ছবি: পিটিআই।
দিল্লি, মহারাষ্ট্র, গুজরাত থেকে কোনও পরিযায়ী শ্রমিক রাজ্যে এলে তাঁদের বাধ্যতামূলক ভাবে লালারস পরীক্ষা করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে নবান্ন। মঙ্গলবার জেলাশাসক ও পুলিশ সুপারদের সঙ্গে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের ভিডিয়ো-বৈঠকে বেশ কয়েক জন ডিএম-এসপি জানিয়ে দেন, তাঁরা কঠোর ভাবে সরকারি নির্দেশ মেনে চলেছেন। মুখ্যমন্ত্রীও বলেন, ‘‘কোভিড ছিল। তার সঙ্গে যুক্ত হয়েছে পরিযায়ী শ্রমিকদের আসা এবং আমপান ঝড়। ফলে সতর্ক থাকতে হবে।’’ শ্রমিকদের বিষয়ে মুখ্যমন্ত্রী নদিয়া, মুর্শিদাবাদ, মালদহ, দুই দিনাজপুর ও পুরুলিয়ার জেলাশাসকদের সতর্ক করে দেন।
পুরুলিয়া, কোচবিহার-সহ বেশ কয়েকটি জেলার ডিএম-রা বৈঠকে জানান, দিল্লি, মহারাষ্ট্র, গুজরাত থেকে ফেরা শ্রমিকদের লালারস পরীক্ষা করা হচ্ছে। অন্যান্য জায়গা থেকে আসা শ্রমিকদেরও স্বাস্থ্যপরীক্ষা চলছে। মুখ্যমন্ত্রী বাংলাদেশের সীমান্ত ঘেঁষা জেলাগুলিকে এই বিষয়ে বিশেষ ভাবে নজর দিতে বলেন। তিনি জানান, ইতিমধ্যেই তিন লক্ষের বেশি শ্রমিক রাজ্যে এসে গিয়েছেন। আরও কয়েক লক্ষ শ্রমিকের রাজ্যে আসার ব্যবস্থা করা হচ্ছে। তবে ঘূর্ণিঝড়ের জন্য আজ, বুধবার সারা দিন কোনও ট্রেন রাজ্যে আসবে না বলে জানান নবান্নের কর্তারা। এই নিয়ে রেলের সঙ্গে সমন্বয় রক্ষা করার জন্য মুখ্যসচিবকে নির্দেশ দেন মুখ্যমন্ত্রী।
মালদহের জেলাশাসক মুখ্যমন্ত্রীকে জানান, সেখানে ১১ জনের করোনা ধরা পড়েছে। তাঁরা সকলেই বাইরে থেকে এসেছিলেন। কারও কোনও উপসর্গ ছিল না। বাইরে থেকে আসা লোকজনের জন্য মালদহে ২১টি কন্টেনমেন্ট জ়োন করতে হয়েছে। উত্তর দিনাজপুরের জেলাশাসকও মুখ্যমন্ত্রীকে জানান, সেই জেলার কোভিড-আক্রান্তদের সকলেই বাইরে থেকে এসেছেন। এ-পর্যন্ত ৮০০০ পরিযায়ী শ্রমিক ফিরেছেন। সব মিলিয়ে বাইরে রয়েছেন ৩৮ হাজার শ্রমিক। কোচবিহারে ৪৫০০ নমুনা পরীক্ষা করানোর পরেও একটিও পজ়িটিভ কেস মেলেনি বলে বৈঠকে জানান সেখানকার জেলাশাসক। করোনা রুখতে পরিযায়ী শ্রমিকদের স্বাস্থ্যপরীক্ষা যে অত্যন্ত জরুরি পদক্ষেপ, জেলাশাসক-পুলিশ সুপারদের তা মনে করিয়ে দেন মমতা।
আরও পড়ুন: কিছুটা ক্ষমতা হ্রাস, আমপান তবুও ‘মারাত্মক’, অভিমুখ সুন্দরবনের দিকে
আরও পড়ুন: দোকানপাট বন্ধ রাখার পরামর্শ, রাজ্যে সরানো হল ৪ লক্ষাধিক মানুষকে
এ দিনের বৈঠকে বোরো ধান কাটার অগ্রগতি সম্পর্কেও জানতে চান মুখ্যমন্ত্রী। এখনও প্রায় ৯০ হাজার একর জমিতে ধান কাটা হয়নি বলে জানান কৃষি উপদেষ্টা। এই বিষয়ে আরও সতর্ক হওয়া জরুরি ছিল বলে জেলাশাসকদের জানান মুখ্যমন্ত্রী।