—ফাইল চিত্র।
রাজ্যের সঙ্গে কোনও আলোচনা না করে কেন্দ্রীয় বাহিনী নামানো হয়েছে বিজেপি দফতরে। অভিযোগ করল পশ্চিমবঙ্গ সরকার। পার্থ চট্টোপাধ্যায়ের নেতৃত্বে রাজ্য মন্ত্রিসভার গুরুত্বপূর্ণ সদস্যরা রাজ্যপালের কাছে গিয়ে আজ যুক্তরাষ্ট্রীয় কাঠামোয় আঘাত হানার অভিযোগ জানালেন। রাজ্য সরকারকে না জানিয়ে কেন্দ্রীয় বাহিনী নামানোর তীব্র প্রতিবাদ জানালেন। বাংলার বিজেপি নেতারা রাজ্যপালকে ‘নিজেদের দলের লোক’ হিসেবে তুলে ধরে রাজ্যপাল পদকে কলঙ্কিত করছেন বলেও পার্থ চট্টোপাধ্যায় মন্তব্য করেছেন।
পার্থ চট্টোপাধ্যায়ের সঙ্গে এ দিন রাজ ভবনে গিয়েছিলেন সুব্রত মুখোপাধ্যায়, শোভনদেব চট্টোপাধ্যায়, ফিরহাদ হাকিম, সাধন পাণ্ডে, শশী পাঁজা, শোভন চট্টোপাধ্যায়, তাপস রায়, চন্দ্রনাথ সিংহ এবং আরও কয়েক জন। প্রায় ঘণ্টাখানেক তাঁরা রাজ ভবনে ছিলেন। বৈঠক সেরে বেরিয়ে আসার পর পার্থ চট্টোপাধ্যায় বলেন, ‘‘যুক্তরাষ্ট্রীয় কাঠামো ভাঙা হচ্ছে বলে আমরা রাজ্যপালের কাছে অভিযোগ জানিয়েছি।’’ পার্থবাবু আরও বলেন, ‘‘আমরা অবাক! বিজেপি নেতারা দাবি করছেন, তাঁদের অফিস বাঁচাতে কেন্দ্রীয় বাহিনী আনতে হবে। আর তার জন্যই নাকি কেন্দ্রীয় বাহিনী এসেছে।’’
আরও পড়ুন: তৃণমূলের মিছিলে, অবরোধে বেহাল ছবি কলকাতা সহ গোটা রাজ্যে
মঙ্গলবার সুদীপ বন্দ্যোপাধ্যায়ের গ্রেফতারির পর তৃণমূল ছাত্র পরিষদ কর্মীরা রাজ্য বিজেপির সদর দফতরের কাছে বিক্ষোভ শুরু করেন। দু’পক্ষের সংঘর্ষে সেন্ট্রাল অ্যাভিনিউ, মুরলীধর সেন লেন এবং সংলগ্ন এলাকা রণক্ষেত্র হয়ে ওঠে। পুলিশ পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনার চেষ্টা করলেও রাত পর্যন্ত বিজেপি দফতর ঘিরে বিক্ষোভ চলছিল। এর মধ্যেই বিজেপি অফিসে কেন্দ্রীয় বাহিনী পাঠানো হয়। বিজেপি নেতা রাহুল সিংহ জানান, তিনি সিআরপিএফ নিরাপত্তা পান। পরিস্থিতি উত্তপ্ত থাকায় তাঁকে নিরাপত্তা দিতেই বিজেপি অফিসে সিআরপিএফ আনানো হয়েছে। পার্থ চট্টোপাধ্যায়রা রাজ্যপালের কাছে গিয়ে আজ সেই ঘটনারই প্রতিবাদ জানিয়েছেন।
রাজ ভবন থেকে বেরিয়ে পার্থবাবু বলেন, ‘‘রাজ্য সরকারের সঙ্গে কোনও আলোচনা না করে যে ভাবে কেন্দ্রীয় বাহিনী পাঠানো হয়েছে, তা যুক্তরাষ্ট্রীয় কাঠামোর উপর ভয়ঙ্কর আঘাত। এটা অত্যন্ত অশুভ একটা ঘটনা। আমরা রাজ্যপালকে বলেছি, রাজ্য সরকারের অনুমতি না নিয়ে কোনও কেন্দ্রীয় বাহিনী পাঠানো যাবে না।’’
বিজেপি নেতারা রাজ্য সরকারকে অস্বীকার করতে রাজ্যপালকে ব্যবহার করছেন বলে পার্থ চট্টোপাধ্যায় এ দিন অভিযোগ করেছেন। তীব্র উষ্মা প্রকাশ করে তিনি জানান, বিজেপি নেতারা দেখাতে চাইছেন রাজ্যপাল তাঁদের দলের লোক এবং রাজ্যপালের আসনকে রাজ্য মন্ত্রিসভার সমান্তরাল একটি ক্ষমতার কেন্দ্র হিসেবে তুলে ধরার চেষ্টা হচ্ছে। নিজেদের রাজনৈতিক স্বার্থ চরিতার্থ করতে গিয়ে রাজ্য বিজেপির নেতারা রাজ্যপাল পদকে কলঙ্কিত করছেন বলে পার্থবাবুর অভিযোগ। তিনি বলেন, ‘‘আমরা রাজ্যপালকে বলে এসেছি, নিজের আসনকে কলঙ্কিত হতে দেবেন না।’’ কেন্দ্রীয় মন্ত্রী বাবুল সুপ্রিয়কে গ্রেফতার করার দাবিও রাজ্যপালের কাছে পেশ করেছেন রাজ্যের মন্ত্রীরা।