সন্দেশখালির তৃণমূল নেতা শাহজাহান শেখ। —ফাইল চিত্র।
শাহজাহান শেখের বিরুদ্ধে মোট ৩৪টি ধারায় মামলা করা হয়েছে। ন্যাজাট থানার ওই মামলাগুলিতে ডাকাতি থেকে শুরু করে খুনের চেষ্টা— বিবিধ অপরাধের অভিযোগ রয়েছে। সন্দেশখালির নেতা শাহজাহানকে ১০ দিনের পুলিশি হেফাজতে থাকার নির্দেশ দিয়েছে আদালত। আগামী ১০ দিন তাঁর ঠিকানা হতে চলেছে ভবানী ভবন। তাঁর বিরুদ্ধে যাবতীয় অভিযোগের তদন্ত করবে সিআইডি।
গত ৫ জানুয়ারি রেশন ‘দুর্নীতি’ মামলায় শাহজাহানের বাড়িতে তল্লাশি চালাতে গিয়েছিল ইডি। সে দিন শাহজাহানের সঙ্গে তাদের দেখা হয়নি। উল্টে ইডি আধিকারিকদের মার খেয়ে ফিরতে হয়েছিল সন্দেশখালি থেকে। অভিযোগ, শাহজাহানের বাড়ির সামনে জড়ো হয়েছিলেন তাঁর অনুগামীরা। তাঁরাই ইডির উপর চড়াও হন। ইডি আধিকারিকদের হাসপাতালে ভর্তিও করানো হয়েছিল। ইডির উপর হামলার এই ঘটনায় ন্যাজাট থানায় দু’টি এফআইআর হয়েছিল। একটি এফআইআর হয় ইডির অভিযোগের ভিত্তি। অন্য এফআইআরটি স্বতঃপ্রণোদিত ভাবে রুজু করে পুলিশ। জানা গিয়েছে, ওই দু’টি মামলাতেই মোট ৩৪টি ধারা যুক্ত করা হয়েছে শাহজাহানের বিরুদ্ধে।
শাহজাহানের বিরুদ্ধে ভারতীয় দণ্ডবিধির যে যে ধারা যুক্ত হয়েছে, তার মধ্যে রয়েছে ৩৯২ এবং ৩৯৫। ওই দু’টি ধারাতেই ডাকাতির মতো অপরাধের উল্লেখ করা রয়েছে। এ ছাড়া, শাহজাহানের বিরুদ্ধে রয়েছে ভারতীয় দণ্ডবিধির ৩০৭ নম্বর ধারা, যা খুনের চেষ্টার অপরাধে যুক্ত হয়। শাহজাহানের বিরুদ্ধে ধারাগুলি হল— ৩২৫ (ইচ্ছাকৃত ভাবে গুরুতর আঘাত করা), ৩২৬ (ধারালো অস্ত্র দিয়ে আঘাত করা), ৩৩৩ (সরকারি আধিকারিকের কাজে বাধা দেওয়া এবং ইচ্ছাকৃত ভাবে আঘাত করা), ১৮৯ (সরকারি আধিকারিককে হুমকি দেওয়া, ভয় দেখানো), ৩৯৭ (ডাকাতির সময়ে কাউকে গুরুতর আঘাত করা), ৪২৬ এবং ৪৪০ (অনিষ্ট করা এবং তা করতে গিয়ে কাউকে আঘাত, কারও মৃত্যুর কারণ হওয়া), ৩৪২ (কাউকে জোর করে আটকে রাখা), ১৪৩ (কোনও বেআইনি সংগঠনের সদস্য হওয়া), ১০৯ (অপরাধে প্ররোচনা দেওয়া)। এ ছাড়া আরও কয়েকটি ধারা শাহজাহানের বিরুদ্ধে যুক্ত হয়েছে। ৩৯২, ৩০৭, ৩২৬, ৩৩৩-এর মতো ধারাগুলি জামিন অযোগ্য।
শাহজাহানের বিরুদ্ধে দীর্ঘ দিন ধরে বিক্ষোভ চলছে সন্দেশখালিতে। গ্রামবাসীদের একাংশ তাঁর গ্রেফতারির দাবিতে পথে নেমেছিলেন। যাঁদের মধ্যে অধিকাংশই মহিলা। অভিযোগ, গ্রামের লোকজনের জমি জবরদখল করে মাছের ভেড়ি তৈরি করেছেন শাহজাহান এবং তাঁর সঙ্গীরা। গ্রামবাসীদের উপর অত্যাচার, কাজ করিয়ে টাকা না দেওয়া, মারধর, হুমকি দেওয়ার মতো অভিযোগও রয়েছে তাঁদের বিরুদ্ধে। ৫৫ দিন ‘নিখোঁজ’ ছিলেন শাহজাহান। বুধবার রাতে তাঁকে মিনাখাঁ থেকে গ্রেফতার করে পুলিশ।