Mamata Banerjee Narendra Modi Meeting

লোক বাড়তি হয়ে যাওয়ায় মোদী-সাক্ষাতে যেতে বারণ করেন দিদিই, জানালেন নকলনবিশ সাংসদ কল্যাণ

প্রসঙ্গত, মঙ্গলবারই জানা গিয়েছিল মমতা-সহ ১০ জনকে দেখা করার অনুমতি দিয়েছে প্রধানমন্ত্রীর দফতর। সেই তালিকায় কল্যাণ বন্দ্যোপাধ্যায়ের নাম ছিল। বুধবার দেখা যায়, প্রতিনিধিদলে তিনি নেই।

Advertisement

আনন্দবাজার অনলাইন সংবাদদাতা

কলকাতা শেষ আপডেট: ২০ ডিসেম্বর ২০২৩ ১৮:৪২
Share:

সংসদ চত্বরে কল্যাণ বন্দ্যোপাধ্যায় এবং মমতা বন্দ্য়োপাধ্যায়। —পিটিআই।

প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে সাক্ষাৎকারী তৃণমূলের প্রতিনিধিদল কেন বাদ গেলেন কল্যাণ বন্দ্যোপাধ্যায়? উপ রাষ্ট্রপতি জগদীপ ধনখড়ের নকল করে বিতর্কে জড়িয়ে পড়ার ফলেই কি?

Advertisement

কল্যাণের দাবি, তা নয়। প্রতিনিধিদলে লোক বাড়তি হয়ে যাচ্ছিল। তাই বুধবার সকালে ফোন করে স্বয়ং মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় তাঁকে বলেছিলেন ওই সাক্ষাতে না-যেতে। রাজ্যের বকেয়া পাওনা নিয়ে বুধবার প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর সঙ্গে সাক্ষাৎ করে মুখ্যমন্ত্রী মমতার নেতৃত্বে তৃণমূলের সাংসদদের একটি প্রতিনিধিদল। মঙ্গলবারও তৃণমূল সূত্রে জানানো হয়েছিল, সেই দলে থাকবেন শ্রীরামপুরের তৃণমূল সাংসদ কল্যাণ। কিন্তু বুধবার তাঁকে সেই দলে দেখা যায়নি। সূত্রের খবর, শেষ মুহূর্তে কল্যাণের নাম বাদ যায়। বাদ পড়েন কাকলি ঘোষ দস্তিদারও। সেই সূত্রেই কল্যাণের দাবি, মমতাই তাঁকে সকালে ফোন করে বলেন, তিনি আর কাকলি যদি না যান, তা হলে ভাল হয়। কারণ, লোক বাড়তি হয়ে যাচ্ছে। প্রধানমন্ত্রীর দফতরে সব মিলিয়ে ১০ জনের বেশি ঢুকতে দেবেন না নিরাপত্তারক্ষীরা। তাই কল্যাণ-কাকলি বাদ পড়েন। কল্যাণের কথায়, ‘‘দিদি আমায় সকালে ফোন করেছিলেন। তিনি বলেন, ওরা (প্রধানমন্ত্র্রীর দফতর) দিদি-সহ ১০ জনকে যাওয়ার অনুমতি দিয়েছে। দিদি তখন বলেন, তুমি (কল্যাণ) আর কাকলি যদি না যাও, তা হলে ভাল হয়।’’ কল্যাণের কথায়, ‘‘দিদি বলে দিয়েছেন, সেটাই শেষ কথা!’’ প্রসঙ্গত, বুধবারের প্রতিনিধিদলে ছিলেন নতুন দুই সাংসদ জহর সরকার এবং নাদিমুল হক। তাঁদের নাম অবশ্য মঙ্গলবারের তালিকায় ছিল না। তাঁরা বুধবারের সংযোজন।

মঙ্গলবার নতুন সংসদ ভবনের মকরদ্বারের সামনে ‘মক পার্লামেন্টে’ দেশের উপ রাষ্ট্রপতি তথা রাজ্যসভার চেয়ারম্যান জগদীপ ধনখড়ের নকল করেন কল্যাণ। সেই ঘটনা ভিডিয়ো কোরর্ড করেন রাহুল গান্ধী। প্রত্যক্ষদর্শীরা জানিয়েছিলেন, কল্যাণ ধনখড়কে ভালই নকল করেছেন। কিন্তু বিষয়টি নিয়ে জাতীয় রাজনীতিতে তীব্র বিতর্ক তৈরি হয়। ধনখড়কে ফোন করে সমবেদনা জানান প্রধানমন্ত্রী মোদী। এক্স হ্যান্ডলে ঘটনাটি নিয়ে দুঃখপ্রকাশ করেন স্বয়ং রাষ্ট্রপতি দ্রৌপদী মুর্মু। তার অব্যবহিত পরেই দেখা যায়, মোদীর সঙ্গে সাক্ষাৎকারী তৃণমূলের প্রতিনিধিদলে কল্যাণ নেই!

Advertisement

১০০ দিনের কাজ, আবাস যোজনা, সড়ক যোজনা-সহ বিভিন্ন কেন্দ্রীয় প্রকল্পে রাজ্যের প্রাপ্য বকেয়া টাকা বাংলা পাবে কি না, সেই প্রশ্নের উত্তর চেয়ে বুধবার প্রধানমন্ত্রীর দ্বারস্থ হয়েছিলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা। ২০ মিনিটের কিছু বেশি সময় আলোচনা শেষে প্রধানমন্ত্রীর দফতর থেকে বেরিয়ে মমতা বলেন, ‘‘কেন্দ্র এবং রাজ্যের সংশ্লিষ্ট কর্তাদের নিয়ে একটি যৌথ কমিটি গড়ার কথা বলেছেন প্রধানমন্ত্রী। তারা গোটা পরিস্থিতি খতিয়ে দেখবে। তার পরে এ ব্যাপারে সিদ্ধান্ত নেবে।’’ মমতার সংযোজন, ‘‘আমি বলেছি, যদি কোনও ভুল হয়ে থাকে তবে আমাদের বলুন। এতবার কেন্দ্রীয় দল এসেছে, এত বার ব্যাখ্যা দিয়েছি! আবার দেব। কিন্তু গরিবদের টাকা আটকে রাখবেন না।’’ মমতার কথায়, ‘‘কেন্দ্রের ১৫৭টা টিম গিয়েছিল। যা জানতে চেয়েছে জানিয়েছি। তার পরেও টাকা পাব না কেন? সেটাই বলেছি প্রধানমন্ত্রীকে।’’ প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে সাক্ষাৎ শেষে বুধবার সন্ধ্যায় মমতা ফিরে এসেছেন কলকাতায়। এখন দেখার, প্রধানমন্ত্রীর আশ্বাস মতো কবে কেন্দ্র-রাজ্যের আধিকারিকদের যৌথ কমিটির প্রথম বৈঠকটি বসে।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement