প্রতীকী চিত্র
কাশ্মীরে শ্বশুরবাড়ির অত্যাচার পিছনে ফেলে পড়াশোনা চালিয়ে যাওয়ার জন্য স্কুলের হস্টেলে ফিরেই ক্ষান্ত হয়নি খালেদা লস্কর (ছদ্মনাম)। বৃহস্পতিবার সপ্তম শ্রেণির ইউনিট টেস্টও দিয়েছে সে।
মথুরাপুর কৃষ্ণচন্দ্রপুর হাইস্কুলের ছাত্রী খালেদাকে দু’হাজার টাকা মাসিক সাহায্য দেওয়ার কথাও জানিয়েছে জেলা প্রশাসন।
আগে থেকে কিছু না-জানিয়ে ১৫ বছর বয়সি খালেদার বাবা-মা তার বিয়ে দিয়েছিলেন কাশ্মীরের এক প্রৌ়ঢ়ের সঙ্গে। কিন্তু শ্বশুরবাড়িতে শারীরিক, মানসিক ও যৌন অত্যাচার সহ্য করতে না-পেরে সে পালিয়ে এসেছে। দক্ষিণ ২৪ পরগনার মথুরাপুরের পাশের এক গ্রামে খালেদার বাপের বাড়ি। গত সোমবার রাতে খালেদা সেখানে পৌঁছয়। কিন্তু বাপের বাড়ির লোক তাকে কাশ্মীর ফিরে যাওয়ার জন্য চাপ দিতে থাকেন। খালেদা স্কুলে গিয়ে প্রধান শিক্ষক চন্দন মাইতিকে সব জানায়। চন্দনবাবু স্থানীয় থানা, বিডিও-র সঙ্গে সঙ্গে শিশু সুরক্ষা কমিশনের চেয়ারপার্সন অনন্যা চক্রবর্তীকেও বিষয়টি জানান। অনন্যাদেবী তা জানান জেলাশাসক ওয়াই রত্নাকর রাওকে। পরে অনন্যাদেবী জানিয়েছিলেন, ওই ছাত্রী যাতে আপাতত স্কুলের হস্টেলে থেকে পড়াশোনা করতে পারে, তার ব্যবস্থা করা হবে বলে জেলাশাসক আশ্বাস দিয়েছেন। এ দিন চন্দনবাবু জানান, জেলা প্রশাসন থেকে তাঁকে জানানো হয়েছে, খালেদাকে মাসে দু’হাজার টাকা দেওয়া হবে। স্কুলে পড়াশোনা এবং হস্টেলে থাকার জন্য কর্তৃপক্ষ টাকা নেবেন না।
সপ্তম শ্রেণিতে উঠে কোনও দিনই ক্লাস করেনি খালেদা। ৩ জানুয়ারি কাশ্মীরে নিয়ে গিয়ে দিদির সঙ্গে তারও বিয়ে দিয়ে দেওয়া হয়। চন্দনবাবু জানান, খালেদাদের পাশের গ্রামের এক মহিলা এই যোগাযোগ করিয়ে দিয়েছিলেন। বাল্যবিবাহ, শ্বশুরবাড়িতে লাগাতার অত্যাচারে মানসিক ভাবে বিধ্বস্ত খালেদা স্কুলে ফিরেই পরীক্ষা দিতে হাজির হয়। দিয়েছে ইংরেজির ইউনিট টেস্ট। ‘‘মেয়েটি লেখাপড়ায় ভাল। ইংরেজির এই টেস্টে আনসিন (বইয়ের বাইরের প্রশ্ন) থাকে কিছু প্রশ্ন। ও তাই পরীক্ষা দিতে চাইল,’’ বলেন চন্দনবাবু।