এক পুলিশকর্তা বলেন, ‘‘রাজ্য সরকারের কাছে পাঠানো প্রস্তাব পাশ হয়ে গেলেই যেখানকার খামার দ্রুত প্রয়োজনীয় ঘোড়া সরবরাহ করতে পারবে, কেনাকাটা সেরে ফেলার জন্য আমরা তাদেরই প্রাধান্য দেব।’’
ফাইল চিত্র।
সাকুল্যে আছে ৩৯টি। তার মধ্যে ন’টি ঘোড়াকে পুলিশের প্রশিক্ষণের জন্য সব সময় পাওয়া যায় না অসুস্থতা বা অন্যান্য কারণে। রাজ্য পুলিশ সূত্রের খবর, ব্যারাকপুর পুলিশ ট্রেনিং কলেজে প্রশিক্ষণের জন্য এখন মাত্র ৩০টি ঘোড়াই সম্বল। এই অবস্থায় প্রশিক্ষণ মসৃণ ভাবে চালাতে হলে ওই কলেজে ঘোড়ার সংখ্যা না-বাড়ালেই নয় বলে মনে করছে রাজ্য পুলিশ-প্রশাসন। অন্তত ২১টি ঘোড়া কেনার প্রস্তাব জমা দিয়েছে তারা। কলকাতা পুলিশ নিজেদের ঘোড়সওয়ার বাহিনীর জন্য কয়েক বছর আগে ১১টি ঘোড়া কিনেছিল। এ বার সেই পথে এগোচ্ছে রাজ্য পুলিশও।
হঠাৎ ঘোড়া কেনার উদ্যোগ কেন? পুলিশ শিবির জানাচ্ছে, আনুষ্ঠানিক ভাবে কাজে যোগদানের আগে বিভিন্ন স্তরের পুলিশ অফিসারদের অশ্বারোহণের প্রশিক্ষণ বাধ্যতামূলক। সাব-ইনস্পেক্টর থেকে ডিএসপি পর্যন্ত সকলকেই ওই প্রশিক্ষণ নিতে হয়। সেই সব অফিসারের প্রশিক্ষণের কাজ অব্যাহত রাখতেই পুলিশ ট্রেনিং কলেজে ঘোড়ার সংখ্যা বাড়ানোর সিদ্ধান্ত হয়েছে। বর্তমানে ব্যারাকপুরের স্বামী বিবেকানন্দ পুলিশ ট্রেনিং কলেজে ৪৫০ জন সাব-ইনস্পেক্টরের প্রশিক্ষণ চলছে। এত জনের প্রশিক্ষণের জন্য মাত্র ৩০টি ঘোড়া যথেষ্ট নয় বলে পুলিশি সূত্রের খবর। এর সঙ্গে চলছে ডিএসপি-দের প্রশিক্ষণও। ঘোড়ার অপ্রতুলতায় সকলের প্রশিক্ষণ ব্যাহত হচ্ছে। রাজ্য পুলিশের এক কর্তা জানান, একই সঙ্গে মনে রাখতে হবে, আইপিএস পাশ করে প্রশিক্ষণ নিয়ে আসা নবনিযুক্ত অফিসারদের এক মাসেরও বেশি সময় কাটাতে হয় সেখানে। ফলে তাঁদেরও ঘোড়ার প্রয়োজন পড়ে। ঘোড়ায় চড়ার প্রশিক্ষণ যাতে যথাযথ ভাবে দেওয়া যায়, সেই জন্য এখনই কিছু ঘোড়া কেনার এই প্রস্তাব।
পুলিশের খবর, বাহিনীর প্রশিক্ষণের জন্য বহু দিন পরে ঘোড়া কেনার প্রস্তাব পেশ করা হল। নবান্নে ওই প্রস্তাব পাঠানো হয়েছে কয়েক মাস আগে। নবান্নের শীর্ষ কর্তারাও বিষয়টি নিয়ে উৎসাহিত। বাহিনীতে প্রশিক্ষণের জন্য প্রয়োজনীয় ঘোড়ার অভাব আছে। প্রস্তাব অনুযায়ী ঘোড়া কেনার পরে সেগুলি রাজ্য পুলিশের আস্তাবলে যোগ দেবে। তাতে বাহিনীর সদস্যদেরই উপকার হবে। মূলত বছর চারেকের ঘোড়া আনা হয় পুলিশের জন্য। পুরোদস্তুর কাজে নামানোর আগে উপযুক্ত প্রশিক্ষণ দেওয়া হবে সেই ঘোড়াদেরও। পুলিশ ট্রেনিং কলেজের আস্তাবলে তাদের রাখার জন্য তৈরি করতে হবে নতুন জায়গা। এক সময় কলকাতা এবং রাজ্য পুলিশের জন্য বিদেশ থেকে ঘোড়া কেন হত। পরে পঞ্জাব, হরিয়ানা ও পুণের খামার থেকে ঘোড়া কেনার ব্যবস্থা চালু হয়। কলকাতা পুলিশ কয়েক বছর আগে ১১টি ঘোড়া কিনেছিল পঞ্জাবের খামার থেকে।
এক পুলিশকর্তা বলেন, ‘‘রাজ্য সরকারের কাছে পাঠানো প্রস্তাব পাশ হয়ে গেলেই যেখানকার খামার দ্রুত প্রয়োজনীয় ঘোড়া সরবরাহ করতে পারবে, কেনাকাটা সেরে ফেলার জন্য আমরা তাদেরই প্রাধান্য দেব।’’