West Bengal Lockdown

অনুমতি মেলেনি রাজ্যে ঢোকার, আটকে দম্পতি

রাজ্য পুলিশের ‘ওয়্যারলেস’ দফতরের প্রাক্তন আধিকারিক স্বরূপবাবু জানান, তিনি ও তাঁর স্ত্রী গত মার্চে বড় ছেলের কর্মস্থল হংকংয়ে গিয়েছিলেন।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

আসানসোল শেষ আপডেট: ১৯ এপ্রিল ২০২০ ০২:১৩
Share:

—ফাইল চিত্র।

টানা কয়েক ঘণ্টা গাড়িতেই বসে থাকা। তার পরে পুলিশের ব্যবস্থাপনায় পশ্চিমবঙ্গ-ঝাড়খণ্ড সীমানা লাগোয়া এক হোটেলে উঠেছেন উত্তর ২৪ পরগনার মধ্যমগ্রামের এক বৃদ্ধ দম্পতি। কিন্তু ‘লকডাউন’ পরিস্থিতিতে তাঁদের রাজ্যে ঢোকার অনুমতি দেওয়া হয়নি। এর ফলে, তাঁরা সমস্যায় পড়েছেন বলে জানান বছর ৬৮-র স্বরূপ চৌধুরী ও তাঁর স্ত্রী ক্যানসার আক্রান্ত ছবিদেবী। ওই দম্পতির আশঙ্কা, এ ভাবে চলতে থাকলে হোটেলের ভাড়া দেওয়া সম্ভব হবে না।

Advertisement

আসানসোল-দুর্গাপুরের পুলিশ কমিশনার সুকেশকুমার জৈন অবশ্য বলেন, ‘‘আমরা জানিয়েছি, লকডাউন চলাকালীন ভিন্-রাজ্য থেকে কাউকে এ রাজ্যে ঢুকতে দেওয়া হবে না। আপৎকালীন অবস্থায় খুব ভাল ভাবে পরীক্ষার পরে, ছাড় দেওয়া হতে পারে। যাঁরা সীমানায় আটকে যাচ্ছেন, তাঁরা চাইলেই পুলিশের সহযোগিতা পাবেন।’’ নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক জেলার পুলিশকর্তারা জানান, নবান্নের অনুমতি ছাড়া, ভিন্-রাজ্য থেকে আসা কাউকেই পশ্চিমবঙ্গে ঢুকতে দেওয়া হবে না।

রাজ্য পুলিশের ‘ওয়্যারলেস’ দফতরের প্রাক্তন আধিকারিক স্বরূপবাবু জানান, তিনি ও তাঁর স্ত্রী গত মার্চে বড় ছেলের কর্মস্থল হংকংয়ে গিয়েছিলেন। ২০ মার্চ তাঁরা দিল্লির ইন্দিরা গাঁধী আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে নামেন। সেখানে দিল্লি পুলিশ তাঁদের ১৮ দিন ‘কোয়রান্টিন’-এ রেখেছিল। গত ১২ এপ্রিল সেখান থেকে ছেড়ে তাঁদের বাড়ি ফেরার অনুমতি দেয় দিল্লি পুলিশ। তাঁরা গাড়ি ভাড়া করে মধ্যমগ্রামের উদ্দেশে রওনা হন। পথে কোথাও আটকানো হয়নি বলে তাঁরা জানান। কিন্তু গত ১৫ এপ্রিল তাঁরা ডুবুরডিহিতে পৌঁছলে পুলিশ গাড়ি আটকায়। স্বরূপবাবু বলেন, ‘‘পুলিশ জানিয়েছে, রাজ্যে ঢুকতে দেওয়া যাবে না। রাজ্য স্তরে অনুমতি চাওয়া হয়েছে। তা পেলে ছাড়া হবে। আমার স্ত্রী ক্যানসারে আক্রান্ত। হৃদযন্ত্রে তিনবার অস্ত্রোপচার হয়েছে ওঁর।’’

Advertisement

ছবিদেবী জানান, ১৬ এপ্রিল বিকেল পর্যন্ত সীমানায় গাড়িতেই বসে থাকতে বাধ্য হন তাঁরা। তার পরে একটি হোটেলে ওই দম্পতির থাকার ব্যবস্থা করে দেয় পুলিশ। স্বরূপবাবু বলেন, ‘‘খাওয়া-থাকা বাবদ হোটেলের প্রতি দিনের খরচ প্রায় আড়াই হাজার টাকা। এ দিকে, পকেটের টাকা প্রায় ফুরিয়ে এসেছে। জানি না এ ভাবে কত দিন চালাতে পারব আমরা।’’ মধ্যমগ্রামে থাকা ওই দম্পতির ছোট ছেলে ঋতম চৌধুরী বলেন, ‘‘গত তিন ধরে নানা সময়ে প্রধানমন্ত্রী, মুখ্যমন্ত্রী-সহ জেলা প্রশাসনের শীর্ষ কর্তাদের মেল করে বাবা-মায়ের অবস্থার কথা জানিয়েছি । এখনও পর্যন্ত কোনও উত্তর পাইনি।’’

স্বরূপবাবু অবশ্য জানিয়েছেন, হোটেলে তাঁদের সঙ্গে নিয়মিত যোগাযোগ রাখছেন পুলিশকর্তারা। পুলিশ জানিয়েছে, ওই দম্পতির স্বাস্থ্যপরীক্ষা করা হয়েছে। তাঁরা সম্পূর্ণ সুস্থ।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement