সুরেন্দ্র সিংহ অহলুওয়ালিয়া।— ফাইল চিত্র।
পঞ্চাশ দিন ধরে ধর্মঘট চলছে পাহাড়ে। এ বারে তা তুলে নিতে সরাসরি গোর্খা নেতৃত্বের কাছে আবেদন জানালেন কেন্দ্রীয় মন্ত্রী তথা স্থানীয় সাংসদ সুরেন্দ্র সিংহ অহলুওয়ালিয়া। তাৎপর্যপূর্ণ ভাবে এই প্রথম কেন্দ্রের কোনও প্রতিনিধি মোর্চাকে ধর্মঘট তুলে নেওয়ার জন্য সরাসরি বার্তা দিলেন। বৃহস্পতিবার গোর্খা মুভমেন্ট কোঅর্ডিনেশন কমিটির (জিএমসিসি) নেতাদের সঙ্গে বৈঠকে ওই আবেদন জানিয়ে ত্রিপাক্ষিক বৈঠকের পক্ষেও সওয়াল করেন তিনি। এ নিয়ে এ দিন কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র মন্ত্রক জানিয়েছে, তারাও বৈঠকের পক্ষে। কিন্তু গোর্খা বা রাজ্য সরকারের কাছ থেকে ত্রিপাক্ষিক বৈঠকের প্রশ্নে সরাসরি কোনও প্রস্তাব এখনও আসেনি।
এ দিন সংসদে গিয়ে অহলুওয়ালিয়ার সঙ্গে দেখা করেন জিএমসিসি-র নেতারা। বৈঠকের পরে গোর্খা নেতাদের পাশে বসিয়ে অহলুওয়ালিয়া বলেন, ‘‘সাংসদ হিসেবে মুখ্যমন্ত্রীর কাছে আমার অনুরোধ, গুলি-বন্দুক দিয়ে এর সমাধান হবে না। রাজনৈতিক আলোচনা চাই।’’ অতীতে যে ভাবে কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীরা রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী ও গোর্খা নেতৃত্বের সঙ্গে ত্রিপাক্ষিক বৈঠক করতেন, সেই উদাহরণ দিয়ে তিনি বলেন, ‘‘ঠিক সে ভাবেই মমতা ও বিমল গুরুঙ্গকে নিয়ে ত্রিপাক্ষিক বৈঠকে বসুন রাজনাথ সিংহও।’’ এ কথা শুনে রাজ্যের পর্যটনমন্ত্রী গৌতম দেব বলেন, ‘‘আমাদের নেত্রী তো কবে থেকে আলোচনার কথা বলছেন। ওঁর (অহলুওয়ালিয়ার) বিলম্বে বোধোদয় হল।’’
আরও পড়ুন: প্রতিবাদ করে প্রহৃত
ধর্মঘটে পাহাড়ের জনজীবন বিপর্যস্ত। এই অবস্থায় সব মহল থেকেই চাপ বাড়ছে মোর্চার উপরে। এ দিনও যেমন চা শ্রমিকদের স্বার্থরক্ষায় সংশ্লিষ্ট ট্রেড ইউনিয়নগুলি দাবি তুলল, মোর্চার সঙ্গে আলোচনায় বসুক রাজ্য। এদের একটি প্রতিনিধিদল পরিষদীয় মন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায় এবং বাম পরিষদীয় নেতা সুজন চক্রবর্তীর সঙ্গে দেখা করে। তাদের বক্তব্য, এক মাসেরও বেশি সময় চা বাগানগুলি বন্ধ। ফলে শ্রমিকদের অবস্থাও খুবই খারাপ। তাদের বাঁচাতে আলোচনা ছাড়া পথ নেই।
অহলুওয়ালিয়াও একই ভাবে পাহাড়ের মানুষের কাছে ধর্মঘট তুলে নেওয়ার আর্জি জানান। একই সঙ্গে মুখ্যমন্ত্রীর প্রতি তাঁর আবেদন, ‘‘মমতার হৃদয়ে মমতা আছে। তাই পুলিশের গুলিতে গোর্খা-মৃত্যুর ঘটনা নিয়ে তদন্ত করুন। অবিলম্বে চালু করা হোক ইন্টারনেট পরিষেবা।’’
মোর্চা সূত্রের খবর, আহলুওয়ালিয়ার প্রস্তাব নিয়ে আজ, শুক্রবার দলে আলোচনার পরে অবস্থান ঘোষণা করা হতে পারে। মোর্চা নেতা বিনয় তামাঙ্গ বলেন, ‘‘আমরা সরকারি ভাবে কিছু শুনিনি। তাই এখনই মন্তব্য করতে পারব না।’’