—ফাইল চিত্র।
মঙ্গলবারই রাজ্যপাল সি ভি আনন্দ বোস বলেছিলেন, তাঁর কাছে বিধানসভা থেকে আসা একটি বিলও পড়ে নেই। তিনি তাঁর কাজ ফেলে রাখেন না। বুধবার সেই দাবি সরাসরি নাকচ করে দিলেন বিধানসভার স্পিকার বিমান বন্দ্যোপাধ্যায়। তিনি জানালেন, রাজ্যপাল যা দাবি করছেন, তা ঠিক নয়। সব মিলিয়ে বিধানসভায় পাশ হওয়া ২২খানি বিল পড়ে রয়েছে রাজ্যপালের অনুমোদনের অপেক্ষায়। বুধবার পর্যন্ত সেই সব বিলের কী অবস্থা তা জানানোই হয়নি তাঁকে।
মঙ্গলবার বাংলার রাজ্যপাল হিসাবে এক বছর পূর্ণ করলেন রাজ্যপাল বোস। সেই উপলক্ষেই রাজভবনে একটি সাংবাদিক সম্মেলন করেছিলেন তিনি। সেখানে বাংলায় তাঁর কাজ করার অভিজ্ঞতার পাশাপাশি সরকারের সঙ্গে বিভিন্ন সময়ে তাঁর সংঘাতের প্রশ্নও ওঠে। রাজ্যপাল জবাবে জানিয়েছিলেন, রাজভবনের সঙ্গে সরকারের যতটা সংঘাত আছে বলে মনে হয় আদতে কিন্তু ততটা সংঘাত নেই। এ প্রসঙ্গেই তাঁর বিরুদ্ধে আনা সরকারের বিল আটকে রাখার প্রসঙ্গে তিনি জানান, তাঁর কাছে কোনও বিল পড়ে নেই। রাজ্যপাল বলেছিলেন, ‘‘যে বিলগুলি এসেছিল, সেগুলি তিনি ফেরত পাঠিয়েছেন। শুধু কয়েকটি বিল বিবেচনার জন্য রাষ্ট্রপতির কাছে পাঠানো হয়েছে। আর কয়েকটির ব্যাখ্যা চাওয়া হয়েছে রাজ্য সরকারের কাছে। তা ছাড়া রাজভবনে কোনও বিল পড়ে নেই।’’
রাজ্যপালের এই দাবির প্রেক্ষিতেই রাজ্যের স্পিকার বুধবার পাল্টা জানান, রাজ্যপালের দাবি ঠিক নয়। কিছুটা উত্তেজিত ভঙ্গিতেই বিমান বলেন, ‘‘উনি সাংবাদিক সম্মেলন করে যে তথ্য দিয়েছেন, তা তো ওঁর বিধানসভাকে জানানো উচিত ছিল। রাজ্যপাল যে বিল আটকে রেখেছেন, সেখানে দেখা যাচ্ছে তিনি বিধানসভাকে কিছু জানাচ্ছেন না। আমাদের রুল বুকে বলা হয়েছে, রাজ্যপাল সরাসরি বিধানসভাকে জানাবেন। সেটা হচ্ছে না। প্রেসকে বলে কী হবে?’’
বিমান বলেছেন, ‘‘আমরা অফিসিয়ালি জানিয়েছি ২২টি বিল রাজ্যপালের কাছে পড়ে রয়েছে। কিন্তু রাজ্যপাল আমাদের কিছু বলেননি। একটা স্টেটাস রিপোর্ট পাঠিয়েছেন। কিন্তু সেখানে কোন বিলের কী অবস্থা, কোন বিলের কী ফেট হয়েছে, সে সব কিছু জানাননি রাজ্যপাল। আমার কাছে অফিসিয়াল কমিউনিকেশন নেই।’’
তবে একই সঙ্গে বিমানের সংযোজন, ‘‘উনি ভালো মানুষ। ওঁকে কেউ ভুল বোঝাচ্ছেন।ডিপার্টমেন্ট হয়তো সেই ভাবে বলছে না। রাজ্যপাল যদি চান তবে এ বিষয় নিয়ে আলোচনা করব।’’
প্রসঙ্গত এই সব বিলের মধ্যে রয়েছে রাজ্যের বিশ্ববিদ্যালয়গুলির আচার্য পদে মুখ্যমন্ত্রীকে মনোনীত করার বিলটিও। কিন্তু রাজ্যপাল এই বিলগুলির একটিও অনুমোদন করে বিধানসভায় ফেরত পাঠাননি বলে দাবি শাসকদলের।