রাজু ঝা। ফাইল চিত্র।
ঘটনা পূর্ব বর্ধমানের শক্তিগড়ে। খুন হলেন পশ্চিম বর্ধমানের কয়লা কারবারি। ঘটনার পরেই বেপাত্তা হয়ে গেলেন তাঁর সঙ্গে গাড়িতে থাকা বীরভূমের গরু কারবারি। আততায়ীরা এসেছিল ভিন্ রাজ্য থেকে, ধারণা তদন্তকারীদের। রাজু ঝা খুনের ঘটনার বিস্তৃতি যেখানে এতটা, সেখানে তদন্তভার এখনও কেন শুধু পূর্ব বর্ধমান জেলা পুলিশের উপরেই রয়েছে, প্রশ্ন উঠছে নানা মহল থেকে। তিনটি দিন কেটে যাওয়ার পরেও যেখানে কাউকে গ্রেফতার করা যায়নি, সেখানে সিআইডি তদন্তের নির্দেশ কেন দেওয়া হচ্ছে না, প্রশ্ন তুলেছেন বিরোধীরা।
মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় এ দিন দিঘায় রাজুর বিজেপি-যোগকে নিশানা করে বলেন, ‘‘কয়লা মাফিয়ার কেন মৃত্যু হল? কোন পার্টিকে সাহায্য করত? মুখ খুলুন। তাঁর সঙ্গে হোটেলে কারা কারা ছিলেন? কয়লা মাফিয়া কাদের টাকা দিয়েছে?’’ রাজ্যের বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী পাল্টা প্রশ্ন তুলেছেন তদন্ত নিয়ে। তাঁর দাবি, ‘‘কিছু তো হবে না। মুখ্যমন্ত্রী বা ভাইপো এখনও এডিজি-সিআইডি রাজাশেখরনকে বলেননি, তাঁরা চান হত্যাকারীরা ধরা পড়ুক, ঘটনার সঠিক তদন্ত হোক। এই জন্যই তো বলি, এটা পুরোপুরি প্রাইভেট কোম্পানি। দুই মালিক না বললে কেউ কিছু করবে না!’’ প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি অধীর চৌধুরীরও বক্তব্য, ‘‘তিন দিন পরেও খুনের তদন্তে কোনও অগ্রগতি নেই!’’ সিপিএমের কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য সুজন চক্রবর্তীর দাবি, গোটা বিষয়টির মধ্যে চক্রান্তের গন্ধ রয়েছে।
তদন্ত কত দূর? পুলিশ জেনেছে, শনিবার কলকাতা পৌঁছে একটি বড় হোটেলে থাকার কথা ছিল রাজুদের। আততায়ীদের নীল গাড়িটি রাজুদের গাড়ির আগে শক্তিগড়ে পৌঁছে কিছুটা এগিয়ে গিয়েছিল। তার পরে ঘুরে আসে। যে গাড়িতে রাজু খুন হন ও আততায়ীদের গাড়িটি থেকে এ দিন নমুনা সংগ্রহ করে ফরেন্সিক দল। রাজুর সঙ্গী ব্রতীন মুখোপাধ্যায় ও গাড়ি চালক নুর হোসেনের সঙ্গে কথা বলে দুই আততায়ীর যে ছবি আঁকানো হয়েছে, তা বিভিন্ন থানা ও ভিন্ রাজ্যের পুলিশের কাছে পাঠানো হচ্ছে। সোমবার রাতেই ব্রতীন ও নুরকে ছেড়ে দেয় পুলিশ।
পুলিশ সূত্রে খবর, আততায়ীদের খোঁজে ভিন্ রাজ্যে যাওয়া পুলিশের দল কার্যত খালি হাতে ফিরে এসেছে। কেন এখনও কাউকে গ্রেফতার করা সম্ভব হল না? পুলিশের কয়েকটি সূত্রের দাবি, রাজু খুনের পিছনে অনেক কারণ থাকতে পারে। । কয়েকটি সূত্রের দাবি, বীরভূমের বিভিন্ন বালিঘাট বেনামে দখল করেছিলেন রাজু। গরু পাচার মামলায় অন্যতম অভিযুক্ত, ইলামবাজারের আব্দুল লতিফও বালি ব্যবসায় যুক্ত ছিলেন। সিআইডি সূত্রের খবর, জেলা পুলিশেকে প্রয়োজনে সাহায্য করা হবে।