প্রতীকী ছবি।
দক্ষিণ কলকাতার অভিজাত ক্লাবে এক গ্লাস ওয়াইন চেয়েছিলেন এক বিচারপতি। ক্লাবকর্তারা তাঁকে জানান, আবগারি আইন অনুযায়ী ওয়াইন গ্লাসে দেওয়া যায় না। তাঁকে এক বোতল ওয়াইন কিনতে হবে। এ কথা শুনে যারপরনাই বিস্মিত হন ওই বিচারপতি। নিজের বিরক্তির কথা নবান্নেও জানিয়ে দিয়েছিলেন তিনি।
এই পরিপ্রেক্ষিতে বদলে গিয়েছে আবগারি বিধি। রাজ্যের সব বার-রেস্তরাঁয় এখন থেকে গ্লাসেই পাওয়া যাবে ওয়াইন। তবে চাইলে ওয়াইনের বোতল কিনতেও বাধা নেই।
আবগারি দফতরের খবর, বারের লাইসেন্স দেওয়ার শর্তেই বলা ছিল, হুইস্কি বা রাম পেগের হিসেবে বিক্রি হলেও বিয়ার আর ওয়াইন গ্লাসে দেওয়া যাবে না। বিয়ার আর ওয়াইন বোতল হিসেবেই কিনতে হবে। আবগারি দফতরের যুক্তি, ওয়াইনের বোতল এক বার খুলে ফেললে তা আর রেখে দেওয়া যায় না। রাখলে নষ্ট হয়ে যাওয়ার আশঙ্কা থাকে। সেই জন্য গ্লাসে ওয়াইন বিক্রির অনুমতি দেওয়া হয়নি। কিন্তু এখন অনেক রাজ্যেই গ্লাসে ওয়াইন বিক্রি হচ্ছে। বিদেশেও হোটেল, বার, ক্লাবে গ্লাসেই ওয়াইন পাওয়া যায়। সেই জন্য এ বার থেকে রাজ্যের সব বারে গ্লাসেও ওয়াইন কিনতে পারবেন ক্রেতারা।
আরও পড়ুন: বেতন-নোটিস কেন, জানতে চায় মন্ত্রক
এর পাশাপাশি বার কাম রেস্তরাঁয় সারা রাত খাবার পরিবেশনের অনুমতিও দেওয়া হয়েছে। আবগারি-কর্তাদের একাংশ জানাচ্ছেন, বার লাইসেন্সের জন্য সরকারের কাছে রেস্তরাঁর ‘ব্লু প্রিন্ট’ বা নীল নকশা জমা দিতে হয়। তাতে বলতে হয়, রেস্তরাঁর কোন অংশে মদ, কোন অংশে খাবার এবং কোন অংশে মদ ও খাবার দুই-ই পরিবেশন করা হবে। সরকার তা দেখে নির্দিষ্ট স্থানকে বার ঘোষণা করে এবং মদ পরিবেশনের অনুমতি দেয়। আবগারি দফতরের যুক্তি ছিল, যদি নির্দিষ্ট একটি এলাকাকে ‘বার’ ঘোষণা করে মদ পরিবেশনের অনুমতি দেওয়া হয়, সময়সীমা পেরিয়ে গেলে সেখানে আর কোনও কিছুই করার কথা নয়। বার ঘোষিত অংশটুকু বাদ দিয়ে অন্যত্র খাবার দেওয়া যেত।
কিন্তু বার-মালিকেরা জানান, বারের এলাকা ছোট হওয়ায় খাবার ও মদ একসঙ্গে পরিবেশন করা হয়। রাত ১২টায় মদ বিক্রি বন্ধের সঙ্গে সঙ্গে যদি খাবার দেওয়াও বন্ধ হয়ে যায়, ক্রেতা ও বিক্রেতা উভয়েই সমস্যায় পড়েন। তাই মদ বিক্রি বন্ধ হলেও খাবার পরিবেশনে সায় মিলেছে।