ইশাক আলির থেকে উদ্ধার হওয়ার সামগ্রী। ভোল পাল্টে এটিএম লুঠ করতেন বলে অভিযোগ বারাসতের বাসিন্দা (ইনসেটে) ইশাকের বিরুদ্ধে। —নিজস্ব চিত্র।
পরচুলা পরে ভোল পাল্টে অভিনব কায়দায় এটিএম লুঠ করতেন। তবে শেষরক্ষা হল না! নরেন্দ্রপুর থানা এলাকায় একাধিক এটিএম লুঠের পর পুলিশের জালে ধরা পড়ে গেলেন ইশাক আলি নামে এক যুবক। এ দাবি করেছে পুলিশ। তাদের দাবি, শুক্রবার বিকেলে এটিএম লুঠের অভিযোগে গ্রেফতারির পর জেরায় নিজের অপরাধ কবুল করেছেন ইশাক।
পুলিশ সূত্রে খবর, ৩১ বছরের ইশাক বারাসতের বাসিন্দা। তদন্তে নেমে শুক্রবার বিকেলে ফরতাবাদ এলাকা থেকে তাঁকে গ্রেফতার করা হয়। ইশাকের কাছ থেকে হয় পরচুলা, লোহার রড, চুম্বক, স্ক্রুড্রাইভার-সহ বিভিন্ন সামগ্রী উদ্ধার করা হয়েছে। শনিবার ধৃতকে বারুইপুর মহকুমা আদালতে তোলা হলে পুলিশি হেফাজতের নির্দেশ দিয়েছেন বিচারক।
স্থানীয় ও পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, সম্প্রতি বারুইপুর পুলিশ জেলার শহর এলাকায় বেশ কয়েকটি এটিএম থেকে টাকা লুঠের অভিযোগ উঠেছে। তবে এর পিছনে কে বা কারা রয়েছেন, তার সূত্র খুঁজে পাওয়া যাচ্ছিল না। শুক্রবার বিকেলে গড়িয়া এলাকার একাধিক এটিএম কাউন্টারের সামনে এক যুবককে ঘোরাঘুরি করতে দেখে সন্দেহ হয় পুলিশের। তাঁকে আটক করে জিজ্ঞাসাবাদ শুরু করতেই অভিনব কায়দায় এটিএম লুঠের কথা জানতে পারেন তদন্তকারীরা।
পুলিশের দাবি, জেরার মুখে ভেঙে পড়ে এটিএম লুঠের বিবরণ দিয়েছেন ইশাক। এটিএম কাউন্টারে টাকা বেরোনোর মুখে একটি লোহার রড লাগিয়ে রাখতেন তিনি। সে জন্য এটিএম থেকে টাকা তুলতে গিয়ে বিপত্তিতে পড়তেন গ্রাহকেরা। ওই কাউন্টারে কার্ড ঢোকালেই তার মুখে এসে টাকা আটকে যেত। টাকা না পেয়ে কোনও গ্রাহক বেরিয়ে যাওয়ার পর এটিএমে ঢুকে পড়তেন ইশাক। এর পর কাউন্টার থেকে ওই লোহার রডটি খুলে ফেলে সেখান থেকে টাকা বার করে নিতেন। বেশ কয়েক বছর ধরে এ ভাবেই এটিএমের টাকা লুঠ করছিলেন ইশাক। টাকমাথার ওই যুবক নিজের ভোল পাল্টানোর জন্য পরচুলারও ব্যবহার করতেন।
শনিবার সাংবাদিক সম্মেলন করে এ কায়দায় এটিএম লুঠের কথা জানান বারুইপুর পুলিশ জেলার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (জোনাল) ইন্দ্রজিৎ বসু। তিনি বলেন, ‘‘ধৃতকে জেরা করে বহু তথ্য পাওয়া গিয়েছে। সেগুলি খতিয়ে দেখে তদন্ত শুরু হয়েছে।’’ ধৃতকে নিজেদের হেফাজতে নিয়ে এ চক্রের সঙ্গে যুক্তদের সন্ধান পাওয়ার চেষ্টা করছেন তদন্তকারীরা।