উত্তরবঙ্গে প্রশাসনিক বৈঠকে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। ছবি পিটিআই।
প্রথম দিন যদি থাকে ক্ষোভ দূর করার নির্দেশ, উত্তরবঙ্গে প্রশাসনিক বৈঠকের দ্বিতীয় দিনে মুখ্যমন্ত্রীর মুখে ছিল আইনশৃঙ্খলা বজায় রাখার বার্তা। সেখানে তিনি জানান, পশ্চিমবঙ্গের আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি গুজরাত (নরেন্দ্র মোদীর রাজ্য), উত্তরপ্রদেশের (যোগী আদিত্যনাথের রাজ্য) থেকে ভাল। একই সঙ্গে তিনি বিজেপির নাম না করে অভিযোগ করেন, এই পরিবেশ নষ্ট করতে চেষ্টা চালাচ্ছে তারা-ই। মমতা বলেন, ‘‘বাংলার আইনশৃঙ্খলা নিয়ে যাঁরা কথা বলেন, তাঁরা উত্তরপ্রদেশের দিকে তাকান। গুজরাতের দিকে তাকান। বাংলাই একমাত্র ভারতের মধ্যে সব থেকে শান্তিপূর্ণ জায়গা।’’
বিজেপি অবশ্য এ দিনও আইনশৃঙ্খলার প্রশ্নে মুখ্যমন্ত্রীকেই কটাক্ষ করেছে। বিজেপির রাজ্য সভাপতি দিলীপ ঘোষ বলেন, ‘‘উত্তরপ্রদেশে একটা ঘটনা ঘটেছে বলে মুখ্যমন্ত্রী সরব হচ্ছেন। অথচ, পশ্চিমবঙ্গের জেলায় জেলায় এ রকম ঘটনা নিয়মিত ঘটছে। সে সব ক্ষেত্রে তিনি নিষ্ক্রিয়! বোমার কারখানা, জঙ্গি-যোগ, মাওবাদী কার্যকলাপ— সব এ রাজ্যেই পাওয়া যাচ্ছে। তার পরেও বলবেন বাংলায় আইনশৃঙ্খলা ভাল?’’
বিজেপির বিরুদ্ধে ‘মিথ্যাচারের’ অভিযোগ তুলে বুধবার মুখ্যমন্ত্রী বলেন, ‘‘আমরা ছেলেমেয়েদের ‘সুবজ সাথী’র সাইকেল দিচ্ছি। আর বাইরের রাজ্য থেকে এসে ধর্মীয় প্রচার করে বলা হচ্ছে, সাইকেল নাকি দিল্লি দিয়েছে। সমস্ত ধর্ম আমরাও মানি। কিন্তু এমন মিথ্যা! রেশনের ক্ষেত্রেও তাই।’’ এর পরে আইনশৃঙ্খলা প্রসঙ্গ তুলে তিনি বলেন, ‘‘বাংলার আইনশৃঙ্খলার কথা বলছেন? যারা সমালোচনা করে, তারা সবচেয়ে বেশি গুন্ডামি করে। আমি বলছি, গুজরাত, উত্তরপ্রদেশের দিকে আগে তাকান।’’ এই সব কথা প্রচারে বিজেপি সামাজিক মাধ্যমের সাহায্যে নিচ্ছে, তা-ও উল্লেখ করেন তিনি। প্রশাসন সূত্রে খবর, মঙ্গলবারের বৈঠকের পর সরকারি প্রকল্প নিয়ে পাল্টা প্রচারের কর্মসূচি তৈরি করতে সরকারি অফিসারদের নির্দেশ দিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী। নতুন মুখ্যসচিব আলাপন বন্দ্যোপাধ্যায়কে এতে বাড়তি দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে।
আরও পড়ুন: রাজ্যে দৈনিক সংক্রমণ সর্বোচ্চ, বাড়ল সংক্রমণের হারও
আরও পড়ুন: এনসিআরবি-র রিপোর্টে এ বার ‘বাদ’ পশ্চিমবঙ্গ
সীমান্ত নিয়েও উদ্বেগ প্রকাশ করেন মুখ্যমন্ত্রী। তিনি বলেন, ‘‘কোচবিহারের সীমান্তে গোলমাল করছে। বিএসএফ-কে দিয়ে গুলি চালাচ্ছে। সাধারণ মানুষ মরছে। ওটা বিএসএফের কাজ নয়। আবার একাংশ পুলিশ আইসি-দের কিছু ওদের সঙ্গে বসছে। পাচার চলছে।’’ বিএসএফ-এর নর্থ বেঙ্গল ফ্রন্টিয়ারের আইজি সুনীলকুমার ত্যাগী বলেন, ‘‘মুখ্যমন্ত্রীর বক্তব্য আমি শুনিনি। তাই এ বিষয়ে কিছু বলতে পারব না।’’