৩ নম্বর পদ্মপুকুরে জ্বলছে আলেয়া। নিজস্ব চিত্র।
সন্ধ্যা নামলেই জনতার ঢল নামছে হুগলির রিষড়া পুরসভার ২০ নম্বর ওয়ার্ডে। কাম, সেখানকার ৩ নম্বর পদ্মপুকুরে দেখা মিলছে আলেয়ার। আর সেই আলোক-দর্শনে উৎসাহীদের ভিড় সামলাতে হিমশিম খেতে হচ্ছে পুলিশকে।
আলেয়ার উপস্থিতির জেরে বিজ্ঞানের পাশাপাশি উঠে আসছে ‘মাহাত্ম্যের ব্যাখ্যাও’। স্থানীয় বাসিন্দাদের একাংশ জানাচ্ছেন, বহু পুরনো ওই পদ্মপুকুরে নানা দেব-দেবীর বিসর্জন হয়। তাই তাঁদের বিশ্বাস, ঈশ্বরের অসীম কৃপাতেই ওই পুকুর থেকে দিব্যজ্যোতির আগমন হয়েছে।
এলাকার বাসিন্দা ছোটন সরকার মঙ্গলবার বলেন, ‘‘পুকুরের মাঝে একটা আলো জ্বলতে দেখা যায়। খবর ছড়িয়ে পড়তে অনেকেই দেখতে এসেছিলেন। কয়েক জন জলে নেমে জল ঘুলিয়ে দেয়। এর পর কিছু ক্ষণ আর আলো দেখা যায়নি। কিন্তু ঘণ্টা খানেক পর ফের আলো জ্বলে ওঠে। পূর্বপুরুষদের মুখে শুনেছি ঠাকুরের বাসনকোসন উঠত পুকুর থেকে। কী থেকে এই আলো জ্বলছে বোঝা যাচ্ছে না।’’
যদিও বিজ্ঞানমনস্কদের কাছে পুকুরে আলো দেখার সঙ্গে কোনও অলৌকিক কিংবা ভৌতিক ঘটনার মিল নেই। রিষড়া বিজ্ঞান ইন্সটিটিউটের সদস্য রথীন শীল বলেন, ‘‘এই ঘটনার কারণ অলৌকিক অথবা ভৌতিক নয়। পুকুরে রাসায়নিক কোনও বিক্রিয়ার ফলেই আলোর ছটা বেরিয়ে আসতে পারে।
তিনি জানান, অনেক সময় প্রাচীন পুকুর দীর্ঘদিন সংস্কার না হলে পাঁক কিংবা পচে যাওয়া গাছের পাতা অথবা আবর্জনা থেকে বেরনো মিথেন গ্যাস বায়ুর সংস্পর্শে এসে জ্বলে যায়। মিথেন গ্যাস বেশি পরিমাণে তৈরি হলে জলের বাইরে বেরিয়ে আসতে পারে। আবার অনেক সময় জলের উপরের স্তরে বাতাসের সংস্পর্শে তা জ্বলে উঠতে পারে। যাকে বিজ্ঞানের ভাষায় আলেয়া বলা হয়। রথীনের দাবি, রিষড়ার ৩ নম্বর পদ্মপুকুরেও সেই আলেয়ার দেখা মিলেছে।