—ফাইল চিত্র
বিধানসভা ভোটের আগেই রাজ্যে পুরোহিতদের ভাতা দেওয়ার বিষয়টি নিয়ে তৎপরতা শুরু হয়েছে। প্রশাসনিক স্তরে এখনও কোনও ঘোষণা না হলেও সাংগঠনিক ভাবে শাসকদল তৃণমূল পুরোহিতদের তালিকা তৈরির কাজ শুরু করেছে। এক্ষেত্রেও সমীক্ষা ও তথ্য যাচাইয়ে সাহায্য করছে ভোটকুশলী প্রশান্ত কিশোরের টিম ‘আইপ্যাক’।
ইমাম-মোয়াজ্জিনদের ভাতা দেওয়ার পর থেকেই পুরোহিতদের নিয়ে কথা উঠেছিল। এই রাজনৈতিক দড়িটানাটানির মধ্যে পড়েই এ ব্যাপারে পদক্ষেপ করতে চলেছে শাসক শিবির। এখনও সরকারি ভাবে কিছু জানানো না হলেও পুরোহিতদের আর্থিক সাহায্যের বিষয়টি চূড়ান্ত করতে তৎপরতা শুরু হয়েছে। সরকারি সূত্রে খবর, ব্লক স্তর থেকে এই তথ্য সংগ্রহ করার কাজ চলছে। তারপর সেই তথ্য যাচাই করে দেখা হবে। ট্রাস্টের সাধারণ সম্পাদক শ্রীধর মিশ্র বলেন, ‘‘বিষয়টি নিয়ে আমরা মুখ্যমন্ত্রীর কাছেও গিয়েছিলাম। আশা করছি, তিনি আমাদের পরিস্থিতি বিবেচনা করে দ্রুত এই ভাতা চালু করে দেবেন।’’
এই ভাতা নিয়ে সরকারের বিরুদ্ধে পক্ষপাতিত্বের অভিযোগে ব্যাপক প্রচার করেছিল বিজেপি। নিজেদের ভাতার দাবিতে সরকারের উপর চাপ দিতে শুরু করে পুরোহিত সংগঠনও। পুরোহিতদের এই দাবি সামনে আসার পরে নির্বাচনী রাজনীতিতে কিছুটা চাপেই পড়েই বিষয়টি নিয়ে ভাবনাচিন্তা শুরু করেছিল তৃণমূল। শুধু তাই নয়, লোকসভা ভোটের পরে মন্দিরের পুরোহিতদের একটি কেন্দ্রীয় কর্মসূচিতে দলের প্রতিনিধি পাঠিয়ে পরিস্থিতি বুঝতে চেয়েছিল তৃণমূল। শুধু তাই নয়, তখন থেকেই বিরোধী প্রচারের মুখে এই অংশের সঙ্গে নিয়মিত যোগাযোগ রাখা শুরু করেন তৃণমূল নেতৃত্ব। এই প্রেক্ষাপটেই রাজ্যে পুরোহিত সংগঠনগুলির বেশিরভাগকে একই ছাতার তলায় এনে শাসকদল তৃণমূলের উদ্যোগে কাজ শুরু করে পশ্চিমবঙ্গ রাজ্য সনাতন ব্রাক্ষ্ণণ ট্রাস্ট। তৃণমূল সূত্রে খবর, বিধানসভা নির্বাচনের আগে এই ভাতা চালু করতে জেলায় জেলায় মন্দির ও তার সঙ্গে যুক্ত পুরোহিতের সম্পর্কে তথ্য সংগ্রহ শুরু করা হয়েছে। এই কাজে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা নিয়েছে প্রশান্ত কিশোরের টিম।
গত সপ্তাহেই পূর্ব মেদিনীপুরে সংগঠনের মন্দির-সহ অফিসের শিলান্যাস হয়েছে। শাসক দলের এক নেতার কথায়, ‘‘পুরোহিতদের বড় অংশই সংকটের মধ্যে রয়েছেন। লকডাউনে তা আরও বেড়েছে। আগে প্রবীণ পুরোহিতদের জন্য ভাতার ব্যবস্থা করার কথা বলা হয়েছে। তার পর অন্যদের।’’ ট্রাস্টের হিসেব অনুযায়ী, প্রবীণ পুরোহিতের সংখ্যা ৩০ হাজার। শারীরিক কারণে তাঁদের অনেকে নিয়মিত কাজও করতে পারেন না। এ ছাড়া এখন নিয়মিত কাজের সঙ্গে যুক্ত আছেন তিন লক্ষ ৩২ হাজার পুরোহিত।