বুধবার বর্ধমান থেকে ফেরার পথে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় গাড়িতে চোট পান। —নিজস্ব চিত্র।
সড়কপথে কলকাতা ফেরার পথে গাড়ি আচমকা ব্রেক কষায় মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় কপালে চোট পেয়েছিলেন বুধবার। ওই দিন সন্ধ্যায় মুখ্যমন্ত্রী জানিয়েছিলেন, বর্ধমানে প্রশাসনিক সভা সেরে ফেরার সময় তাঁর কনভয়ে ২০০ কিলোমিটার গতিবেগে একটি গাড়ি ঢুকে পড়েছিল। ঘটনাচক্রে তার পরের দিনই রাজ্যের সমস্ত জেলা ও পুলিশ জেলার সুপার এবং কলকাতা বাদে সব কমিশনারেটের কমিশনারের সঙ্গে ভিডিয়ো বৈঠক করেন রাজ্য পুলিশের ভারপ্রাপ্ত ডিজি রাজীব কুমার। ওই বৈঠকে প্রশাসনিক বিষয় নিয়েই আলোচনা হয়েছে বলে জানা গিয়েছে।
সূত্রের খবর, পুলিশের শীর্ষকর্তাদের সঙ্গে বৈঠকে ডিজি সকলকে ভিআইপি যাতায়াতের সময়ে নিরাপত্তা সংক্রান্ত বিষয়ে যথাযথ এসওপি (আদর্শ পরিচালন পদ্ধতি) মেনে চলার নির্দেশ দিয়েছেন। অর্থাৎ, কোনও ভিআইপির কনভয়ে পুলিশের পরিচালনায় ঢিলেমি বরদাস্ত করা হবে না। যখন যে জেলায় ভিআইপিরা থাকবেন, সেই জেলার এসপি এবং পুলিশ কমিশনারদের এ বিষয়ে সতর্ক থাকতে হবে। ভার্চুয়াল বৈঠকে সে বার্তাই দিয়েছেন ডিজি।
প্রসঙ্গত, বুধবার বর্ধমানের গোদার মাঠে প্রশাসনিক সভা ছিল মমতার। সভা শেষে কলকাতা ফেরার জন্য গাড়িতে ওঠেন তিনি। হেলিকপ্টারে কলকাতায় ফেরার কথা ছিল তাঁর। কিন্তু আবহাওয়া খারাপ থাকার কারণে সেই পরিকল্পনা বাতিল হয়। সড়কপথে কলকাতায় আসার সময়ে গাড়ি আচমকা ব্রেক কষায় মমতা চোট পান। সভাস্থল থেকে তাঁর গাড়ি জিটি রোডে ওঠার মুখে আচমকাই ব্রেক কষেন চালক। পরে মমতা জানান, কনভয়ের মধ্যে অন্য একটি গাড়ি ঢুকে পড়েছিল। তার সঙ্গে সংঘর্ষ এড়াতেই চালক ব্রেক কষেন এবং সেই ঝাঁকুনিতে তিনি মাথায় আঘাত পেয়েছেন। কলকাতায় এসে রাজভবনে রাজ্যপালের সঙ্গে বৈঠক করেন মমতা। তখনও তাঁর কপালে ‘স্টিকিং প্লাস্টার’ লাগানো ছিল। তিনি জানান, যে ভাবে অন্য গাড়ি তাঁর গাড়ির কনভয়ের সামনে চলে এসেছিল, তাতে তিনি মরেও যেতে পারতেন। ওই গাড়িটি ২০০ কিমি বেগে চলছিল বলেও জানান মমতা। সঠিক সময়ে ব্রেক কষার জন্য নিজের গাড়ির চালকের প্রশংসাও করেন। মুখ্যমন্ত্রী জানান, তাঁর মাথা টনটন করছে।
কোন গাড়ি মুখ্যমন্ত্রীর কনভয়ে আচমকা ঢুকে পড়ল, তা নিয়ে বিশেষ মন্তব্য করতে চাননি মমতা। পুলিশের উপরেই এর তদন্তের ভার দিয়েছেন। পূর্ব বর্ধমানের পুলিশ সুপার আমনদীপ বুধবারই বলেন, ‘‘কোন গাড়ি মুখ্যমন্ত্রীর কনভয়ে ঢুকে পড়েছে, আমরা তদন্ত করে দেখছি।’’ ঘটনাচক্রে তার পরের দিন ডিজি বৈঠক করলেন পুলিশের শীর্ষকর্তাদের সঙ্গে।