Afghanistan Crisis

Afghanistan Crisis: ‘ভারতীয় জানার পরে ছেড়ে দেয় তালিবান’

বাড়ি ফিরে পাঁচ বছরের ছেলের ঘুমন্ত মুখের দিকে তাকিয়ে কেঁদে ফেলেছিলেন নদিয়ার কৃষ্ণনগরের অভিজিৎ ঘোষ!

Advertisement

নিজস্ব প্রতিবেদন

কলকাতা শেষ আপডেট: ২৪ অগস্ট ২০২১ ০৬:০৯
Share:

বাড়ি ফিরে স্ত্রী-পুত্রের সঙ্গে অভিজিৎ ঘোষ। ছবি: সুদীপ ভট্টাচার্য

বুকের কাঁপুনিটা পুরোপুরি যায়নি চন্দন নন্দীর। চোখ বন্ধ করলে এখনও ভেসে উঠছে অস্ত্র হাতে তালিবানের হুঙ্কার।

Advertisement

পূর্ব বর্ধমানের কাটোয়ার গাঁফুলিয়া গ্রামের বাসিন্দা চন্দনবাবু বছর পাঁচেক ধরে কাবুলে ডেনমার্ক ও নরওয়ের দূতাবাসে নিরাপত্তারক্ষীদের সুপারভাইজ়ার হিসেবে কাজ করছিলেন। রবিবার বিকেলে তিনি বিমানে দিল্লি পৌঁছেছেন।

সোমবার ফোনে সেখান থেকে চন্দনবাবু জানান, দূতাবাসের কর্মী আবাসনে আটকে পড়েছিলেন। তালিবানের জনা পনেরোর একটি দল সেখানে এসেছিল। তবে তখন কিছু করেনি। এর পরে দূতাবাসের তরফে তাঁদের দেশে ফেরানোর বন্দোবস্ত হয়। বিমানবন্দরে যাওয়ার সময় তালিবান একাধিক জায়গায় পথ আটকায়। চন্দনের কথায়, ‘‘কেন দেশ ছেড়ে পালাতে চাইছি, সেই প্রশ্ন করে কোনও-কোনও জায়গায় আমাদের মারতে গিয়েছিল তালিবান। তবে ভারতীয় জানার পরে ছেড়ে দেয়।’’ ছেলে দিল্লি পৌঁছেছে শুনে অবশেষে নিশ্চিন্ত হয়েছেন চন্দনের বাবা ক্ষুদিরাম নন্দী ও মা মঞ্জু নন্দী।

Advertisement

বাড়ি ফিরে পাঁচ বছরের ছেলের ঘুমন্ত মুখের দিকে তাকিয়ে কেঁদে ফেলেছিলেন নদিয়ার কৃষ্ণনগরের অভিজিৎ ঘোষ! বাড়ি ফিরে কোনও দিন যে তাকে দেখতে পারবেন সেই আশাটাই ছাড়তে বসেছিলেন। ছয় বছর আগে একটা সংস্থার মাধ্যমে রান্নার কাজ পেয়েছিলেন কাবুলে নেটোর সেনা ছাউনিতে। অভিজিৎবাবুর কথায়, ‘‘সেনা ছাউনির বাইরে যাওয়ার অনুমতি নেই। কিন্তু ভয়টা চেপে ধরতে থাকে। কোনও দিন আর বাড়ি ফিরতে পারব কি না ভেবে হাত-পা অবশ হয়ে গিয়েছিল।’’ ১৯ অগস্ট রাতে তাঁদের তুলে দেওয়া হয় মালবাহী বিমানে। তাঁর সঙ্গে আরও অনেকে সেই বিমানে পৌঁছন কাতার। সেখানে ভারতীয় দূতাবাসের লোকজন তাঁদের নিয়ে যান বিমানবন্দর-সংলগ্ন শিবিরে। সেখানে এক দিন থাকার পর ২১ অগস্ট কাতার থেকে বিমানে উঠে পর দিন পৌঁছে যান নয়াদিল্লি। সেখান থেকে রাতের ফ্লাইটে কলকাতা। তার পর গাড়িতে পৌঁছেছেন কৃষ্ণনগর।

তাহেরপুর শহরের ডি ব্লকের বাসিন্দা তাপস কুণ্ডু এবং এ ব্লকের লালবাহাদুর কুণ্ডু। চাকরিসূত্রে দু’জনেই ছিলেন আফগানিস্তানে। রবিবার গভীর রাতে দু’জনেই বাড়ি ফিরেছেন। চরম উৎকণ্ঠায় বেশ কয়েকটা দিন কাটানোর পর স্বস্তির নিঃশ্বাস ফেলেছে পরিবার। তবে তাহেরপুরের আরও কয়েক জন যুবক কর্মসূত্রে কাবুলে ছিলেন। তাঁরা এখনও ফেরেননি।

দু’বছর আগে আফগানিস্তানের কাবুলে আমেরিকান সেনা ছাউনিতে রান্নার কাজ নিয়ে গিয়েছিলেন তেহট্টের হাউলিয়ার বছর চল্লিশের পিটার মণ্ডল। আমেরিকান সেনাদের সাহায্যে দিন কয়েক আগেই কাতারে পৌঁছেছিলেন পিটাররা। সোমবার ভোরে সেখান থেকে বিমানে দিল্লিতে পৌঁছেছেন। দিল্লি থেকে ফোনে জানিয়েছেন, কাবুলের হামিদ কারজ়াই আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের পাশেই সেনা ছাউনিতে থাকতেন।

রবিবার গভীর রাতে রানাঘাট থানার জোশেফপাড়ার নিজের বাড়িতে ফিরেছে সুরজ ডমিনিক। তিনি কন্ট্রোল ম্যানেজমেন্টের কাজ করতেন কাবুলে। সোমবার তাঁদের বেগোপাড়ার বাড়িতে গেলে বাবা-মা জানিয়ে দেন, ছেলে খুবই ক্লান্ত। ঘুমোচ্ছে। কথা বলতে পারবেন না।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement