—প্রতীকী ছবি।
লোকসভা নির্বাচনে রাজ্যে তৃণমূল কংগ্রেসের সঙ্গে কংগ্রেসের জোট হবে কি না, সেই প্রশ্নে নানা চর্চা চলছে। প্রদেশ কংগ্রেসের অন্দরেও একাধিক মত উঠে আসছে। এই পরিস্থিতিতে তৃণমূলের প্রশ্নে কংগ্রেসের অবস্থান স্পষ্ট করার জন্য অপেক্ষা করতে চায় সিপিএম। দলের রাজ্য কমিটির বৈঠকে এই বার্তা দিয়েই সিপিএম জানিয়ে রাখল, কংগ্রেসের মাধ্যমে তৃণমূলের সঙ্গে পরোক্ষ কোনও ‘সংস্রব’ও তারা রাখতে চায় না।
আলিমুদ্দিন স্ট্রিটে বুধবার থেকে সিপিএমের দু’দিনের রাজ্য কমিটির বৈঠক শুরু হয়েছে লোকসভা নির্বাচনের প্রস্তুতি ও জানুয়ারিতে ব্রিগেডে যুব সমাবেশের কথা মাথায় রেখে। সূত্রের খবর, বৈঠকের শুরুতেই সিপিএমের রাজ্য সম্পাদক মহম্মদ সেলিম কংগ্রেসকে নিয়ে দলের অবস্থান ব্যাখ্যা করে দিয়েছেন। বৈঠকে প্রারম্ভিক ভাষণে তিনি বলেছেন, রাজ্যে বিজেপি ও তৃণমূলের বিরুদ্ধে লড়াইয়ে সকলকে সঙ্গে নিয়ে চলাই সিপিএমের রাজনৈতিক লাইন। তাঁরা অবশ্যই কংগ্রেসের সঙ্গে সমঝোতা চান। কিন্তু কংগ্রেসকে ঠিক করতে হবে, তারা কী চায়। সেই সঙ্গেই সেলিম পরিষ্কার করে দিয়েছেন, কংগ্রেস যদি কোনও ভাবে তৃণমূলের সঙ্গে সমঝোতা করে আবার অন্য দিকে বামেদেরও সঙ্গে চায়, সেই পথে তাঁরা যাবেন না। কোনও ভাবেই তৃণমূলের সঙ্গে কোনও ‘সংস্রব’ চলবে না বলে বুঝিয়ে দিয়েছেন সিপিএমের রাজ্য সম্পাদক।
দলের রাজ্য সম্পাদক শুরুতেই অবস্থান ব্যাখ্যা করে দেওয়ার পরে প্রথম দিনের বৈঠকে কংগ্রেস নিয়ে সিপিএমের জেলার নেতারা আর আলোচনা করেননি। তবে ‘ইন্ডিয়া’ জোটের প্রসঙ্গ ফের বৈঠকে উঠেছিল বলে দলীয় সূত্রের খবর। কিছু জেলার নেতাদের বক্তব্য, তৃণমূলের সঙ্গে ‘সংস্রব’ থাকবে না বলে স্পষ্ট করে দিচ্ছেন দলীয় নেতৃত্ব। আবার সর্বভারতীয় স্তরে ‘ইন্ডিয়া’র বৈঠকে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের পাশে সীতারাম ইয়েচুরিকে দেখা যাচ্ছে। এর ফলে দলের নিচু তলায় এবং জনমানসে কিছু ‘বিভ্রান্তি’ থেকেই যাচ্ছে। লোকসভা ভোটের আগে ডিওয়াইএফআই-এর ‘ইনসাফ যাত্রা’ রাজ্য জুড়ে বাম সংগঠনে নতুন উৎসাহ সঞ্চার করেছে বলে অবশ্য দাবি করেছেন প্রায় সব জেলার নেতারাই।
এরই মধ্যে জোট-প্রশ্নে ‘বিভ্রান্তি’ বাড়িয়েছে কংগ্রেস সাংসদ মালদহ দক্ষিণের কংগ্রেস সাংসদ আবু হাসেম (ডালু) খান চৌধুরীর মন্তব্য। ডালু দাবি করেছেন, ‘‘মালদহ দক্ষিণ এবং বহরমপুর আসন আমাদের (কংগ্রেস) ছেড়ে দিয়েছেন বলে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় জানিয়েছেন। তবে আমাদের আরও কিছু দাবি রয়েছে। সেগুলি নিয়ে আলোচনা চলছে।’’ প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি অধীর চৌধুরী অবশ্য বলেছেন, তাঁর এই ব্যাপারে কিছুই জানা নেই। ডালুবাবুর সঙ্গে যদি তৃণমূল নেত্রী বা নেতৃত্বের কথা হয়ে থাকে, তা হলে তিনিই বলতে পারবেন! এই প্রসঙ্গে সিপিএমের কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য সুজন চক্রবর্তীর বক্তব্য, ‘‘কংগ্রেস সাংসদ কী বলেছেন, সেই ব্যাপারে ওঁজের দলের নেতৃত্ব বলতে পারবেন। তবে ডালুবাবুকে মনে করিয়ে দিতে চাই, যে দু’টি আসনের কথা উনি বলেছেন, সেই দুই আসনেই গত বার বামেরা সমর্থন করেছিল এবং কংগ্রেস জিতেছিল!’’ আর বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারীর মন্তব্য, ‘‘বেল পাকলে কাকের কী! ওরা যা-ই করুক, ওদের বিষয়। ওই দু’টি আসনে বিজেপি জিতবে।’’