প্রতীকী ছবি।
সাধারণ ভাবে প্রতি বছর নভেম্বরের গোড়াতেই সরকারি স্কুলে ভর্তির প্রক্রিয়া আরম্ভ হয়ে যায়। কিন্তু এ বার শিক্ষা দফতর সেই ভর্তির বিজ্ঞপ্তি এখনও প্রকাশ করেনি। ভর্তির জন্য কবে থেকে ফর্ম দেওয়া হবে এবং লটারির প্রক্রিয়া চালু হবে কবে, তার খবরাখবর না-পাওয়ায় অভিভাবক ও শিক্ষকেরা উদ্বিগ্ন। অভিভাবকদের প্রশ্ন, নভেম্বরের চতুর্থ সপ্তাহেও বিজ্ঞপ্তি নেই কেন? ভর্তি হবে কবে?
এমনিতেই রাজ্যের বহু সরকারি স্কুলে, বিশেষত কলকাতার মতো মেট্রো শহরের সরকারি স্কুলগুলিতে ছাত্রছাত্রীর সংখ্যা কমছে। তার উপরে ওই সব স্কুলে ভর্তির কাজকর্ম কবে চালু হবে, শিক্ষা দফতর যদি সেই বিষয়েও উদাসীনতা দেখায়,
সরকারি স্কুলের ভাবমূর্তির পক্ষে সেটা অনেক বেশি ক্ষতিকারক হবে বলেই আশঙ্কা করছেন শিক্ষক-শিক্ষিকাদের একাংশ।
সরকারি স্কুলের শিক্ষকেরা জানান, কোনও কোনও স্কুলে প্রাক্-প্রাথমিক, প্রথম শ্রেণি এবং তৃতীয় শ্রেণিতে ভর্তির জন্য বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করা হয়। অনেক স্কুল প্রথম ও পঞ্চম শ্রেণি, আবার কিছু স্কুল প্রথম, পঞ্চম ও ষষ্ঠ শ্রেণিতেও ভর্তির জন্য বিজ্ঞপ্তি দেয়। ভর্তি-প্রক্রিয়া চলে লটারির মাধ্যমে। এক সরকারি স্কুলের প্রধান শিক্ষক জানাচ্ছেন, কোনও স্কুলে হয়তো দেখা গেল, সপ্তম শ্রেণিতে কয়েক জন পড়ুয়া অন্য স্কুলে চলে গেল। তখন সেই শ্রেণিতে নতুন করে পড়ুয়া নেওয়া হবে লটারির মাধ্যমেই। হেয়ার স্কুলের শিক্ষক বিপুল চক্রবর্তী বলেন, “এ বার কবে ফর্ম দেওয়া হবে এবং কবে লটারি হবে, সেই বিষয়ে এখনও কোনও বিজ্ঞপ্তি না-বেরোনোয় অনেক অভিভাবকের কাছ থেকেই ফোন পাচ্ছি। এই ব্যাপারে দ্রুত বিজ্ঞপ্তি দিলে অভিভাবকেরা উপকত হবেন।”
কলকাতার সরকারি স্কুলে পড়ুয়া কমলেও জেলার বিভিন্ন সরকারি স্কুলে পড়ার চাহিদা রয়েছে যথেষ্টই। কল্যাণীর বিধানচন্দ্র মেমোরিয়াল গভর্নমেন্ট গার্লস হাইস্কুলের প্রধান শিক্ষিকা সংহিতা পাল বলেন, “ফোন করে অভিভাবকেরা ভর্তি-প্রক্রিয়ার দিনক্ষণ সম্পর্কে খোঁজ তো নিচ্ছেনই। অনেকে ভর্তি সংক্রান্ত নানা প্রশ্ন নিয়ে স্কুলেও চলে আসছেন। আমরা উত্তর দিতে পারছি না।” একই সমস্যার কথা জানালেন কোচবিহারের সদর গভর্নমেন্ট হাইস্কুলের প্রধান শিক্ষক মলয়কান্তি রায়। “এখানে সরকারি স্কুলে পড়ার চাহিদা যথেষ্টই আছে। কিন্তু ভর্তি ও লটারির বিজ্ঞপ্তি কবে বেরোবে, আমরা এখনও তা জানতে পারলাম না,” বলেন মলয়বাবু।
ভর্তির বিজ্ঞপ্তি দ্রুত জারি করার দাবি জানিয়েছে শিক্ষক সংগঠনগুলি। পশ্চিমবঙ্গ সরকারি বিদ্যালয় শিক্ষক সমিতির সাধারণ সম্পাদক সৌগত বসু বলেন, “এ বছর অতিমারির দরুন রাজ্যের আর্থ-সামাজিক পরিস্থিতির হেরফের ঘটেছে। ফলে সরকারি স্কুলে ছেলেমেয়েদের পড়াতে আগ্রহী অভিভাবকের সংখ্যা অনেকাংশে বৃদ্ধি পেতে পারে বলে মনে করছি আমরা। এই অবস্থায় শিক্ষা দফতর যত দ্রুত সম্ভব ভর্তির নির্দেশনামা প্রকাশ করলে সব পক্ষেরই সুবিধা হবে।”
শিক্ষা দফতর সূত্রের খবর, প্রস্তুতি চলছে। ভর্তির নির্দেশিকা-বিজ্ঞপ্তি খুব তাড়াতাড়িই জারি করা হবে।