প্রতীকী ছবি।
করোনার দাপটে দীর্ঘদিন ধরে বন্ধ রয়েছে স্কুল। এই অবস্থায় সরকারি স্কুল, সরকার পোষিত ও সরকারি সাহায্যপ্রাপ্ত স্কুলের নবম থেকে দ্বাদশ শ্রেণির পড়ুয়াদের জন্য এবিপি আনন্দে ভার্চুয়াল ক্লাস নেওয়ার পরিকল্পনাকে স্বাগত জানিয়েছে শিক্ষা শিবির। কিন্তু শিক্ষা দফতর ওই ক্লাসের জন্য বিভিন্ন বিষয় ও সময় জানিয়ে যে-রুটিন প্রকাশ করেছে, তা নিয়ে বিতর্ক শুরু হয়েছে। উঠছে প্রশ্ন।
শিক্ষা শিবিরের একাংশের বক্তব্য, ভার্চুয়াল ক্লাসের ওই রুটিনে নবম শ্রেণির ছাত্রছাত্রীদের জন্য কোনও ক্লাসই রাখা হয়নি। আবার যে-দ্বাদশ শ্রেণিতে এই মুহূর্তে কোনও পড়ুয়াই নেই, সেই শ্রেণির জন্য নিয়মিত ক্লাস বরাদ্দ হয়েছে! প্রশ্ন উঠছে, এই ধরনের বিশেষ ক্লাসের জন্য পরিকল্পনা তো অনেক দিন ধরে। দূরদর্শনে ডিডি বাংলা ওই ক্লাসের কর্মসূচি বাতিল হওয়ার পরে এবিপি আনন্দে এই পঠনপাঠনের বন্দোবস্ত হয়েছে। তার পরেও রুটিনে এমন অসামঞ্জস্য কেন? অনেক শিক্ষকই জানাচ্ছেন, আরও একটু পরিকল্পনা করে রুটিন তৈরি করলে পড়ুয়ারা বেশি উপকৃত হত।
শিক্ষামন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায় অবশ্য বলছেন, ‘‘নবম থেকে দ্বাদশ শ্রেণি পর্যন্ত সব ছাত্রছাত্রীই এবিপি আনন্দের এই ভার্চুয়াল ক্লাসে উপকৃত হবেন। রুটিন কী করা হয়েছে, তা আমরা পর্যালোচনা করে দেখছি।’’
আরও পড়ুন: হাসপাতালে আলো নিভিয়ে প্রদীপ
আজ, মঙ্গলবার থেকে ১৩ এপ্রিল পর্যন্ত চলবে এই ভার্চুয়াল ক্লাস। বেলা ৩টে থেকে বিকেল ৪টে পর্যন্ত এবিপি আনন্দে এক ঘণ্টা ক্লাস নেবেন বিশিষ্ট শিক্ষকেরা। ক্লাসের আগে বা ক্লাস চলাকালীন হোয়াটসঅ্যাপ এবং ইমেলের মাধ্যমে প্রশ্নও করতে পারবে পড়ুয়ারা। বাংলা শিক্ষা পোর্টালে এই ক্লাসের সময় ও বিষয়সূচি প্রকাশ করেছে শিক্ষা দফতর। তাতে দেখা যাচ্ছে, এক ঘণ্টার ক্লাসকে দু’ভাগে ভাগ করা হয়েছে। পর্ব এক এবং পর্ব দুইয়ে যথাক্রমে দশম এবং দ্বাদশের ক্লাস নেওয়া হবে। কবে কোন ক্লাসে কী বিষয় পড়ানো হবে, তা-ও জানিয়ে দেওয়া হয়েছে ওই রুটিনে।
শিক্ষক শিবিরের একাংশের মতে, দ্বাদশ শ্রেণিতে কোনও পড়ুয়া তো এখনও উত্তীর্ণই হননি। যাঁরা একাদশ শ্রেণিতে পড়ছেন, তাঁরাই দ্বাদশে উঠবেন। একাদশের পরীক্ষা করোনার জন্য মাঝপথে বন্ধ হয়ে গিয়েছে। ফলে এখন দ্বাদশে কার্যত কোনও পড়ুয়াই নেই। মাধ্যমিক শিক্ষক ও শিক্ষাকর্মী সমিতির নেতা অনিমেষ হালদার বলেন, ‘‘সরকারের এই উদ্যোগ খুবই প্রশংসনীয়। কিন্তু দ্বাদশ শ্রেণিতে তো এখনও কোনও পড়ুয়াই ওঠেনি। একাদশ থেকে দ্বাদশে ওঠার ক্ষেত্রে পাশ-ফেল চালু আছে। তাই যারা একাদশ শ্রেণিতে পড়ছে এবং পরীক্ষা দিচ্ছে, তারা কি নিশ্চিন্তে এই ক্লাস করতে পারবে?’’ কলেজিয়াম অব অ্যাসিস্ট্যান্ট হেডমাস্টার্স অ্যান্ড অ্যাসিস্ট্যান্ট হেডমিস্ট্রেসেস-এর সম্পাদক সৌদীপ্ত দাসের মতে, দ্বাদশ নয়। বরং যদি নবম শ্রেণির ক্লাস করানো যেত, পড়ুয়ারা বেশি উপকৃত হত। অথচ নবমের কোনও ক্লাসই নেই এই রুটিনে। আশা করি, পড়ুয়াদের স্বার্থে রুটিন পরিমার্জন করা হবে।’’ দমদম সুভাষনগর হাইস্কুলের শিক্ষক সইদুল ইসলাম বলেন, ‘‘দশম শ্রেণির যে-সব বিষয় পড়ানো হবে, সেগুলো খুবই প্রাসঙ্গিক। একই ভাবে নবম শ্রেণির পড়ুয়াদেরও প্রথম সামেটিভের বিষয় পড়ালে ওরা উপকৃত হত।’’
(অভূতপূর্ব পরিস্থিতি। স্বভাবতই আপনি নানান ঘটনার সাক্ষী। শেয়ার করুন আমাদের। ঘটনার বিবরণ, ছবি, ভিডিয়ো আমাদের ইমেলে পাঠিয়ে দিন, feedback@abpdigital.in ঠিকানায়। কোন এলাকা, কোন দিন, কোন সময়ের ঘটনা তা জানাতে ভুলবেন না। আপনার নাম এবং ফোন নম্বর অবশ্যই দেবেন। আপনার পাঠানো খবরটি বিবেচিত হলে তা প্রকাশ করা হবে আমাদের ওয়েবসাইটে।)