প্রতীকী ছবি।
অভাব নিত্যসঙ্গী। লকডাউনে তা আরও বেড়েছিল। এরই মাঝে আড়াই মাসের কন্যাসন্তানকে বিক্রির অভিযোগ উঠল বাবা-মায়ের বিরুদ্ধে।
পশ্চিম মেদিনীপুরের ঘাটালের এই ঘটনায় শোরগোল শুরু হতেই তৎপর হয় পুলিশ। মঙ্গলবার রাতেই শিশুকন্যাকে উদ্ধার করে ঘাটাল সুপার স্পেশ্যালিটি হাসপাতালে ভর্তি করানো হয়েছে। বাবা, মা-সহ কয়েকজনের বিরুদ্ধে স্বতঃপ্রণোদিত ভাবে মামলা করেছে পুলিশ। হাসপাতাল সূত্রের খবর, সুস্থই রয়েছে ওই শিশুকন্যা। খড়্গপুরের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার কাজী সামসুদ্দিন আহমেদ বলেন, “এক শিশুকন্যাকে বিক্রির অভিযোগ উঠেছে বাবা-মায়ের বিরুদ্ধে। মঙ্গলবার রাতেই শিশুটিকে উদ্ধার করা হয়েছে। আইনানুগ পদক্ষেপ করা হয়েছে।” চাইল্ড লাইনের জেলা কো-অর্ডিনেটর বিশ্বনাথ সামন্তের কথায়, “অভাবের তাড়নায় শিশুকন্যাকে বিক্রি খুবই লজ্জাজনক ঘটনা। মানুষকে আমরা সচেতন করতে পারিনি।”
পুলিশ সূত্রের খবর, ঘাটাল শহরের কোন্নগর এলাকার রুইদাস পল্লির বাসিন্দা বাপন ধাড়া ও তাঁর স্ত্রী তাপসীর বছর পাঁচেকের ছেলে এবং বছর আড়াইয়ের মেয়ে রয়েছে। বাপনের কোনও রোজগার নেই। তাপসী পরিচারিকার কাজ করেন। লকডাউনে তাপসীর রোজগারও বন্ধ হয়ে যায়। এরই মধ্যে আড়াই মাস আগে ঘাটাল হাসপাতালে কন্যাসন্তানের জন্ম দেন তাপসী। সূত্রের খবর, সন্তান জন্মানোর পরই স্বামী-স্ত্রীয়ের গোলমাল বাড়তে থাকে। তখনই সন্তান বিক্রির সিদ্ধান্ত নেন দম্পতি।
আরও পড়ুন: সুন্দরবনে ৫ কোটি ম্যানগ্রোভ, রাজ্যের সব থানা এলাকায় লাগাতে হবে গাছ: মুখ্যমন্ত্রী
আরও পড়ুন: হোম কোয়রান্টিনে জ্বর, হাসপাতালে ভর্তি করা হল দমকল মন্ত্রীকে
তাপসীর বাপের বাড়ির সূত্র ধরে হাওড়া জেলার শ্যামপুর থানার কমলপুর লাগোয়া দক্ষিণ দুর্গাপুর গ্রামের এক নিঃসন্তান দম্পতির সঙ্গে যোগাযোগ হয়। স্থানীয় সূত্রের খবর, মঙ্গলবার সকালে তিন হাজার টাকার বিনিময়ে শিশুকন্যা হস্তান্তর হয়। বিষয়টি জানাজানি হতেই পুলিশ শিশুকন্যাকে উদ্ধারে নামে। ঘাটাল থানার এক অফিসার চাইল্ড লাইনের আধিকারিককে সঙ্গে নিয়ে মঙ্গলবার রাতেই শ্যামপুরের গ্রাম থেকে উদ্ধার করেন শিশুকন্যাকে।
এত ঘটনা ঘটার পর অনুতপ্ত ওই দম্পতি। তাঁদের কথায়, “অভাবের জন্যই এমনটা করে ফেলেছিলাম। নিজেদের ভুল বুঝতে পেরেছি।” ঘাটালের মহকুমা পুলিশ অফিসার অগ্নিশ্বর চৌধুরী বলেন, ‘‘প্রাথমিক তদন্তে উঠে এসেছে, শিশুকন্যা যাতে ভাল ভাবে মানুষ হয়, তাই হাওড়ার দম্পতি তাকে নিয়ে গিয়েছিলেন। তবে আইনি প্রক্রিয়ায় হস্তান্তর হয়নি।’’