যুবক খুনে ধৃত স্ত্রী। গ্রাফিক: আনন্দবাজার অনলাইন।
ভাড়াটে খুনি দিয়ে স্বামীকে হত্যার ছক কষেছিলেন স্ত্রীই। মদত ছিল তাঁর মায়েরও! স্ত্রী এবং তাঁর প্রেমিক মিলেই সুপারি কিলার ভাড়া করে হুগলির কানাগড়ের যুবককে খুন করিয়েছেন বলে জানতে পেরেছেন তদন্তকারীরা। পুলিশ সূত্রে খবর, ধৃত স্ত্রী ও শাশুড়িকে জেরা করে ওই তথ্য মিলেছে। তার ভিত্তিতে গ্রেফতার হয়েছেন স্ত্রীর প্রেমিক এবং তিন ভাড়াটে খুনিও। রবিবার তাঁদের চুঁচুড়া আদালতে হাজির করিয়ে নিজেদের হেফাজতে চেয়ে আবেদন করেছে পুলিশ।
গত বৃহস্পতিবার রাতে দেবানন্দপুর গ্রাম পঞ্চায়েতের কানাগড়ের ভাঙা মসজিদ এলাকায় খুন হন রমেশ মুদালিয়া। পরদিন ভোরে প্রাতর্ভ্রমণে বেরিয়ে এক মহিলা রমেশের রক্তাক্ত দেহ দেখতে পান। এর পর পুলিশ এসে দেহ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য পাঠায়। মৃতের শরীরে নানা জায়গায় ক্ষতিচিহ্ন ছিল। রমেশের দেহ উদ্ধার হওয়ার পর তাঁর সৎমা নাগরানি মুদালিয়া চুঁচুড়া থানায় অভিযোগ দায়ের করেন। তার ভিত্তিতে যুবকের স্ত্রী সারদা মুদালিয়া ওরফে ভারতী এবং সারদার মাকে গ্রেফতার করে পুলিশ। আদালত তাঁদের ১০ দিনের পুলিশি হেফাজতের নির্দেশ দিয়েছে।
পুলিশ সূত্রে খবর, ধৃতদের জেরা করে জানা গিয়েছে, সারদা ব্যান্ডেলের বাসিন্দা বিকাশ মেহালি নামে এক যুবকের সঙ্গে বিবাহ-বহির্ভূত সম্পর্কে জড়িয়ে পড়েছিলেন। এ নিয়ে প্রায়ই রমেশের সঙ্গে সারদার ঝগড়া হত। সারদার বিবাহ-বহির্ভূত সম্পর্কে মদত দিয়েছিলেন তাঁর মা-ও। পরকীয়া সম্পর্কের কথা জেনে যাওয়ায় রমেশকে খুনের ছক কষেন তাঁর স্ত্রী এবং স্ত্রীর প্রেমিক। সেই মতো ৭০ হাজার টাকা দিয়ে ভাড়া করা হয় তিন জনকে। এর পর গত বৃহস্পতিবার বিকাশই রমেশকে ডাকেন। সেখানেই ছিলেন ওই তিন ভাড়াটে খুনি পরীক্ষিত সোম ওরফে বাপি, অভিষেক রাজভর ওরফে আশিস এবং প্রসেনজিৎ বিশ্বাস ওরফে বাবু। সকলে মিলে মদ্যপান করেন। এর পর চার জনে মিলে রমেশকে কুপিয়ে খুন করেন বলে অভিযোগ। জেরায় ওই তথ্য উঠে আসার পরেই বিকাশ, বাপি, আশিস এবং বাবুকে গ্রেফতার করে পুলিশ।
চন্দননগর পুলিশের এক আধিকারিক বলেন, ‘‘বিবাহ-বহির্ভূত সম্পর্ক মেনে নিতে পারছিলেন না রমেশ। তাই স্ত্রীর সঙ্গে অশান্তি হত। স্ত্রী এবং তাঁর প্রেমিক মিলেই খুনের পরিকল্পনা করেন। টাকা দিয়ে খুনিদের ভাড়া করা হয়েছিল।’’