ছবি: পিটিআই।
ভয়াবহ ভাইরাসের দুর্যোগ কাটিয়ে উঠবে রাজ্য। কিন্তু তার জন্য লকডাউন চলাকালীন বাড়িতে থাকার জন্য আবার আবেদন জানালেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।
মুখ্যমন্ত্রী শুক্রবার নবান্নে বলেন, ‘‘করোনার কোনও ওষুধ নেই। তাই বাড়িতে থেকেই এই ছোঁয়াচে রোগের মোকাবিলা করতে হবে।’’ রাজ্যবাসীর উদ্দেশে তিনি বলেন, ‘‘নিজের এবং পরিবারের যত্ন নিন। বাড়িতেও নিজেদের মধ্যে দূরত্ব বজায় রাখুন। কারণ, আগামী দু’সপ্তাহ খুবই জরুরি সময়। আক্রান্তের সংখ্যা হয়তো কিছুটা বাড়বে, সেটাই স্বাভাবিক। সেই জন্য সকলে বাড়িতে থাকুন।’’
লকডাউনের নিয়মবিধি অমান্য করে অনেকেই যে রাস্তাঘাটে নামছেন, সেই প্রসঙ্গে মুখ্যমন্ত্রী দাবি করেন, বাংলায় যে-ভাবে লকডাউন হয়েছে, তা অন্য কোথাও হয়নি। ‘‘আমি রাজ্যের মানুষকে ধন্যবাদ জানাচ্ছি। তাঁরা খুবই সহযোগিতা করেছেন। বৃহস্পতিবার অন্নপূর্ণা পুজো ছিল। শুক্রবার ছিল সমবেত নমাজের দিন। কিন্তু রাজ্যের কোথাও মানুষ ভিড় করে জমায়েত করেননি। এটা কম কথা নয়,’’ বলেন মমতা।
আরও পড়ুন: ‘পিপিই, হাতশুদ্ধি তৈরি’, দাবি মমতার
মুখ্যমন্ত্রীর অনুরোধ, কিছু সংখ্যক মানুষকে জরুরি কাজের জন্য বেরোতেই হয়। তাঁরাও যেন নিজেদের মধ্যে দূরত্ব বজায় রাখেন। সব দিক থেকে সতর্কতা নিতে হবে তাঁদের। হাত ধুয়ে নিতে হবে বার বার। রেশন দোকানে ভিড় করার দরকার নেই। রেশন পাওয়া যাবে। রেশন দোকানে গেলে নিরাপদ দূরত্ব বজায় রেখে মালপত্র সংগ্রহ করতে হবে।
রেশন নিয়ে একটি রাজনৈতিক দল রাজনীতি করছে বলে অভিযোগ করে মুখ্যমন্ত্রী জানান, ওরা বলছে, কেন্দ্রীয় সরকার চাল দিচ্ছে। কিন্তু গণবন্টন ব্যবস্থা রাজ্যের। চালও দিচ্ছে রাজ্যই। লকডাউনের মধ্যেও নিত্যপ্রয়োজনীয় জিনিসের পর্যাপ্ত জোগান রয়েছে বলে জানান মুখ্যমন্ত্রী। তিনি জানান, চাল, ডাল, আলু, দুধ, আনাজ, মাছ, ডিম-সহ সবই পাওয়া যাচ্ছে। তবে ভিন্ রাজ্য থেকে পণ্য না-আসায় কোথাও কোথাও বিভিন্ন জিনিসের দাম কিছুটা বেড়েছে। প্রয়োজনে বাজারে যেতে হলেও দূরত্ব মেনে কেনাকাটা করার জন্য অনুরোধ জানান মুখ্যমন্ত্রী।
২১ জানুয়ারি দেশে প্রথম করোনা-আক্রান্তের হদিস মেলে। তার পরে দু’মাস কোনও প্রস্তুতিই ছিল না বলে মন্তব্য করে মমতা জানান, হঠাৎই লকডাউন শুরু হল। তার মধ্যেই সব ব্যবস্থা করতে হচ্ছে। লক্ষাধিক পরিযায়ী শ্রমিকের থাকা-খাওয়ার বন্দোবস্তও করতে হচ্ছে। মুখ্যমন্ত্রী বলেন, ‘‘লকডাউনের মধ্যেও সরকারি কর্মীদের বেতন দেওয়া হয়েছে। এখন তো শুধু বার্নিং, লো আর্নিং। তার পরেও সরকার লড়ে যাচ্ছে।’’
রাজ্যবাসীর উদ্দেশে মুখ্যমন্ত্রীর আবেদন, ‘‘আরও দু’সপ্তাহ বাড়িতেই থাকতে হবে। কারণ, এই ১৫ দিন খুবই জরুরি। আক্রান্ত হওয়ার আশঙ্কা সব চেয়ে বেশি। তাই দূরত্ব বজায় রেখে ছোঁয়াচে ভাইরাস থেকে নিজেকে ও পরিবারকে রক্ষা করুন।’’