অনুব্রত মণ্ডল এবং তাঁর এককালের দেহরক্ষী সহগল হোসেন। —ফাইল চিত্র।
এ বার গরু পাচার মামলা দিল্লিতে নিয়ে যাওয়ার তোড়জোড় শুরু করল ইডি। আসানসোলের বিশেষ সিবিআই আদালতে কেন্দ্রীয় সংস্থা মামলা স্থানান্তরের আবেদন করার পরেই জল্পনা তৈরি হয়েছে, তা হলে কি অনুব্রত মণ্ডল এবং তাঁর এককালের দেহরক্ষী সহগল হোসেনের বিচারপ্রক্রিয়া দিল্লির আদালতে হবে?
শুক্রবার আসানসোলের সিবিআই আদালতে গরু পাচার মামলা স্থানান্তরের আবেদন করেছে ইডি। কেন্দ্রীয় সংস্থার আর্জি, তাদের এবং সিবিআইয়ের করা মামলাটি এক জায়গায় এনে দিল্লির রাউস অ্যাভিনিউ আদালতে স্থানান্তরিত করা হোক। সেখানেই চলুক মামলার বিচারপ্রক্রিয়া। ইডির এই আবেদনে সাড়া দিয়ে বিচারক রাজেশ চক্রবর্তী আগামী ১৯ অগস্ট পরবর্তী শুনানির দিন ধার্য করেছেন।
এর আগে কলকাতা হাই কোর্টেও এই বিষয়টি উত্থাপিত হয়েছে। সহগলের জামিনের আর্জির শুনানিতে বিচারপতি জয়মাল্য বাগচী ইডির তদন্ত সম্পর্কে জানতে চেয়েছিলেন। বিচারপতি প্রশ্ন করেছিলেন, ‘‘ইডিকে তো পার্টি করা হয়েছে। ইডি কি গরু পাচার মামলায় কগনিজেন্স আনছে?’’ তার জবাবে ইডির আইনজীবী উচ্চ আদালতে জানান, তারা ইতিমধ্যেই দিল্লির আদালতে আবেদন করেছে। কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থার একটি সূত্রে খবর, সম্প্রতি দিল্লির আদালত সেই আবেদনে সাড়াও দিয়েছে। যার অর্থ, গরু পাচার মামলা দিল্লির আদালতে নিয়ে আসায় সম্মতি মিলেছে। এ বার দরকার আসানসোলের সিবিআই আদালতের ছাড়পত্র। ইডির সূত্রেই খবর, সেই মতোই আসানসোলের আদালতে শুক্রবার মামলা স্থানান্তরের আবেদন করা হয়েছে।
গরু পাচার মামলায় সিবিআই এবং ইডির হাতে গ্রেফতার হয়ে এখন দিল্লির তিহাড় জেলে বন্দি অনুব্রত এবং সহগল। তিহাড়ে রয়েছেন ওই মামলায় অন্যতম অভিযুক্ত এনামুল হক এবং ধৃত বিএসএফ কমান্ডান্ট সতীশ কুমার। আইনজীবীদের একাংশের মতে, আসানসোলের আদালত যদি মামলা দিল্লিতে নিয়ে যাওয়ার অনুমতি দেন, তা হলে অনুব্রত, সহগলদের বিচারপ্রক্রিয়া সেখানেই হওয়ার কথা। তার ফলে যত সাক্ষী রয়েছেন, তাঁদের সকলকেই দিল্লি গিয়ে সাক্ষ্য দিতে হবে।
ইডির আবেদনে আপত্তি জানানো হবে বলে জানিয়েছেন অনুব্রতের আইনজীবী সোমনাথ চট্টরাজ। তিনি আনন্দবাজার অনলাইনকে বলেন, ‘‘আমরা আপত্তি জানাব। তার কারণ, এই মামলা দিল্লিতে চলে গেলে সাক্ষীদের দিল্লিতে যেতে হবে সাক্ষ্য দিতে। সমস্ত নথিও দিল্লিতে নিয়ে যেতে হবে। তাই আমরা আপত্তি জানাব। সরকার মনে করলে আসানসোল বিশেষ সিবিআই আদালতকে ইডির বিশেষ আদালত হিসেবেও ব্যবহার করতে পারে। যদি তাই হয়, তা হলেই সমস্যার সমাধান হয়ে যাবে অনেকটা। এখন দেখার আসানসোলের বিচারক কী রায় দেন বা সরকার কী পদক্ষেপ করে।’’