বিজেপি সাংসদ জন বার্লা। নিজস্ব চিত্র
২১ জুনের পর ৭ জুলাই। স্বল্প সময়ের ব্যবধানে পর পর দু’বার সংবাদ শিরোনামে আলিপুরদুয়ার বিজেপি। ২১ জুন গেরুয়া শিবিরের জেলা সংগঠনে ভাঙন ধরিয়ে তৃণমূলে যোগ দিয়েছিলেন আলিপুরদুয়ারের জেলার বিজেপি সভাপতি গঙ্গাপ্রসাদ শর্মা। আর বুধবার আলিপুরদুয়ার বিজেপি-র জন্য খুশির খবর, তাঁদের সাংসদ জন বার্লা কেন্দ্রে মন্ত্রী হলেন। বিজেপি-র অন্দরে এমন একটা মৃদু আশঙ্কার কথা বলা হচ্ছিল যে, এ বার মন্ত্রী না করা হলে বার্লা ‘বিদ্রোহ’ করে বসতে পারেন। যদিও দলের বড় অংশই ওই সম্ভাবনা নাকচ করে দিয়েছে।
বার্লা বিজেপি-তে ‘আদি’ না হলেও খুব নতুনও নন। একটা সময় তিনি ছিলেন আদিবাসী বিকাশ পরিষদের নেতা। ২০১৪ সালের লোকসভা নির্বাচনে বিজেপি-কে সমর্থন দিয়েছিল পরিষদ। সেই সিদ্ধান্ত ছিল বার্লারই। জয় না পেলেও উল্লেখযোগ্য ভাবে বিজেপি-র ভোট বেড়েছিল আলিপুরদুয়ারে। এর পর ২০১৫ সালেই বিজেপি-তে যোগ দেন বার্লা। ২০১৬ সালের বিধানসভা নির্বাচনে তিনি বিজেপি-র টিকিটে প্রার্থী হন নাগরাকাটা আসন থেকে। তবে তৃণমূলের কাছে পরাজিত হন। এর পরে ২০১৯ সালে তিনি আলিপুরদুয়ার লোকসভা আসনে লড়েন। এবং তৃণমূলকে হারান।
বার্লার ক্ষেত্রে উল্লেখযোগ্য বিষয় হল, নাগরাকাটায় যাঁর কাছে তিনি হেরেছিলেন, সেই সুক্রা মুন্ডা এবং ২০১৯ সালে তৃণমূলের যে প্রার্থী দশরথ তিরকেকে লোকসভায় হারিয়েছিলেন, তাঁরা দু’জনেই এখন বিজেপি-তে। যদিও কেউই ‘সক্রিয়’ ছিলেন না বিধানসভা ভোট পর্বে। তবে বার্লা কতটা ‘সক্রিয়’ ছিলেন তার প্রমাণ তাঁর রিপোর্ট কার্ড। সেই বিচারে বাংলায় বিজেপি-র ‘সেরার সেরা’ সাংসদ বার্লাই। ২০১৯ সালে প্রায় আড়াই লাখ ভোটে জিতেছিলেন তিনি। তাঁর আলিপুরদুয়ার লোকসভা এলাকার সাতটি বিধানসভাতেই এগিয়ে ছিল বিজেপি। ২০২১-এর ভোটেও সাতটি আসনেই জয় পেয়েছে বিজেপি। রাজ্যে বার্লাই একমাত্র সাংসদ যিনি সাতে সাত পেয়েছেন।
বার্লাকে কেন্দ্রে মন্ত্রী করে আদিবাসী ভোট হাতে রাখতে চেয়েছে বিজেপি— বুধবার এমন ধারনাই ‘জনপ্রিয়’ হয়ে ঘোরাফেরা করেছে। তা একেবারে ফেলে দেওয়ার মতোও নয়। লোকসভার মতো বিধানসভা ভোটেও ঢেলে পদ্মফুলে ছাপ দিয়েছেন আলিপুরদুয়ারের মানুষ। যাঁদের এককাট্টা করেছেন বার্লা। তারই পুরস্কার পেলেন তিনি।