ছবি: সংগৃহীত।
প্রায় এক যুগ আগে খুন হন পূর্ব মেদিনীপুরের নন্দকুমারের বাসিন্দা সিন্ধুবালা দাস। তার পর থেকে এত বছর কেটে গেলেও পুলিশ খুনিদের চিহ্নিতই করতে পারেনি। পুলিশের দেওয়া তদন্তের চূড়ান্ত রিপোর্ট একাধিক বার খারিজ করেছে নিম্ন আদালত। এক জন সন্দেহভাজনকে গ্রেফতার করলেও কোনও প্রমাণ না-মেলায় তিনি জামিন পান। গত ডিসেম্বর মাসে নিম্ন আদালতে ফের পুলিশ একটি চূড়ান্ত রিপোর্ট দেয় এবং তার ভিত্তিতেই স্থানীয় আদালত মামলাটি বন্ধ করে দিয়েছে। এর পরেই সিন্ধুবালার ছেলে নির্মলকুমার দাস মায়ের খুনের তদন্তের দাবি জানিয়ে হাইকোর্টের দ্বারস্থ হয়েছেন।
নির্মলবাবুর আইনজীবী পুনম বসু বলেন, “সিবিআই বা কোনও নিরপেক্ষ তদন্তকারী সংস্থাকে দিয়ে তদন্তের আর্জি জানিয়েছি আমরা। এত দিনে পুলিশ কার্যত কোনও তদন্ত করেনি। উল্টে বারবার ফাইনাল রিপোর্ট দিয়ে মামলা বন্ধ করতে বলেছে। একাধিক বার সেই রিপোর্ট নিম্ন আদালত খারিজ করলেও শেষমেশ তা গ্রহণ করেছে।”
পুনম জানান, ২০০৯ সালের ৭ অগস্ট ভোরে বাড়িতে নিজের ঘর থেকেই সিন্ধুবালার দেহ উদ্ধার করা হয়। তাঁর গায়ের গয়না লোপাট হয়ে যায়। সে দিন ভোরে নির্মলবাবুরা ঘুম থেকে উঠে দেখেন, দোতলায় তাঁদের ঘর বাইরে থেকে বন্ধ। অনেক কষ্টে দরজা খুলে নীচে এসে তাঁরা বৃদ্ধ মায়ের দেহ পড়ে থাকতে দেখেন। ময়নাতদন্তের রিপোর্টে জানানো হয়, শ্বাসরোধ করে খুন করা হয়েছে বৃদ্ধাকে। এর পরে ভারতীয় দণ্ডবিধির ৩০২ ও ৩৭৯ ধারায় মামলা দায়ের হয়েছিল। কিন্তু খুনিদের খোঁজ মেলেনি। গোড়া থেকেই নন্দকুমার থানার পুলিশি তদন্তের গতিবিধি নিয়ে সন্দেহ প্রকাশ করেছিলেন নির্মলবাবুরা।
পুনম আরও জানিয়েছেন, প্রথমেই অপরাধের কিনারা হয়নি বলে রিপোর্ট দিয়েছিল পুলিশ। কিন্তু আদালত তা গ্রহণ করেনি। পরে ২০১৪ সাল নাগাদ ফের এক বার রিপোর্ট দেয়। সে বারেও তা খারিজ করে নিম্ন আদালত। তখন এক বার কলকাতা হাইকোর্টে মামলা দায়ের করেন নির্মলবাবু। হাইকোর্ট পুলিশকে যথাযথ ও নিরপেক্ষ তদন্ত করতে বলে। এর পর পুলিশ সন্দেহভাজন হিসেবে এক প্রৌঢ়কে গ্রেফতার করে। কিন্তু কোনও প্রমাণ মেলে না। তিনি জামিনে ছাড়া পান এবং তার পরে মারাও যান। তার পর থেকে তদন্ত কার্যত বন্ধ ছিল। ২০২০ সালের ডিসেম্বরে পুলিশ ফের চূড়ান্ত রিপোর্ট দিলে নিম্ন আদালত তা গ্রহণ করে এবং মামলাটি বন্ধ করে দেয়।