অনুপ্রবেশকারী-প্রশ্নে তাঁর বক্তব্য নিয়ে বিতর্কের মধ্যেই আজ, বুধবার ফের রাজ্যে আসছেন বিজেপি-র প্রধানমন্ত্রী পদপ্রার্থী নরেন্দ্র মোদী। রাজ্যে চতুর্থ দফার ভোটের দিন দক্ষিণবঙ্গে তিনটি সভা করবেন তিনি।
ফেব্রুয়ারির গোড়ায় ব্রিগেড সমাবেশের পরে ভোট মরসুমে এ পর্যন্ত আরও তিন বার রাজ্যে ঘুরে গিয়েছেন মোদী। শিলিগুড়ি, শ্রীরামপুর এবং বাঁকুড়া ও আসানসোলে সভা করে গিয়েছেন। এ বার এক দিনে তাঁর তিনটি সভা তিন জেলায়। প্রথমে কৃষ্ণনগরের শক্তিমন্দির মাঠ, তার পরে বারাসতের কাছারি ময়দান এবং শেষে কলকাতার কাঁকুড়গাছিতে এপিসি পার্কে জনসভায় ভাষণ দেওয়ার কথা মোদীর। কৃষ্ণনগরে বিজেপি প্রার্থী তথা প্রাক্তন কেন্দ্রীয় মন্ত্রী সত্যব্রত (জলু) মুখোপাধ্যায়ের সমর্থনে মোদীর সভা কারবালা ময়দানে হবে বলে প্রথমে ঠিক হয়। কিন্তু সেখানে সভা করতে গেলে হেলিপ্যাডে নেমে প্রায় আড়াই কিলোমিটার সড়ক পথে যেতে হত মোদীকে। নিরাপত্তার প্রশ্নে আপত্তি জানিয়েছে গুজরাত পুলিশ। তার পরে সভাস্থল পরিবর্তন করে শক্তিনগরের শক্তিমন্দির মাঠে নিয়ে যাওয়া হয়েছে।
মোদী রাজ্যে আসার আগে তাঁর অনুপ্রবেশকারী-তত্ত্বে চাপানউতোর অব্যাহত। শরণার্থীদের রক্ষা করা এবং অনুপ্রবেশকারীদের ফেরত পাঠানোর কথা বলায় গুজরাতের মুখ্যমন্ত্রীকে এ দিন ফের এক হাত নিয়েছেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। বসিরহাট, পানিহাটিতে দু’টি জনসভায় এ দিন মমতা বলেছেন, “৯০% সংবাদমাধ্যমকে কোটি কোটি টাকা দিয়ে এক জন প্রধানমন্ত্রী হয়ে গিয়েছে বলে গ্যাস বেলুন ফোলানো হচ্ছে! লতা গাছ নয়, বটবৃক্ষ হয়ে দেশের প্রধানমন্ত্রী হতে গেলে সকলকে নিয়ে চলতে শিখতে হয়। অথচ কোন এক জন হরিদাস পাল এসে কাউকে বলছে শরণার্থী, কাউকে বলছে বাংলা ছাড়তে! বাংলাকে ভাগ করতেও চাইছে!” মোদীর উদ্দেশে ফের তৃণমূল নেত্রীর চ্যালেঞ্জ, “আমি বলি কী আগে নিজেকে ঠেকাও! তার পরে অন্যদের তাড়ানোর কথা না হয় ভেবো! ক্ষমতা থাকলে আগে আমার গায়ে হাত দাও, দেখি কত সাহস! এক বার গায়ে হাত দিলে তোমার ওই হাত পুড়ে যাবে!’’
কলকাতায় এ দিনই মুখ্যমন্ত্রীর মমতার মোদীকে আক্রমণের ধরন নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন বিজেপি-র কেন্দ্রীয় নেতা রবিশঙ্কর প্রসাদ। হতাশা থেকেই তৃণমূল নেত্রী ‘কোমরে দড়ি দিয়ে’ মোদীকে ঘোরানোর কথা বলছেন বলে কটাক্ষ করেন তিনি। রবিশঙ্করের কথায়, “মমতাজি তো এই ভাষায় কথা বলেন না! এখন হার নিশ্চিত জেনেই এমন ভাষা ব্যবহার করছেন। যে মানুষটি দিনদশেক বাদে দেশের প্রধানমন্ত্রী হতে চলেছেন, তাঁকে নিয়ে এই মন্তব্য করলে মমতাই মানুষের কাছে হাস্যাস্পদ হবেন।”
অনুপ্রবেশ নিয়ে মমতার এখনকার অবস্থান নিয়ে প্রশ্ন তুলেছে সিপিএম। তাদের বক্তব্য, “এখন অনুপ্রবেশকারী নিয়ে মায়াকান্না কাঁদছেন! অথচ এই বিষয়ে আগে সংসদে উনি (মমতা) কী বলেছিলেন, সে সব তো রেকর্ডে আছে!” একই কথা সোমবার বলে বিজেপি-ও।