প্রতীকী ছবি।
এখন কী হবে অমৃতের সন্তানের? হোমেই জন্ম নেওয়া নাবালিকা মায়ের কন্যাসন্তান মায়ের সঙ্গেই থাকবে, না কি তাকে সরকারি ভাবে দত্তক দেওয়ার প্রক্রিয়ায় আনতে হবে— সেই প্রশ্নই আপাতত ঘোরাফেরা করছে দক্ষিণ চব্বিশ পরগনার একটি সরকারি হোমে।
সুন্দরবনের জল-জঙ্গলের সঙ্গে লড়াই করা অমৃত (নাম পরিবর্তিত) ধর্ষণের ফলে অন্তঃসত্ত্বা হয়। ন্যূনতম চিকিৎসা, খাবারের অভাবে ধুঁকতে থাকে। সেই সময়ে রাজ্য প্রশাসন তার দায়িত্ব নেয়। সেই মেয়ে অগস্ট মাসের তৃতীয় সপ্তাহে কন্যাসন্তানের জন্ম দিয়েছে।
ওই হোমের সুপার জানিয়েছেন, বর্তমানে মা এবং মেয়ে দু’জনেই সুস্থ। সদ্য মেয়েটি আঠারো বছরে পা দিয়েছে। তাকে সদ্যোজাত-সহ প্রাপ্তবয়স্কদের জন্য নির্দিষ্ট হোমে স্থানান্তরিত করার সরকারি প্রক্রিয়া শুরু হয়েছে। সুপার বলেন, ‘‘সদ্যোজাতকে মায়ের সঙ্গেই রাখা হবে। পরে মা দায়িত্ব না নিলে কন্যাসন্তানটিকে সরকারি ভাবে দত্তক দেওয়ার ভাবনাচিন্তা করা হবে। তখন শিশুটিকে সেই হোমে পাঠানো হবে। আর মা-কে স্বাবলম্বী করতে বৃত্তিমূলক শিক্ষা দেওয়া হবে। ’’
গত জুনে, আমপানের পরে সুন্দরবনে ত্রাণ দিতে গিয়ে কলকাতার তিন তরুণ-তরুণী জড়িয়ে পড়েন তখন নাবালিকা অমৃতকে উদ্ধারের কাজে। তাঁরা ‘ওয়েস্ট বেঙ্গল কমিশন ফর প্রোটেকশন অব চাইল্ড রাইটস’-এর সঙ্গে যোগাযোগ করলে অমৃতকে সরকারি হোমে পাঠানো হয়। তাঁর অভিযোগের ভিত্তিতে ‘পকসো’য় মামলা রুজু করা হয়। প্রাথমিক ভাবে মেয়েটিকে মানসিক ভারসাম্যহীন মনে হলেও পরে জানা যায়, সে ঘটনাপ্রবাহের জেরে মানসিক ভাবে বিধ্বস্ত। বিচারকের কাছে গোপন জবানবন্দিতে ওই নাবালিকা গ্রামেরই এক বাসিন্দা বিকাশ জানার বিরুদ্ধে ধর্ষণের অভিযোগ আনে। বিকাশ বর্তমানে বিচারবিভাগীয় হেফাজতে।
‘ওয়েস্ট বেঙ্গল কমিশন ফর প্রোটেকশন অব চাইন্ড রাইটস’-এর চেয়ারপার্সন অনন্যা চক্রবর্তী বলছেন, ‘‘এখন মেয়েটি অনেকটাই সুস্থ। শিশুকে ও নিজের কাছে রাখতে চায় কি না, সেটাও কাউন্সেলিং-এ জানা হবে।’’
মেয়েটির উদ্ধারকার্যে যুক্ত কলকাতার অর্কদীপ নাথ বলছেন, ‘‘মেয়েটির সদ্যোজাত সন্তানের দায়িত্ব সরকারি ভাবে নিতে কেউ আগ্রহী হলে ভাল হয়। সে ক্ষেত্রে শিশুটি সুস্থ জীবন পাবে।’’