছেন না।
নবান্নের পাল্টা অভিযোগ, ভিন্ রাজ্যে আলু পাঠানোর বিনিময়ে যে-পরিমাণ আলু সরকারকে দেওয়ার কথা, ব্যবসায়ীরা তা দিচ্ছেন না।
এই চাপান-উতোরের মধ্যেই আজ, বৃহস্পতিবার ফের টাস্ক ফোর্সের বৈঠক ডেকেছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। তবে এত কিছুর পরেও সেই ২২ টাকা কিলোগ্রাম দরেই জ্যোতি আলু কিনতে হচ্ছে মানুষকে।
আমজনতা যাতে সাধ্যের দরে আলু কিনতে পারে, সেই জন্য একের পর এক পদক্ষেপ করেছে সরকার। কখনও ভিন্ রাজ্যে রফতানির পথে লরিভর্তি আলু বাজেয়াপ্ত করেছে পুলিশ। পরে সেই আলু মিলনমেলায় মজুত রাখায় অর্ধেকের বেশি পচে নষ্ট হয়েছে। ফলে সরকারি দরে আলু বিলির যে-ব্যবস্থা করেছিল রাজ্য, তা অচিরেই মুখ থুবড়ে পড়ে। প্রশাসনের একাংশের অভিযোগ, বাজারনীতিকে জোর করে নিয়ন্ত্রণ করতে গিয়ে সাধারণ মানুষের বিপত্তিই বাড়িয়েছে সরকার। আলুর দাম কমার বদলে দিন দিন তা ঊর্ধ্বমুখীই হয়েছে।
এ-হেন পরিস্থিতির মোকাবিলায় প্রগতিশীল আলু ব্যবসায়ীদের সঙ্গে চুক্তি করেছিল রাজ্য সরকার। বলা হয়েছিল, ব্যবসায়ীরা রোজ সরকারকে ২০০ মেট্রিক টন আলু দেবেন। তার বদলে তাঁরা ১১০০ মেট্রিক টন আলু পাঠাতে পারবেন অন্যান্য রাজ্যে। মাস তিনেক ধরে এমনটাই চলছিল। কিন্তু দুর্গাপুজোর আগে থেকে ব্যবসায়ীদের তরফে সরকারকে আলু দেওয়া অনিয়মিত হয়ে পড়ে বলে অভিযোগ কৃষি বিপণন দফতরের। তাদের হিসেব, চুক্তি অনুযায়ী ব্যবসায়ীদের কাছে রাজ্য ৩০০০ মেট্রিক টন আলু পায়। সেই ঘাটতি না-মেটানোয় পুজোর সময় সাময়িক ভাবে ২০ দিন ভিন্ রাজ্যে আলু পাঠানোর টোকেন দেওয়া বন্ধ করে দেয় সরকার।
তার পরে ফের টোকেন দেওয়া হচ্ছিল। কিন্তু পরিস্থিতির কোনও বদল না-হওয়ায় ৯ নভেম্বর থেকে আর ব্যবসায়ীদের টোকেন দিচ্ছে না সরকার। আলু ব্যবসায়ী সমিতির নেতা বরেন মণ্ডল বলেন, “পুজোর সময় হিমঘরে কর্মী-সমস্যা ছিল। অনেকে ছুটিতে থাকায় প্রতিদিন চুক্তি অনুযায়ী আলু দেওয়া সম্ভব হয়নি।” তাঁর অভিযোগ, সরকার টোকেন দেওয়া বন্ধ করায় তাঁরা ২৪ হাজার মেট্রিক টন আলু ভিন্ রাজ্যে পাঠাতে পারেননি। বৃহস্পতিবারের বৈঠকে মুখ্যমন্ত্রীকে তাঁরা সে-কথাই জানাবেন বলে জানিয়েছেন বরেনবাবু।