BJP

রাজ্যসভার ভোট নিয়ে তৎপর শুভেন্দু অধিকারী! দিল্লিতে অমিত শাহের সঙ্গে বৈঠকের পর জল্পনা

শুক্রবার শুভেন্দু অধিকারী দিল্লিতে কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহের সঙ্গে দেখা করেছেন। সেই সাক্ষাতের পর দু’জনের কেউই প্রকাশ্যে কোনও মন্তব্য করেননি। তবে রাজধানীর রাজনৈতিক মহল সূত্রের খবর, পশ্চিমবঙ্গের রাজ্যসভা নির্বাচন নিয়ে আলোচনা হয়েছে।

Advertisement

আনন্দবাজার অনলাইন সংবাদদাতা

কলকাতা শেষ আপডেট: ১০ জুন ২০২৩ ১২:৪০
Share:

অমিত শাহ ও শুভেন্দু অধিকারী। ছবি: সংগৃহীত।

আগামী জুলাই মাসে শেষ হচ্ছে পশ্চিমবঙ্গের ৬টি রাজ্যসভা আসনের মেয়াদ। অগস্ট থেকে শুরু হয়ে যাবে নতুন সাংসদদের মেয়াদ। তাই ঘরোয়া ভাবে প্রার্থী বাছাইয়ের কাজ শুরু করে দিয়েছে পশ্চিমবঙ্গের শাসক এবং বিরোধী— দু’পক্ষই। সেই পদক্ষেপেই বিজেপির ঘর গোছাতে ‘সক্রিয়তা’ বাড়িয়েছেন বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী। শুক্রবার দিল্লিতে তাঁর সঙ্গে কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহের রাজ্যসভার প্রার্থী নিয়ে আলোচনা হয়েছে বলে একটি সূত্রের দাবি। যদিও সাক্ষাৎপর্বের পর দু’জনের কেউই প্রকাশ্যে কোনও মন্তব্য করেননি।

Advertisement

উল্লেখ্য, ১৯৮০ সালে দল গঠনের পর এই প্রথম বাংলা থেকে কোনও রাজ্যসভার সাংসদ পাবে বিজেপি। তাই সবদিক থেকেই বিজেপির সর্বভারতীয় নেতৃত্বের কাছে পশ্চিমবঙ্গের এই রাজ্যসভা আসনের গুরুত্ব রয়েছে। জুন মাসের শেষে বা জুলাইয়ের শুরুতেই নির্বাচন কমিশন রাজ্যসভা ভোটের বিজ্ঞপ্তি জারি করবে। তাই পশ্চিমবঙ্গের পঞ্চায়েত ভোটের পাশাপাশি বিরোধী দলনেতার সঙ্গে আসন্ন রাজ্যসভা ভোট নিয়েও আলোচনা করতে চেয়েছিলেন অমিত। সেই কারণেই শুক্রবার তড়িঘড়ি তাঁকে দিল্লিতে ডেকে পাঠানো হয়েছিল বলে কেন্দ্রীয় বিজেপি সূত্রের খবর।

পশ্চিমবঙ্গ থেকে রাজ্যসভায় কাকে পাঠানো হবে, তা নিয়ে বিজেপির অন্দরে জল্পনার অবকাশ রয়েছে। অনেকে মনে করছেন, ভবিষ্যতের জন্য ‘নেতা’ ভাবা হচ্ছে, এমন কাউকে রাজ্যসভায় পাঠানো উচিত। আবার অনেকের মতে, বাঙালি সমাজের কাছে ‘বার্তা’ দেওয়া যাবে, এমন কাউকে রাজ্যসভায় মনোনয়ন দিলে ভাল। তৃতীয় একটি অভিমতও রয়েছে। তা হল, দিল্লির রাজনীতি সম্পর্কে ওয়াকিবহাল, এমন কাউকে মনোনয়ন দেওয়া যেতে পারে। কোনও মতামতই চূড়ান্ত নয়। কারণ, সিদ্ধান্ত নেবেন কেন্দ্রীয় নেতৃত্ব। তবে জল্পনা ইতিমধ্যেই শুরু হয়ে গিয়েছে।

Advertisement

কেন্দ্রীয় নেতৃত্ব যাঁকে ‘যোগ্য’ প্রার্থী বলে ঠিক করবেন, তাঁকে ভোট দেবে শুভেন্দুর নেতৃত্বাধীন বিজেপি পরিষদীয় দল। ফলে রাজ্য বিজেপির একটি অংশের অনুমান, শুক্রবারের বৈঠকে শুভেন্দুর সঙ্গে কোনও নাম নিয়ে আলোচনা করলেও করে থাকতে পারেন কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী। সেই অনুযায়ী বিরোধী দলনেতাকে রাজ্যসভা নির্বাচনের প্রস্তুতিও শুরু করে দিতে বলে থাকতে পারেন তিনি। তবে অনেকের মতে, ওই বিষয়ে বিজেপির রাজ্য সভাপতি সুকান্ত মজুমদারের সঙ্গেও আলোচনা করতে পারেন অমিত। নির্বাচনের দিনক্ষণ ঘোষণা হলে দিল্লি থেকেই প্রার্থীর নাম ঘোষণা করে দেওয়া হবে।

এ রাজ্যের যে ৬টি আসনে রাজ্যসভা ভোট হবে, তার মধ্যে ৫টিতে শাসকদল তৃণমূলের জয় নিশ্চিত। তাদের বিধায়ক সংখ্যার নিরিখে একটি আসন জিততে পারে বিজেপি। এ বারের রাজ্যসভা নির্বাচনে জিততে সংশ্লিষ্ট প্রার্থীকে পেতে হবে ৪২টি ভোট। তৃণমূলের বিধায়ক সংখ্যা ২১৬। বিজেপি ছেড়ে তৃণমূলে যোগ দিয়েছেন আরও ৬ বিধায়ক। সব মিলিয়ে তৃণমূলের হাতে রয়েছে ২২২ জন বিধায়কের ভোট।‌ অপরদিকে, বিজেপির বিধায়ক সংখ্যা খাতায়কলমে ৭৫ হলেও বর্তমানে তাদের হাতে রয়েছে ৬৯ জন। তাই বিধায়ক সংখ্যার নিরিখে তৃণমূলের ৫ জন এবং বিজেপির একজন প্রতিনিধির রাজ্যসভায় যাওয়া প্রায় নিশ্চিত। তৃণমূলের তরফে রাজ্যসভার দলনেতা ডেরেক ও’ব্রায়েন, শান্তা ছেত্রী, সুস্মিতা দেব, দোলা সেন ও সুখেন্দুশেখর রায়ের রাজ্যসভার মেয়াদ শেষ হচ্ছে। কংগ্রেসের প্রবীণ নেতা প্রদীপ ভট্টাচার্যেরও রাজ্যসভার মেয়াদ শেষ হচ্ছে। তৃণমূলে কাদের মনোনয়ন দেওয়া হবে, তা ঠিক করবেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ও দলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়। এই ৫ জনের মধ্যে কেউ বাদ পড়বেন কি না, বাদ পড়লে তাঁর জায়গায় কে আসবেন, তা নিয়ে শাসক শিবিরেও অনুমান এবং জল্পনা চলছে।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement