(বাঁ দিকে) দেব এবং জুন মালিয়া (ডান দিকে)। —ফাইল চিত্র।
পশ্চিম মেদিনীপুরে লোকসভার আসন দু’টি— মেদিনীপুর এবং ঘাটাল। ঘাটালের সাংসদ দেব (দীপক অধিকারী)। প্রশ্ন উঠেছে, অন্যটিতেও কি এ বারে তৃণমূলের কোনও তারকা মুখ দেখা যাবে? অর্থাৎ, দুই কেন্দ্রেই তারকা? বুধবার কালীঘাটে জেলা নেতাদের সঙ্গে তৃণমূল নেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের বৈঠকের পরে এই নিয়েই চর্চা জেলা তৃণমূলে। জেলা তৃণমূলের এক প্রবীণ নেতার কথায়, ‘‘বৈঠকের নির্যাস কার্যত দু’টি। এক, ভোটের আগে দলীয় সংগঠনের রাশ দিদি যে নিজের হাতে তুলে নিয়েছেন, সেটা বোঝানো। দুই, প্রার্থী তালিকা নিয়ে স্পষ্ট ইঙ্গিত দেওয়া।’’
২০১৪-র লোকসভা ভোটে জনপ্রিয় অভিনেতা দেবকে ঘাটালে প্রার্থী করে চমক দেন মমতা। ২০১৯-এ ফের দেব ঘাটাল থেকে জেতেন। বর্তমানে মেদিনীপুরের বিধায়ক অভিনেত্রী জুন ২০২১-এ প্রথম প্রার্থী হয়েই জেতেন। ঘাটালের প্রাক্তন বিধায়ক শঙ্কর দোলুইয়ের সঙ্গে দেবের আর মেদিনীপুরে দলের জেলা সভাপতি সুজয় হাজরার সঙ্গে ‘বিরোধ’ রয়েছে জুনের। জানা যাচ্ছে, শঙ্কর, সুজয়দের মমতা স্পষ্ট বলেছেন, ‘ঝগড়া থাকলে মেটাবে।’ জেলা তৃণমূলের এক প্রবীণ নেতা মানছেন, ‘‘বৈঠকে দেব ও জুনের প্রতি দিদি নরম ছিলেন। অনেক নরম। সেখানে শঙ্কর, সুজয়ের প্রতি দিদি গরম ছিলেন। ঘাটালে দিদি যে দেবকেই প্রার্থী করবেন, আর মেদিনীপুরে প্রার্থী হওয়ার দৌড়ে জুন এগিয়ে থাকবেন, সেই ইঙ্গিত মিলেছে।’’ বৈঠকে হাজির তৃণমূলের রাজ্য সম্পাদক প্রদ্যোত ঘোষ, আশিস চক্রবর্তীরা শুধু বলছেন, ‘‘লোকসভার প্রার্থী ঠিক করবেন দলনেত্রী। তাঁর নির্দেশই চূড়ান্ত।’’
শোনা যাচ্ছিল, দেব আর প্রার্থী হতে ইচ্ছুক নন। এর পিছনে শঙ্করের ‘গ্রুপবাজিই’ দায়ী, বৈঠকে বুঝিয়ে মমতার বার্তা, দেব ঝগড়া পছন্দ করেন না। তাই হয়তো প্রার্থী হতে চাইছেন না। নেত্রীর নির্দেশ থাকলে তিনিও ফের প্রার্থী হতে প্রস্তুত, ইঙ্গিত দিয়েছেন দেব। জুনেরও প্রশংসা করে মমতার বার্তা, তাঁকে আরও ‘উঁচু জায়গায়’ নিয়ে যাওয়ার ইচ্ছে আছে। এতেই জুনের মেদিনীপুরের প্রার্থী হওয়া নিয়ে জল্পনা শুরু হয়। অন্য একটি মত আবার বলছে, নেত্রী চাইলে জুন রাজ্যে মন্ত্রীও হতে পারেন। জুন নিজে অবশ্য বলছেন, ‘‘দল থেকে দিদি বা অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়, কেউই এখনও কিছু বলেননি এ নিয়ে। কে প্রার্থী হবেন, তা দল ঠিক করবে।’’ তবে বিজেপির রাজ্য নেতা তুষার মুখোপাধ্যায় বলছেন, ‘‘বিজেপি পশ্চিম মেদিনীপুরের দু’টি আসনেই জিতবে।’’