রাস্তার ধারে মাথা উঁচু করে দাঁড়িয়ে পেল্লায় মুরগি। উচ্চতা ১১৪ ফুট। তবে এ মুরগি চলাফেরা করে না। ডিমও পাড়ে না। তবে পেটের মধ্যে রাখতে পারে একসঙ্গে অনেক মানুষকে।
অবিশ্বাস্য মনে হলেও বিশালাকার মুরগির আদলে তৈরি সেই হোটেল তাক লাগাচ্ছে দেশ-বিদেশের বহু মানুষকে। হোটেলটির দেখা মিলবে দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার দ্বীপরাষ্ট্র ফিলিপিন্সে গেলে।
আকাশছোঁয়া ওই মুরগি আকৃতির হোটেলটি ইতিমধ্যেই জায়গা করে নিয়েছে গিনেস বুকেও।
ফিলিপিন্সে নিগ্রোস অক্সিডেন্টালের ক্যাম্পুয়েস্টোহানে বিশালকার মুরগি আকৃতির ভবনটি রয়েছে।
ভবনটির উচ্চতা ১১৪ ফুট ৭ ইঞ্চি এবং ৩৯ ফুট ৯ ইঞ্চি চওড়া। এটিই বিশ্বের সবচেয়ে বড় মুরগি আকৃতির ভবন।
মুরগি আকৃতির হোটেলটি ক্যাম্পুয়েস্টোহান একটি বিলাসবহুল রিসোর্টের অংশ। হোটেলটিতে শীতাতপ যন্ত্র, বড় টিভির মতো আধুনিক সুযোগ-সুবিধা যুক্ত মোট ১৫টি কামরা রয়েছে।
মুরগি আকৃতির এই হোটেলের অনন্য নকশা তৈরি করেছেন রিকার্ডো ক্যানো গোয়াপো ট্যান। হোটেলের মালিকও তিনি। স্থানীয় শিল্পীদের দ্বারা অনুপ্রাণিত হয়েই নাকি এই নকশা তৈরি করেন ট্যান।
ছ’মাস ধরে পরিকল্পনা করার পর ২০২৩ সালের জুন মাসে হোটেলটির নির্মাণকাজ শুরু হয়। শেষ হয় চলতি বছরের সেপ্টেম্বরে। এর পরেই গিনেস বুকে নাম তোলে এই ভবন।
দৈত্যাকার মুরগি আকৃতির হোটেলটির পাশাপাশি ওই রিসর্টে একটি ওয়েভ পুল, সুইমিং পুল এবং থিমপার্ক রয়েছে। রয়েছে একটি রেস্তরাঁ এবং ক্যাফেও।
প্রতি বছর হাজার হাজার পর্যটক ওই রিসর্টে ভিড় জমান। তবে সেপ্টেম্বরে মুরগি আকৃতির হোটেলটি চালু হওয়ার পর পর্যটকদের ভিড় আরও বৃদ্ধি পেয়েছে।
ট্যানের যাত্রা শুরু হয় ২০১০ সালে। তিনি এবং তাঁর স্ত্রী নীতা রিসর্ট তৈরির জন্য ওই জমি কিনেছিলেন। উপযুক্ত রাস্তা এবং বিদ্যুতের অভাব থাকলেও মুগ্ধ করা পাহাড়ের দৃশ্যের জন্য পরিচিত ক্যাম্পুয়েস্টোহান শহর।
ট্যান রিসর্ট তৈরি করার পাশাপাশি স্থানীয় যুবক-যুবতীদের একাংশকে সেখানে কর্মসংস্থানও করে দিয়েছেন।
গত বছর নিজের রিসর্ট আরও আকর্ষণীয় করে তোলার কথা মাথায় আসে ট্যানের। সেখান থেকেই ওই মুরগি আকৃতির হোটেল তৈরির ভাবনাও আসে।
গত বছরের ১০ জুন নির্মাণকাজ শুরু হয়। নির্মাণকাজ ছ’মাসের মধ্যে শেষ হওয়ার কথা থাকলেও ওই অঞ্চলে ঘটে যাওয়া একের পর এক গ্রীষ্ণমণ্ডলীয় ঝড় এবং টাইফুনের কারণে বার বার বাধা পড়ে কাজে। শেষমেশ সেপ্টেম্বর মাসে নির্মাণকাজ শেষ হয়।
ক্যাম্পুয়েস্টোহান শহরে বিশ্বের বৃহত্তম মুরগির আকৃতির ভবনটি ইতিমধ্যেই স্থানীয়দের গর্বের বিষয় হয়ে উঠছে। গত দু’মাসে ওই হোটেলে থাকার জন্য পর্যটকের ভিড়ও বেড়েছে দেখার মতো।