প্রতীকী ছবি।
ঘরে ঘুমিয়ে চার ও পাঁচ বছরের দুই ভাইবোন। এক আত্মীয় ঘরের জানলা দিয়ে উঁকি মেরে দেখলেন, সেই ঘরেই সিলিং ফ্যানের সঙ্গে ঝুলছে তাদের মায়ের দেহ। তার ঘণ্টা দু’য়েক আগেই খবর এসেছিল, হাসপাতালে মারা গিয়েছেন মহিলার স্বামী।
শনিবার রাতে ঘটনাটি ঘটেছে উস্তির দেউলা তালপুকুর গ্রামে। পুলিশ জানিয়েছে, লকডাউনে কাজ হারিয়েছিলেন ওই যুবক। তারপর থেকে পরিবারটিতে প্রবল আর্থিক অনটন চলছিল বলে জানিয়েছেন প্রতিবেশীরা।
পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, ওই যুবক ডায়মন্ড হারবারের একটি শপিং মলে কাজ করতেন। উস্তির দেউলা স্টেশন থেকে ট্রেনে করে কর্মস্থলে যাতায়াত করতেন। লকডাউনের জেরে মল বন্ধ হয়ে যায়। মাসের পর মাস কাজ বন্ধ থাকায় সংসার আর চলছিল না।
পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রের খবর, দিন সাতেক আগে জ্বর, সর্দি-কাশি হয় তাঁর। টাকার অভাবে চিকিৎসা তেমন কিছু হয়নি। শনিবার রাতে শ্বাসকষ্ট শুরু হওয়ায় পরিবারের লোকজন তাঁকে ডায়মন্ড হারবার জেলা হাসপাতালে নিয়ে যান। সেখানে অবস্থার অবনতি হওযায় কলকাতায় ‘রেফার’ করা হয়েছিল। কিন্তু কিছুক্ষণের মধ্যেই মারা যান তিনি।
রাত ১০টা নাগাদ সে খবর জানতে পারেন স্ত্রী। রাত ১২টা নাগাদ পরিবারের এক সদস্য দোতলার একটি ঘরের জানলা দিয়ে দেখতে পান, ঘরের মধ্যেই গলায় কাপড়ের ফাঁস জড়ানো অবস্থায় ঝুলছে তাঁর দেহ। পাশে অঘোরে ঘুমিয়ে দুই শিশু।
পুলিশ এসে স্থানীয় গ্রামীণ হাসপাতালে নিয়ে গেলে চিকিৎসকেরা ওই তরুণীকে মৃত বলে ঘোষণা করেন। পরিবারের লোকজন ও প্রতিবেশীদের অনুমান, একদিকে আর্থিক অনটন, অন্য দিকে স্বামীর মৃত্যু সহ্য করতে না পেরে আত্মঘাতী হয়েছেন ওই বধূ।