পার্থ চট্টোপাধ্যায়-সহ জীবনকৃষ্ণ সাহা ও মানিক ভট্টাচার্যের রাজ্যসভা নির্বাচনে ভোটদান নিয়ে প্রশ্ন রয়েছে। ফাইল চিত্র।
আগামী ১৪ জুলাই পশ্চিমবঙ্গ বিধানসভায় রাজ্যসভার ভোট। সেই ভোটে অংশ নিতে পারবেন তৃণমূলের তিন জেলবন্দি বিধায়ক? ভোট ঘোষণার পর থেকেই এমন প্রশ্ন ঘুরপাক খাচ্ছিল রাজনীতির কারবারিদের বৃত্তে। আর সোমবার তৃণমূলের ছ’জন প্রার্থীর নাম ঘোষণার পরেই সেই প্রশ্নই ঢুকে পড়েছে তৃণমূলের অন্দরমহলেও।
সোমবার প্রার্থীদের নাম ঘোষণার পরেই সেই বিধানসভায় প্রার্থীদের মনোনয়ন সংক্রান্ত কাজ চূড়ান্ত করতে প্রস্তুতি শুরু হয়। সেই ফাঁকেই তৃণমূলের এক প্রবীণ বিধায়ক আচমকাই প্রশ্ন তোলেন, পার্থ এবং আর যে দু’জন বিধায়ক জেলে বন্দি রয়েছেন, তাঁরা কি কোনও ভাবে ভোটদান করতে পারবেন? এমনই প্রশ্নের উত্তর পেতে ভোট সংক্রান্ত বিষয়ে দেশের আইন ঘাঁটার কাজ শুরু করেন উপস্থিত তৃণমূল নেতারা। সেখানেই দেখা যায়, সতর্কতামূলক (প্রিভেন্টিভ) গ্রেফতারি ছাড়া জেলবন্দির ভোটাধিকার নেই। তাই তাঁরা নিশ্চিত হন, যে এ বারের রাজ্যসভা ভোটে তৃণমূলের প্রাক্তন মহাসচিব পার্থ চট্টোপাধ্যায়, পলাশীপাড়ার বিধায়ক মানিক ভট্টাচার্য ও বড়ঞার বিধায়ক জীবনকৃষ্ণ সাহা অংশ নিতে পারবেন না।
যদিও, তৃণমূলের এক প্রবীণ বিধায়ক জানান, জেলবন্দি বিধায়করা চাইলে নিজেরা আদালতে আবেদন করতেই পারেন। এ ক্ষেত্রে দল কোনও ভাবেই তাঁদের ভোটদানের জন্য আবেদন জানাবে না। অতীতে মহারাষ্ট্র ও আরও একটি রাজ্যে জেলবন্দি বিধায়করা রাজ্যসভা ভোটে অংশ নিতে চেয়ে আবেদন করলেও, তা খারিজ হয়ে গিয়েছিল। সেই অভিজ্ঞতার নিরিখেই তৃণমূল নেতৃত্ব নিশ্চিত, আবেদন করলেও জেলবন্দি বিধায়করা ভোটদানের সুযোগ পাবেন না।
এমনিতেই এ বারের রাজ্যসভা নির্বাচনে পশ্চিমবঙ্গে ভোট হওয়ার সম্ভাবনাই কম। কারণ, যে ছ’টি আসনে ভোটদান হবে তার পাঁচটিতে তৃণমূলের জয় নিশ্চিত। সেই পাঁচ আসনেই প্রার্থীদের নাম ঘোষণা করে দিয়েছে শাসকদল। আর একটি আসন জেতার মতো বিধায়ক সংখ্যা রয়েছে বিজেপির। তাঁরা অবশ্য এখনও প্রার্থীর নাম ঘোষণা করেনি। বিজেপি যদি দু’জন প্রার্থীর নাম ঘোষণা করে, তবেই নির্বাচন হবে। নচেৎ নয়। শাসক শিবিরও ধরেই নিচ্ছে, বিজেপি কেবল নিশ্চিত একটি আসনেই প্রার্থী দেবে। তাই ভোট হবে না। আর যে একটি মাত্র আসনে উপনির্বাচনে হবে সেখানেও প্রার্থীর নাম ঘোষণা করে দিয়েছে তৃণমূল। ওই আসনেও যে বিজেপি প্রার্থী দেবে না সে বিষয়ে নিশ্চিত তৃণমূল। তাই ভোট না হলে জেলবন্দি বিধায়কদের ভোটদানের প্রশ্নও উঠবে না বলেই স্বস্তি তৃণমূল শিবিরে।