গ্রাফিক: সনৎ সিংহ।
আরজি কর-মামলার শুনানিতে ময়নাতদন্তের ‘চালান’ নিয়ে সোমবারই সুপ্রিম কোর্টের প্রশ্নের মুখে পড়তে হয়েছে রাজ্যকে। রাজ্যের আইনজীবীদের উদ্দেশে প্রধান বিচারপতি ডিওয়াই চন্দ্রচূড় প্রশ্ন করেন, “মৃতদেহ কখন ময়নাতদন্তের জন্য পাঠানো হয়? তার চালান কোথায়?” কিন্তু কী এই চালান? তদন্তের জন্য কেন তা গুরুত্বপূর্ণ?
ময়নাতদন্তের আগে দেহ যেখান থেকে এবং যে ভাবে উদ্ধার করা হয়, তার সবিস্তার বিবরণ উল্লেখ করা হয় চালানে। দেহটি কী ভাবে পড়েছিল, দেহে কোনও আঘাতের চিহ্ন ছিল কি না, থাকলে কোথায় ছিল— এই সব কিছুই বলা থাকে চালানে। মৃত ব্যক্তির নাম, বাড়ির ঠিকানা, পরনের পোশাক, মৃত ব্যক্তি সম্পর্কে সাক্ষীদের মত, এমনকি দেহের আশপাশে রক্ত, লালা, ফেনা, বমি ছিল কি না, তা-ও সেখানে লিখে দেওয়া হয়। পরিশেষে লেখা তদন্তকারী আধিকারিকেরা প্রাথমিক অভিমত। কোনও দেহ ময়নাতদন্তের জন্য পাঠানো হলে, সেটির সঙ্গে চালান পাঠানোর দস্তুর। সে ক্ষেত্রে পারিপার্শ্বিক তথ্যপ্রমাণ অপরিবর্তনীয় রয়েছে কি না, তা যাচাই করার সুযোগ মেলে।
আরজি কর হাসপাতালে ধর্ষণ এবং খুনের ঘটনায় ময়নাতদন্তের রিপোর্ট নিয়ে প্রশ্ন তোলেন আইনজীবী ফিরোজ এডুলজি। সিবিআইয়ের তরফেও দাবি করা হয়, নিহত চিকিৎসকের ময়নাতদন্ত কখন করা হয়েছে, সেই সময়ের উল্লেখ নেই। রাজ্য অবশ্য জানায়, সব কিছুরই উল্লেখ রয়েছে। ময়নাতদন্তের চালানের বিষয়ে সুস্পষ্ট কোনও উত্তর দেয়নি রাজ্য। সুপ্রিম কোর্ট আগামী মঙ্গলবারের শুনানিতে রাজ্যকে এই চালান জমা দেওয়ার নির্দেশ দিয়েছে।
সোমবারের শুনানিতে বিচারপতি জেবি পারদিওয়ালা বলেন, “ময়নাতদন্তে নিয়ে যাওয়ার সময় একটি চালান তৈরি হওয়ার কথা। ওই চালান কনস্টেবল নিয়ে যান। যদি ওই চালান না থাকে, তবে রাজ্যকে তার ব্যাখ্যা দিতে হবে। রাজ্য জানায় তারা এই বিষয়ে হলফনামা দিয়ে জানাবে। প্রধান বিচারপতি বলেন, “ওই সব তথ্য এবং নথি না দেওয়া হলে সিবিআই তার জন্য আবেদন করতে পারবে।”