কুন্তলের অভিযোগ, তাপস মণ্ডলের পাশাপাশি এই নীলাদ্রি ঘোষও নাকি হুমকি দিয়ে তাঁর কাছ থেকে টাকা আদায় করতেন। গ্রাফিক: শৌভিক দেবনাথ ।
নিয়োগ দুর্নীতি মামলায় তৃণমূল যুবনেতা কুন্তল ঘোষের গ্রেফতারির পর থেকে বার বার উঠে এসেছে তাঁর নাম। তিনি নীলাদ্রি ঘোষ। কিন্তু তাঁর পরিচয় নিয়ে এখনও ধোঁয়াশা কাটেনি। উঠছে একাধিক প্রশ্নও। কুন্তলের অভিযোগ, তাপস মণ্ডলের পাশাপাশি এই নীলাদ্রি ঘোষ নাকি হুমকি দিয়ে তাঁর কাছ থেকে টাকা আদায় করতেন। নীলাদ্রিকে চেনেন বলে জানিয়েছেন তাপসও। এ বার সেই নীলাদ্রিকে নিয়ে আবার মুখ খুললেন কুন্তল।
ইডি হেফাজতে থাকা কুন্তলকে সোমবার সকালে সিজিও কমপ্লেক্স থেকে স্বাস্থ্যপরীক্ষার জন্য বিধাননগর হাসপাতালে নিয়ে যান ইডি আধিকারিকরা। সেখান থেকে আবার সিজিও ফিরে আসার পর উপস্থিত সাংবাদিকরা তাঁকে নীলাদ্রির পরিচয় কী, তা নিয়ে প্রশ্ন করেন। উত্তরে হুগলির তৃণমূল যুবনেতার উত্তর, ‘‘নীলাদ্রি হল তাপস মণ্ডলের দালাল।’’
এই দুর্নীতিতে আর কোনও নাম জড়িয়ে আছে কি না, জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘‘তাপসকে জিজ্ঞাসা করলে সব উত্তর পাওয়া যাবে।’’
ইডির হাতে গ্রেফতার হওয়ার পর পর কুন্তল দাবি করেন, গত পাঁচ মাস ধরে তাপস এবং তাপসের বন্ধু নীলাদ্রি ইডি আধিকারিকদের নাম করে তাঁর কাছ থেকে অর্থ আদায় করছিলেন এবং সম্প্রতি সিবিআই আধিকারিকদের নাম করেও তাঁর সঙ্গে প্রতারণার চেষ্টা করছিলেন তাপস-নীলাদ্রি।
এই মামলায় নীলাদ্রির পাশাপাশি নাম জড়িয়েছে গোপাল দলপতি এবং তাপস মিশ্রেরও। তাপস মণ্ডলের দাবি, এই তিন জনই তাঁর পরিচিত এবং তাঁর অফিসেও এঁদের যাতায়াত ছিল। তিনি এ-ও জানিয়েছেন, পদপ্রার্থীদের থেকে সংগৃহীত টাকা টাকা ফেরতের জন্যই তিনি নীলাদ্রিকে পাঠিয়েছিলেন কুন্তলের কাছে।
ইডির হাতে কুন্তলের গ্রেফতারির পর নিয়োগ দুর্নীতি মামলায় নতুন মোড় এসেছে। তাপস দাবি করেছেন, শিক্ষক পদপ্রার্থীর কাছ থেকে কোটি কোটি টাকা ঘুষ নিয়েছেন কুন্তল। এর পরই কুন্তলের বিরুদ্ধে তদন্ত শুরু করে কেন্দ্রীয় গোয়েন্দা সংস্থা। শনিবার তাঁকে গ্রেফতারও করেন ইডি আধিকারিকরা। গ্রেফতারির পর কুন্তলের পাল্টা দাবি, তিনি কারও কাছ থেকে কোনও টাকা নেননি। উল্টে তাপস এবং তাঁর সহযোগী নীলাদ্রি তাঁর কাছ থেকে অনেক টাকা হুমকি দিয়ে নিয়েছেন। টাকা দেওয়া বন্ধ করাতেই তাঁকে ইচ্ছা করে ফাঁসানো হচ্ছে বলেও তৃণমূল যুবনেতা দাবি করেছেন। কুন্তল জানিয়েছেন, তাপসকে টাকা জমা দেওয়ার প্রমাণও তিনি ইতিমধ্যেই সিবিআইকে দিয়েছেন। ইডি সূত্রে খবর, কুন্তলকে জিজ্ঞাসাবাদের সময় তিনি জানিয়েছেন যে, পদপ্রার্থীদের থেকে তিনি কোনও টাকা নেননি। তিনি ‘শুধুমাত্র’ ১০ শতাংশ কমিশন নিয়েছিলেন।